BN/Prabhupada 0035 - এই দেহের অভ্যন্তরে দুটি আত্মা রয়েছেন: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0035 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1975 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
 
Line 7: Line 7:
[[Category:Bengali Language]]
[[Category:Bengali Language]]
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0034 - সকলেই কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে জ্ঞানলাভ করেন|0034|BN/Prabhupada 0036 - আমাদের জীবনের লক্ষ্য|0036}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<div class="center">
<div class="center">
Line 15: Line 18:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|v8XG7k9PvDY|In this Body There are Two Living Entities<br />- Prabhupāda 0035}}
{{youtube_right|n0JRNOl6TKk|এই দেহের অভ্যন্তরে দুটি আত্মা রয়েছেন<br />- Prabhupāda 0035}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


<!-- BEGIN AUDIO LINK -->
<!-- BEGIN AUDIO LINK -->
<mp3player>http://vaniquotes.org/w/images/751017BG.JOH_clip3.mp3</mp3player>
<mp3player>https://s3.amazonaws.com/vanipedia/clip/751017BG.JOH_clip3.mp3</mp3player>
<!-- END AUDIO LINK -->
<!-- END AUDIO LINK -->


Line 27: Line 30:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
এখন, কৃষ্ণ গুরু রূপ পরিগ্রহ করলেন এবং তিনি নিদের্শনা প্রদান শুরু করলেন। তম উবাচ্ ঋষিকেশ্। ঋষিকেশ ..., কৃষ্ণের অপর এক নাম ঋষিকেশ। ঋষিকেশ এর অর্থ হল ঋষিক-ঈশ। ঋষিক অর্থ ইন্দ্রিয়, এবং ঈশ মানে অধিশ্বর। অত:পর কৃষ্ণ হলেন আমাদের সকলের ইন্দ্রিয়ের অধিশ্বর। ত্রয়োদশ অধ্যায়ে সেটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ক্ষেত্রজ্ঞং চাপি মাং বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত ([[Vanisource:BG 13.3|.গী ১৩/৩]])। এই দেহে দুইটি জীবন্ত সত্ত্বা রয়েছে। একটি হল আমি, স্বতন্ত্র আত্মা এবং অন্যজন হলেন কৃষ্ণ, পরমাত্মা। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি ([[Vanisource:BG 18.61|.গী ১৮/৬১]])। তাই প্রকৃতপক্ষে অধিকর্তা হলেন পরমাত্মা। আমাকে ইন্দ্রিয় তর্পনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তথাকথিত ইন্দ্রিয় যেটি আমার নয়। আমি আমার হাত সৃষ্টি করি নি। এই হাত ভগবান, কৃষ্ণ কর্তৃক সৃষ্টি হয়েছে জড় প্রকৃতির তত্ত্বাবধানে, এবং আমাকে এই হাত দেওয়া হয়েছে আমার নিজ উদ্দেশ্য যেমন আমার আহার, কিছু সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আমার হাত নয়। অন্যথায়, যখন আমাদের এই হাত পক্ষঘাতগ্রস্থ হয়, তখন আমরা দাবি করতে থাকি,  “আমার হাত”- আমি সেই হাত ব্যবহার করতে পারি না কেননা হাতের মালিক কর্তৃক তার শক্তি অপসারিত হয়েছে। ঠিক যেমন ভাড়ার ঘর, যেটিতে তুমি বসবাস করছ। যদি ঘরের স্বত্বাধিকারী, মালিক তোমাকে বহিষ্কার করে, তবে তুমি সেখানে বসবাস করতে পারবে না। তুমি সেটি ব্যবহার করতে পারবে না। একইভাবে, আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত এই দেহে অবস্থান করতে পারব যতক্ষণ পর্যন্ত এই দেহের অধিকর্তা ঋষিকেশ বসবাসের অনুমতি দিচ্ছেন। অতএব, কৃষ্ণের নাম হল ঋষিকেশ। এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের অর্থ হল আমরা কৃষ্ণ কর্তৃক প্রদত্ত ইন্দ্রিয়সমূহকে গ্রহণ করেছি। এগুলো কৃষ্ণের জন্য ব্যবহার করা উচিৎ। ইন্দ্রিয়সমূহকে কৃষ্ণের জন্য ব্যবহারের পরিবর্তে আমরা আমাদের নিজের ইন্দ্রিয় তর্পনে ব্যবহার করছি। এটি আমাদের জীবনের দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা। ঠিক যেমন তুমি কোথাও বসবাস করছ যার জন্য তোমাকে ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু যদি তুমি ভাড়া প্রদান না কর- কিংবা যদি তুমি সেই স্থানকে নিজের সম্পত্তি বলে মনে কর, তাহলে সেখানে বিপত্তি ঘটবে। একইভাবে, ঋষিকেশ মানে প্রকৃত অধিকর্তা হলেন কৃষ্ণ। আমাকে এই সম্পত্তি প্রদান করা হয়েছে। ভগবদগীতায় সেটি উল্লেখিত রয়েছে। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি
এখন, শ্রীকৃষ্ণ গুরুরূপ পরিগ্রহ করলেন এবং তিনি নিদের্শনা দিতে শুরু করলেন। তম উবাচ হৃষীকেশ। হৃষীকেশ, শ্রীকৃষ্ণের আরেকটি নাম হৃষীকেশ। হৃষীকেশ মানে হচ্ছে হৃষীক-ঈশ। হৃষীক অর্থ ইন্দ্রিয় এবং ঈশ মানে অধীশ্বর। অতএব শ্রীকৃষ্ণ হলেন আমাদের সকল ইন্দ্রিয়ের অধিশ্বর, সকলের ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর। ত্রয়োদশ অধ্যায়ে সেটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ক্ষেত্রজ্ঞং চাপি মাং বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত ([[Vanisource:BG 13.3 (1972)|ভগবদ্গীতা ১৩.৩]])। এই দেহে দুটি আত্মা রয়েছেন। একটি হল আমি, স্বতন্ত্র আত্মা এবং অন্যজন হলেন শ্রীকৃষ্ণ, পরমাত্মা। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি ([[Vanisource:BG 18.61 (1972)|ভগবদ্গীতা ১৮.৬১]])। তাই প্রকৃতপক্ষে অধিকর্তা হলেন পরমাত্মা। আমাকে এই ইন্দ্রিয়গুলো ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে,
ভ্রাময়ন্ সর্বভূতানি যন্ত্রারূঢ়ানি মায়য়া।
