BN/Prabhupada 0949 - আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নতি করছি, কিন্তু আমরা আমাদের দাঁত সম্পর্কেও ঠিকঠাক জানি না
720831 - Lecture - New Vrindaban, USA
আমরা শিক্ষায় উন্নত হচ্ছি,কিন্তু এমনকি আমরা আমাদের দাঁত সম্পর্কেও কিছু জানি না আমি একটি ভজন ব্যাখ্যা করব, এটি নরোত্তম দাস ঠাকুরের গাওয়া। নরোত্তম দাস ঠাকুর ছিলেন আমাদের পূর্বতন আচার্যদের মধ্যে অন্যতম একজন, এবং তাঁর ভজনগুলো আমাদের বৈষ্ণব সমাজে বৈদিক সত্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি সাধারণ ভাষায় লিখেছেন, কিন্তু এর মাঝে বৈদিক সত্য রয়েছে। তিনি অনেক ভজন রচনা করেছেন। তার মধ্যে একটি ভজন হচ্ছেঃ হরি হরি বিফলে জনম গোঁয়াইনু তিনি বলছেন, আমার প্রিয় প্রভু, আমি শুধুমাত্র আমার জীবনের সময়গুলো নষ্ট করছি। বিফলে জনম গোঁয়াইনু। প্রত্যেকেই মনুষ্য দেহে জন্মগ্রহন করছে, কিন্তু সে জানে না যে কিভাবে এর সদ্ব্যবহার করতে হয়। সে পশুর মতো এটিকে ব্যবহার করে। পশুরা আহার গ্রহণ করে; আর আমরা কৃত্রিম উপায়ে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করি। সেটাই হচ্ছে আমাদের অগ্রগতি। পশুদের রাজ্যে প্রত্যেকটি পশু একটি নির্দিষ্ট ধরণের খাবার খায়। ঠিক যেমন বাঘ। বাঘ মাংস আর রক্ত খায়। কিন্তু তুমি যদি বাঘকে ভাল ভাল কমলালেবু আর আঙ্গুর দাও, সে ছুঁয়েও দেখবে না। কারণ সেটা তার খাবার নয়। একইরকম ভাবে, একটি শূকর। শূকর বিষ্ঠা খায়। যদি তুমি শুকরকে সুস্বাদু হালুয়া দাও, সে ছোঁবেও না (হাসি)। দেখো। অর্থাৎ প্রতিটি প্রাণীরই নির্দিষ্ট একটি ধরণের খাবার রয়েছে। একইরকম ভাবে, আমরা মানুষ, আমাদেরও নির্দিষ্ট কিছু খাবার আছে। সেটা কি? ফল, দুধ, শস্য। ঠিক যেমন আমাদের দাঁত এভাবে তৈরি -যখন তোমরা ফল খাও, তোমরা সহজেই দাঁত দিয়ে এটাকে টুকরো করে ফেলতে পারবে। কিন্তু যদি তুমি এক টুকরো মাংস নাও তাহলে তা এই দাঁত দিয়ে কাটা কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু বাঘের একটা নির্দিষ্ট ধরণের দাঁত থাকে, যা দিয়ে সে অবিলম্বে মাংস টুকরো করে ফেলতে পারে। তাহলে আমরা শিক্ষায় অগ্রগতি লাভ করছি কিন্তু এমনকি আমরা আমাদের দাঁত সম্পর্কেও কিছু জানি না। আমরা কেবল দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাই। ব্যস। এটাই আমাদের সভ্যতার উন্নতি। বাঘ কখনও দাঁতের ডাক্তারের কাছে যায় না। (হাসি) যদিও তার দাঁত এতই শক্ত যে সে তৎক্ষণাৎ তা টুকরো করে ফেলতে পারে, কিন্তু তার দাঁতের ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না। কারণ সে এমন কিছু খায় না যা তার জন্য স্বভাব অনুযায়ী নয়। কিন্তু আমরা যে কোনও অখাদ্য বস্তু খেয়ে নেই; তাই আমাদের দাঁতের ডাক্তারের সাহায্য প্রয়োজন হয়।
তাই মনুষ্য জাতির একটা নির্দিষ্ট কর্তব্যকর্ম রয়েছে। সেই কর্তব্যকর্মটি হল ভাগবৎ জীবন সম্পর্কে জানা এবং আলোচনা করা। সেটাই আমাদের প্রকৃত ধর্ম। ভাগবত-ধর্ম। আমাদের ভগবানকে জানার চেষ্টা করা উচিত। ভাগবত ধর্ম। আমি আগেই তা বর্ণনা করেছি। ভগবান এবং ভক্ত অথবা ভাগবতের সম্পর্ক, তাকেই বলা হয় ভাগবত ধর্ম। এইভাবে এটি খুবই সহজ। কিভাবে? তোমাকে শুধু শ্রীকৃষ্ণের সম্পর্কে শ্রবণ করতে হবে।