BN/Prabhupada 0666 - সূর্যের আলো যদি কক্ষ ভেদ করে প্রবেশ করতে পারে, তবে কৃষ্ণ কি হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারেন না
Lecture on BG 6.13-15 -- Los Angeles, February 16, 1969
তমাল কৃষ্ণঃ "সর্বত্রই ভগবানের রাজ্য, কিন্তু চিদাকাশ ও সেখানকার গ্রহগুলিকে বলা হয় পরম ধাম অথবা উৎকৃষ্টা ধাম
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এই জড় জগতও ভগবানের সৃষ্টি। এটিও ভগবানের রাজ্য। কিন্তু যেহেতু আমরা ভগবানকে ভুলে গিয়েছি, আমরা প্রচার করছি 'ভগবান মরে গেছে' তাই এই স্থানটি নরকে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমরা যদি ভগবানকে গ্রহণ করি, তাহলে এই জগতটি তৎক্ষণাৎ ভগবদ্ধামে পরিণত হবে। তাই এই মন্দির হচ্ছে চিন্ময় জগত, এটি জড় জগত নয়। এটি জড় জগতের উর্ধে। পড়।
তমাল কৃষ্ণঃ "ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা অনুযায়ী, একজন ভগবৎ তত্ত্ববেত্ত্বা সিদ্ধ যোগী ভগবান স্বয়ং সেই ব্যক্তির সম্পর্কে বলছেন যে সেই যোগী প্রকৃত শান্তি লাভ করেন এবং পরম ধাম গোলোক বৃন্দাবন প্রাপ্ত হন। ব্রহ্ম সংহিতায় পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, ভগবান যদিও গোলোকে বসবাস করেন, কিন্তু একই সঙ্গে তিনি সর্বব্যপ্ত ব্রহ্ম এবং পরমাত্মা রূপেও বিরাজমান।"
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। যদি তুমি ভাব যে শ্রীকৃষ্ণ গোলোক বৃন্দাবনে থাকেন, তাহলে তিনি আবার তোমার মন্দিরে কিভাবে এলেন? না। ব্রহ্ম সংহিতায় বলা হচ্ছে... এই জন্যই আমাদের প্রামাণিক কর্তৃপক্ষ বা মায়ের কাছ থেকে শুনতে হবে। ব্রহ্ম সংহিতায় বলা হয়েছে, গোলোক এব নিবসতি অখিলাত্মভূতঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৭) যদিও তিনি তাঁর ধাম গোলোক বৃন্দাবনে রয়েছেন কিন্তু একই সঙ্গে তিনি সর্বত্র বিরাজমান। তিনি সর্বব্যাপ্ত। ঠিক সেই একই উদাহরণ এখানেও দেয়া যেতে পারে। সূর্য আমাদের থেকে ৯০ লক্ষ মাইল অথবা প্রায় সেরকম দূরত্বে অবস্থিত। কিন্তু একই সঙ্গে সেই সূর্য আমাদের এই কক্ষেও আছে। তা না হলে তুমি কিভাবে এই কথা বলতে পার যে "ওহ সূর্যের আলো এসেছে"। সুতরাং যদি সূর্য তোমার ঘরকে ভেদ করে ভেতরে আসতে পারে, তাহলে কি কৃষ্ণ তোমার হৃদয় অভ্যন্তরে বা ঘর বা প্রতিটি কোনায় কোনায় প্রবেশ করতে পারেন না? তিনি কি এতোই তুচ্ছ? তিনি সর্বত্র রয়েছেন। কিন্তু তোমাকে সেটি উপলব্ধি করতে হবে। তিনি সর্বত্র আছেন। পড়।
তমাল কৃষ্ণঃ "কেউই ততক্ষণ চিদাকাশে বা ভগবদ্ধামে প্রবেশ করতে পারে না যতক্ষণ না সে শ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর নিজ প্রকাশ শ্রীবিষ্ণু সম্পর্কে পূর্ণ উপলব্ধি লাভ না করছেন। অতএব একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তিই হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী। কারণ তাঁর মন সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণের লীলা চিন্তায় নিমগ্ন। বেদেও আমরা দেখতে পাই, "কেবলমাত্র ভগবানকে উপলব্ধি করার দ্বারাই আমরা জন্ম-মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারি।" অন্য কথায় বলতে গেলে, জড় অস্তিত্বের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়াটাই হচ্ছে যোগের সর্বোচ্চ সিদ্ধি। কিছু জাদুর ভেলকি দেখানো বা শারীরিক কসরত করে সাধারণ লোকেদের ঠকানো কোন যোগসিদ্ধি নয়।
শ্রীল প্রভুপাদঃ সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।