আমার এই তথাকথিত ইন্দ্রিয়সমূহ আসলে আমার নয়। আমি আমার হাতগুলো বানাই নি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক, জড় প্রকৃতির মাধ্যমে, এই হাতগুলো  সৃষ্টি হয়েছে, এবং আমাকে এই হাত দেওয়া হয়েছে আমার নিজ উদ্দেশ্যে; যেমন আহার করা, কিছু সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আমার হাত নয়। অন্যথায়, যখন এই হাতটি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়, তখন আমি দাবি করতে থাকি,  “আমার হাত” আমি সেই হাত ব্যবহার করতে পারি না কেন না হাতের মালিক কর্তৃক তার শক্তি তুলে নেয়া হয়েছে। ঠিক যেমন একটি ভাড়া করা ঘর, যেটিতে তুমি বসবাস করছ। যদি ঘরের স্বত্বাধিকারী, মালিক তোমাকে বহিষ্কার করে, তবে তুমি সেখানে বসবাস করতে পারবে না। তুমি সেটি ব্যবহার করতে পারবে না। একইভাবে, আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত এই দেহে অবস্থান করতে পারব যতক্ষণ পর্যন্ত এই দেহের অধিকর্তা হৃষীকেশ আমাকে এখানে বসবাসের অনুমতি দিচ্ছেন। তাই শ্রীকৃষ্ণের নাম হল হৃষীকেশ। আর এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের অর্থই হল আমরা শ্রীকৃষ্ণের থেকে এই ইন্দ্রিয়সমূহ গ্রহণ করেছি, তাই এগুলো শ্রীকৃষ্ণের জন্য ব্যবহার করা উচিত। ইন্দ্রিয়সমূহকে শ্রীকৃষ্ণের জন্য ব্যবহারের পরিবর্তে আমরা আমাদের নিজের ইন্দ্রিয় তর্পণে ব্যবহার করছি। এটিই আমাদের জীবনের দুর্দশাপূর্ণ অবস্থা। ঠিক যেমন তুমি কোথাও বসবাস করছ যার জন্য তোমাকে ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু যদি তুমি ভাড়া না দাও কিংবা যদি তুমি সেই স্থানকে নিজের সম্পত্তি বলে মনে কর, তাহলেই বিপত্তি ঘটবে। একইভাবে, 'হৃষীকেশ' অর্থাৎ প্রকৃত অধিকর্তা হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। আমাকে এই সম্পত্তি দেয়া হয়েছে। ভগবদ্গীতায় সেটি উল্লেখ রয়েছে।  
([[Vanisource:BG 18.61|.গী ১৮/৬১]])/৬১)। যন্ত্র: এটি একটি মেশিন। এই মেশিনটি কৃষ্ণ আমাকে দিয়েছেন। কারণ আমি অভিলাষ করেছি যে, “যদি আমি মানব শরীর রূপ যন্ত্র লাভ করি তবে আমি এইরূপে উপভোগ করতে পারব।” তাই কৃষ্ণ তোমার অভিলাষ পূর্ণ করেছেন। “ঠিক আছে।” এবং যদি আমি ভাবি, “যদি আমি এইরূপ কোন যন্ত্র পাই যা দিয়ে আমি অন্য কোন পশু রক্ত সরাসরি পান করতে পারি।” কৃষ্ণ বলেন, “ঠিক আছে। তুমি বাঘের শরীর রূপ যন্ত্রটি নাও এবং ব্যবহার করো।” তাই এভাবেই চলছে। অতএব তাঁর নাম ঋষিকেশ। যখন আমরা পরিপূর্ণভাবে উপলব্ধি করব যে, “আমি এই দেহের কর্তা নই।” কৃষ্ণ হলেন এই দেহের কর্তা। আমি আমার ইন্দ্রিয় তর্পনের জন্য এই বিশেষ রূপের দেহ লাভ করতে চেয়েছি। তিনি আমাকে সেটি দিয়েছেন এবং আমি তথাপি সুখি নই। অতএব, আমাকে শিখতে হবে কিভাবে কর্তার জন্য এই দেহরূপ যন্ত্রকে ব্যবহার করতে হয়, এটিই হল ভক্তি। হৃষীকেণ হৃষীকেশ-সেবনং ভক্তিরুচ্যতে ([[Vanisource:CC Madhya 19.170|চৈ.চ মধ্য ১৯/১৭০)]])। যখন এই ইন্দ্রিয়সমূহ - কারণ কৃষ্ণ হলেন এই ইন্দ্রিয়সমূহের কর্তা- তিনি এই দেহের অধিকারী- তাই যখন এই দেহ কৃষ্ণসেবায় ব্যবহৃত হবে, সেটি হবে আমাদের জীবনের পরিপূর্ণতা।  
 
:ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং  
:হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি
:ভ্রাময়ণ্ সর্বভূতানি  
:যন্ত্রারূঢ়ানি মায়য়া
:([[Vanisource:BG 18.61 (1972)|ভগবদ্গীতা ১৮.৬১]])
 
যন্ত্র - এটি একটি মেশিন। এই যন্ত্রটি শ্রীকৃষ্ণ আমাকে দিয়েছেন। কারণ আমি অভিলাষ করেছিলাম যে, “যদি আমি মানব শরীররূপ যন্ত্র লাভ করতে পারি, তবে আমি এইভাবে উপভোগ করতে পারব।” তাই শ্রীকৃষ্ণ তোমার অভিলাষ পূর্ণ করেছেন। “ঠিক আছে।” এবং যদি আমি ভাবি যে, “আমি যদি এমন কোন যন্ত্র পেতাম যা দিয়ে আমি অন্য কোন পশুর রক্ত সরাসরি পান করতে পারতাম।" শ্রীকৃষ্ণ বলবেন, “ঠিক আছে। তুমি বাঘের শরীররূপ যন্ত্রটি নাও এবং ব্যবহার কর।” তাই এসবই চলছে। এজন্যই তাঁর নাম হৃষীকেশ। যখন আমরা পরিপূর্ণভাবে উপলব্ধি করব যে, “আমি এই দেহের কর্তা নই।” শ্রীকৃষ্ণ হলেন এই দেহের কর্তা। আমি আমার ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য এই বিশেষ ধরণের দেহ লাভ করতে চেয়েছিলাম, তাই তিনি আমাকে সেটি দিয়েছেন এবং তথাপি আমি সুখী নই। অতএব, আমাকে শিখতে হবে কিভাবে প্রকৃত কর্তার জন্য এই দেহরূপ যন্ত্রকে ব্যবহার করতে হয়, এরই নাম ভক্তি। হৃষীকেণ হৃষীকেশ-সেবনং ভক্তিরুচ্যতে ([[Vanisource:CC Madhya 19.170|চৈ.চ মধ্য. ১৯.১৭০]])। যখন এই ইন্দ্রিয়সমূহ... কারণ শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন এই ইন্দ্রিয়সমূহের কর্তা- তিনি এই দেহের মালিক, তাই যখন এই দেহ শ্রীকৃষ্ণের সেবায় ব্যবহৃত হবে, সেটিই হবে আমাদের জীবনের পরিপূর্ণতা।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 07:09, 4 June 2021



Lecture on BG 2.1-11 -- Johannesburg, October 17, 1975

এখন, শ্রীকৃষ্ণ গুরুরূপ পরিগ্রহ করলেন এবং তিনি নিদের্শনা দিতে শুরু করলেন। তম উবাচ হৃষীকেশ। হৃষীকেশ, শ্রীকৃষ্ণের আরেকটি নাম হৃষীকেশ। হৃষীকেশ মানে হচ্ছে হৃষীক-ঈশ। হৃষীক অর্থ ইন্দ্রিয় এবং ঈশ মানে অধীশ্বর। অতএব শ্রীকৃষ্ণ হলেন আমাদের সকল ইন্দ্রিয়ের অধিশ্বর, সকলের ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর। ত্রয়োদশ অধ্যায়ে সেটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ক্ষেত্রজ্ঞং চাপি মাং বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত (ভগবদ্গীতা ১৩.৩)। এই দেহে দুটি আত্মা রয়েছেন। একটি হল আমি, স্বতন্ত্র আত্মা এবং অন্যজন হলেন শ্রীকৃষ্ণ, পরমাত্মা। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি (ভগবদ্গীতা ১৮.৬১)। তাই প্রকৃতপক্ষে অধিকর্তা হলেন পরমাত্মা। আমাকে এই ইন্দ্রিয়গুলো ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, আমার এই তথাকথিত ইন্দ্রিয়সমূহ আসলে আমার নয়। আমি আমার হাতগুলো বানাই নি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক, জড় প্রকৃতির মাধ্যমে, এই হাতগুলো সৃষ্টি হয়েছে, এবং আমাকে এই হাত দেওয়া হয়েছে আমার নিজ উদ্দেশ্যে; যেমন আহার করা, কিছু সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আমার হাত নয়। অন্যথায়, যখন এই হাতটি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়, তখন আমি দাবি করতে থাকি, “আমার হাত” আমি সেই হাত ব্যবহার করতে পারি না কেন না হাতের মালিক কর্তৃক তার শক্তি তুলে নেয়া হয়েছে। ঠিক যেমন একটি ভাড়া করা ঘর, যেটিতে তুমি বসবাস করছ। যদি ঘরের স্বত্বাধিকারী, মালিক তোমাকে বহিষ্কার করে, তবে তুমি সেখানে বসবাস করতে পারবে না। তুমি সেটি ব্যবহার করতে পারবে না। একইভাবে, আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত এই দেহে অবস্থান করতে পারব যতক্ষণ পর্যন্ত এই দেহের অধিকর্তা হৃষীকেশ আমাকে এখানে বসবাসের অনুমতি দিচ্ছেন। তাই শ্রীকৃষ্ণের নাম হল হৃষীকেশ। আর এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের অর্থই হল আমরা শ্রীকৃষ্ণের থেকে এই ইন্দ্রিয়সমূহ গ্রহণ করেছি, তাই এগুলো শ্রীকৃষ্ণের জন্য ব্যবহার করা উচিত। ইন্দ্রিয়সমূহকে শ্রীকৃষ্ণের জন্য ব্যবহারের পরিবর্তে আমরা আমাদের নিজের ইন্দ্রিয় তর্পণে ব্যবহার করছি। এটিই আমাদের জীবনের দুর্দশাপূর্ণ অবস্থা। ঠিক যেমন তুমি কোথাও বসবাস করছ যার জন্য তোমাকে ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু যদি তুমি ভাড়া না দাও কিংবা যদি তুমি সেই স্থানকে নিজের সম্পত্তি বলে মনে কর, তাহলেই বিপত্তি ঘটবে। একইভাবে, 'হৃষীকেশ' অর্থাৎ প্রকৃত অধিকর্তা হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। আমাকে এই সম্পত্তি দেয়া হয়েছে। ভগবদ্গীতায় সেটি উল্লেখ রয়েছে।

ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং
হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি
ভ্রাময়ণ্ সর্বভূতানি
যন্ত্রারূঢ়ানি মায়য়া
(ভগবদ্গীতা ১৮.৬১)

যন্ত্র - এটি একটি মেশিন। এই যন্ত্রটি শ্রীকৃষ্ণ আমাকে দিয়েছেন। কারণ আমি অভিলাষ করেছিলাম যে, “যদি আমি মানব শরীররূপ যন্ত্র লাভ করতে পারি, তবে আমি এইভাবে উপভোগ করতে পারব।” তাই শ্রীকৃষ্ণ তোমার অভিলাষ পূর্ণ করেছেন। “ঠিক আছে।” এবং যদি আমি ভাবি যে, “আমি যদি এমন কোন যন্ত্র পেতাম যা দিয়ে আমি অন্য কোন পশুর রক্ত সরাসরি পান করতে পারতাম।" শ্রীকৃষ্ণ বলবেন, “ঠিক আছে। তুমি বাঘের শরীররূপ যন্ত্রটি নাও এবং ব্যবহার কর।” তাই এসবই চলছে। এজন্যই তাঁর নাম হৃষীকেশ। যখন আমরা পরিপূর্ণভাবে উপলব্ধি করব যে, “আমি এই দেহের কর্তা নই।” শ্রীকৃষ্ণ হলেন এই দেহের কর্তা। আমি আমার ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য এই বিশেষ ধরণের দেহ লাভ করতে চেয়েছিলাম, তাই তিনি আমাকে সেটি দিয়েছেন এবং তথাপি আমি সুখী নই। অতএব, আমাকে শিখতে হবে কিভাবে প্রকৃত কর্তার জন্য এই দেহরূপ যন্ত্রকে ব্যবহার করতে হয়, এরই নাম ভক্তি। হৃষীকেণ হৃষীকেশ-সেবনং ভক্তিরুচ্যতে (চৈ.চ মধ্য. ১৯.১৭০)। যখন এই ইন্দ্রিয়সমূহ... কারণ শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন এই ইন্দ্রিয়সমূহের কর্তা- তিনি এই দেহের মালিক, তাই যখন এই দেহ শ্রীকৃষ্ণের সেবায় ব্যবহৃত হবে, সেটিই হবে আমাদের জীবনের পরিপূর্ণতা।