BN/Prabhupada 0047 - শ্রীকৃষ্ণই হলেন পরম

Revision as of 21:49, 14 February 2017 by Visnu Murti (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0047 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Invalid source, must be from amazon or causelessmery.com

Lecture on BG 7.1 -- Upsala University Stockholm, September 8, 1973

বিভিন্ন প্রকার যোগ পদ্দতি রয়েছে৷ ভক্তি যোগ,জ্ঞান-যোগ,কর্ম-যোগ,হঠ-যোগ,ধ্যান-যোগ অনেক যোগ রয়েছে৷ কিন্তু ভক্তি যোগ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ৷ শেষ অধ্যায়ে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে ৷আমি সপ্তম অধ্যায়টি এখানে পড়ছি ৷ ষষ্ঠ অধ্যায়ের শেষের দিকে কৃষ্ণ বলছেন: যোগিনামপি সর্বেষাং মদ্‌গতেনান্তরাত্মনা।শ্রদ্ধাবান্‌ ভজতে যো মাং স মে যুক্তমতো মতঃ (ভ.গী ৬/৪৭)

যোগিনাম অপি সর্বেষাম। যিনি যোগ পদ্ধতি অনুশীলন করেন,তাকে বলা হয় যোগী। তাই কৃষ্ণ বলছেন যোগিনাম অপি সর্বেষাম : " সমস্ত যোগীদের মধ্যে।..." আমি ইতোমধ্যেই বলেছি,বিভিন্ন প্রকার যোগী রয়েছে৷ " সমস্ত যোগীদের মধ্যে।..."যোগিনাম্‌ অপি সর্বেষাম্‌ ৷সর্বেষাম অর্থ হলো " সমস্ত যোগীদের মধ্যে।" মদ্‌গতেনান্তরাত্মনা : "যিনি শ্রদ্ধা সহকারে মদগত চিত্তে আমার ভজনা করেন৷" আমরা কৃষ্ণভাবনায় ভাবিত হতে পারি৷কৃষ্ণের রুপ রয়েছে৷ আমরা কৃষ্ণ বিগ্রহ আরাধনা করি। তাই যদি আমরা কৃষ্ণ বিগ্রহ আরাধনায় নিজেদের নিযুক্ত হই, যেটি কৃষ্ণ হতে অভিন্ন, কিংবা বিগ্রহ যদি না থাকে , যদি আমরা কৃষ্ণ নাম জপ্ করি, তবে সেটিও কৃষ্ণ৷ অভিন্নত্বান্নামনামিনোঃ (চৈ.চ মধ্য ১৭.১৩৩) কৃষ্ণ হলেন পরম। অতএব, তিনি এবং তাঁর নামের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তিনি এবং তাঁর রুপের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তিনি এবং তাঁর ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই তিনি এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কৃষ্ণ সম্পর্কিত সবকিছুই হলো কৃষ্ণ। একেই বলা হয় পরম জ্ঞান। অতএব, যদি আপনি কৃষ্ণ নাম জপ-কীর্তন করেন কিংবা কৃষ্ণের রুপের আরাধনা করেন-এসব কিছুই হলো কৃষ্ণ। তাই ভক্তিমূলক সেবার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। শ্রবণং কীর্তনং বিষ্ণোঃ স্মরণং পাদসেবনম্‌।অর্চনং বন্দনং দাস্যং সখ্যমাত্মনিবেদম্‌। (শ্রীমদ্ভাগবত ৭.৫.২৩)

আপনি শুধু কৃষ্ণ কথা শ্রবণ করুন। এই শ্রবণও হলো কৃষ্ণ। যেরকম এখন আমরা কৃষ্ণ কথা শ্রবণ করার চেষ্টা করছি। তাই এই শ্রবণও হলো কৃষ্ণ। এই ছেলে-মেয়েরা, জপ-কীর্তন করছে। এই জপ কীর্তনও কৃষ্ণ। শ্রবণং কীর্তনং। এরপর স্মরণং। যখন আপনি কৃষ্ণ নাম জপ-কীর্তন করবেন তখন যদি আপনি কৃষ্ণের রুপ স্মরণ করেন তবে সেটিও কৃষ্ণ। কিংবা আপনি যদি কৃষ্ণের রুপ দর্শন করেন।সেটি কৃষ্ণ। আপনি কৃষ্ণ বিগ্রহ দর্শন করেন। সেটি কৃষ্ণ। আপনি কৃষ্ণ সম্পর্কিত কিছু শিক্ষা লাভ করেন। তবে সেটিও কৃষ্ণ। যাই হোক, এভাবে শ্রবণং কীর্তনং বিষ্ণোঃ স্মরণং পাদসেবনম্‌।অর্চনং বন্দনং দাস্যং সখ্যমাত্মনিবেদম্‌। (শ্রীমদ্ভাগবত ৭.৫.২৩)

এই নয়টি পদ্ধতির যেকোনো একটি আপনি গ্রহণ করেন। তবে অবিলম্বেই কৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন। আপনি চাইলে গ্রহণ করতে পারেন নয়টি পদ্ধতির সবগুলোই বা আটটি বা সাতটি বা ছয়টি বা পাঁচটি বা চারটি বা তিনটি বা দুটি, অন্তত একটি, আপনি যদি কঠোরভাবে গ্রহণ করেন এবং... এই জপ-কীর্তনের কথাই ধরুন।এটি করার জন্য কোনোকিছুই ব্যয় করতে হয় না। আমরা সারা বিশ্বে কীর্তন করছি। যেকেউ আমাদের সাথে শ্রবণ করার মাধ্যমে কীর্তন করতে পারে। এর জন্য আপনাকে কোনো মূল্য দিতে হয় না। এবং যদি আপনি কীর্তন করেন, তাতে আপনার কোনো ক্ষতি নেই। অতএব...কিন্তু যদি আপনি তা করেন, তবে তার মাধ্যমে আপনি অবিলম্বেই কৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন। এই হল লাভ। অবিলম্বেই। কারণ কৃষ্ণের নাম এবং কৃষ্ণ অভিন্ন...অভিন্নত্বান্নামনামিনোঃ (চৈ.চ মধ্য ১৭.১৩৩)। এগুলো বৈদিক শাস্ত্রের বর্ণনা। অভিন্নত্বান্নামনামিনোঃ। নাম চিন্তামণিঃ কৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণের নাম চিন্ময় চিন্তামণি বিশেষ, চিন্তামণি অর্থ হলো চিন্ময়। চিন্তামণিপ্রকরসদ্মসু কল্পবৃক্ষ-লক্ষাবৃতেষু। (ব্রহ্মসংহিতা ৫/২৯)। এগুলো হলো বৈদিক শাস্ত্রের বর্ণনা। যেখানে কৃষ্ণ নিত্য বিরাজ করেন, সেই স্থান সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে: চিন্তামণিপ্রকরসদ্মসু কল্পবৃক্ষ-লক্ষাবৃতেষু সুরভীরভিপালয়ন্তম্‌। (ব্রহ্মসংহিতা ৫/২৯)। অতএব নাম, শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র নামও হলো চিন্তামণি, চিন্ময়। নাম চিন্তামণিঃ কৃষ্ণ। তিনি সেই একই ব্যক্তি, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ। নাম চিন্তামণিঃ কৃষ্ণশ্চৈতন্য (চৈ.চ মধ্য ১৭.১৩৩)। চৈতন্য মানে হলো মৃত নয়,বরং চেতন সম্পন্ন জীব। স্বয়ং কৃষ্ণের প্রত্যক্ষ সান্নিধ্য লাভের যে ফল লাভ হয় সে একই ফল কৃষ্ণনাম জপ করার মাধ্যমে প্রাপ্ত হতে পারেন। সেটিও সম্ভব। কিন্তু সেটি ধীরে ধীরে উপলব্ধি হবে। নাম চিন্তামণি: কৃষ্ণশ্চৈতন্যরসবিগ্রহঃ। রস-বিগ্রহঃ মানে হলো আনন্দ, সর্বপ্রকার আনন্দের আধার। যেহেতু আপনি হরেকৃষ্ণ নাম জপ করেন, তাই ক্রমান্বয়ে অাপনি কিছু অপ্রাকৃত আনন্দ আস্বাদন করেন। যেরকম এসমস্ত ছেলে-মেয়েরা, তারা যখন কীর্তন করে, তখন তারা মহানন্দে নৃত্য করে। তাদেরকে কেউ অনুসরণ করে না। কিন্তু তারা উন্মাদ বলে কীর্তন করছে না। প্রকৃতপক্ষে, তারা কিছু আনন্দ, অপ্রাকৃত আনন্দ লাভ করছে। তাই তারা নৃত্য করছে। এটি কুকুর নৃত্য নয়। না। এটি প্রকৃত চিন্ময় নৃত্য, আত্মার নৃত্য। তাই...অতএব, তিনি হলেন রসবিগ্রহঃ, সমস্ত আনন্দের আধার। নাম চিন্তামণিঃ কৃষ্ণশ্চেতন্যরসবিগ্রহঃ। পূর্ণঃ (চৈ.চ মধ্য ১৭.১৩৩) পূর্ণ।এই নয় যে কৃষ্ণের চেয়ে এক শতাংশ কম। না। শতভাগ কৃষ্ণ। পূর্ণ পূর্ণঃ শুদ্ধ। এই জড় জগত কলুষিত। জড় যেকোনো নাম অাপনি জপ করেন, এটি জড় কলুষ যুক্ত হওয়ায়, আপনি দীর্ঘক্ষণ তা জপ করতে পারবেন না। এটি আরেকটি অভিজ্ঞতা। কিন্তু যখন আপনি হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ-কীর্তন করেন, তখন যদি অাপনি তা চব্বিশ ঘণ্টাও করেন তবে আপনি কখনো ক্লান্ত অনুভব করবেন না। এই হলো পরীক্ষা। আপনি জপ-কীর্তন করতে থাকুন। এই ছেলেগুলো কোনো আহার, জলপান ছাড়া্ই চব্বিশ ঘণ্টায় জপ-কীর্তন করতে পারে। এটি এতো সুন্দর। কারণ এটি পূর্ণ, চিন্ময়, শুদ্ধ। শুদ্ধ। এটি জড় কলুষ মুক্ত। জড় আনন্দ, যেকোনো আনন্দ... জড় জগতের সর্বোচ্চ আনন্দ হলো মৈথুন উপভোগ। কিন্তুসেটি আপনি চব্বিশ ঘণ্টা উপভোগ করতে পারবেন না। সেটি অসম্ভব। আপনি হয়তো কয়েক মিনিটের জন্য তা উপভোগ করতে পারেন। এতটুকুই। এমনকি আপনাকে যদি তা উপভোগ করতে বাধ্যও করা হয় তবে আপনি তা প্রত্যাখান করবেন: “না, না আর নয়।” এটিই হল জড়। কিন্তু চিন্ময় মানে হলো এর কোনো অন্ত নেই। আপনি অবিরত উপভোগ করতে পারেন, ২৪ ঘণ্টায়। এটিই হলো চিন্ময় আনন্দ উপভোগ। ব্রহ্মসৌখ্যং অনন্তম (ভাগবত ৫.৫.১)। অনন্তম। অনন্তম মানে ‘অন্তহীন’।