BN/Prabhupada 0839 - যখন আমরা শিশু থাকি, আমরা তখন কলুষিত নই, তখনই আমাদের ভাগবত ধর্ম শিক্ষা দেয়া উচিৎ

Revision as of 14:23, 11 August 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0839 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1975 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


751203 - Lecture SB 07.06.02 - Vrndavana

প্রভুপাদঃ তাই একত্বের কোন প্রশ্নই আসে না । এই একত্ব মিথ্যা। আলাদা অস্তিত্ব থাকতেই হবে। তাহলেই সন্তুষ্টি আসবে একজন বন্ধু তাঁর বন্ধুকে ভাল্বাসে, এবং সেই বন্ধুটিও একে অপরকে ভালবাসে সেটিই সন্তুষ্টি। এমন নয় যে, "তুমি আমার বন্ধু আর আমি তোমার বন্ধু, চল দুজনে মিলে এক হয়ে যাই।" তা সম্ভব নয়। এবং তাতে কোন সন্তুষ্টিও নেই তাই যেই সব মায়াবাদীরা ভগবানের সঙ্গে এক হয়ে যেতে যায়, তারা জানেও না আসলে সন্তুষ্টি কাকে বলে। তারা কৃত্রিমভাবে এক হয়ে যেতে চায় সেটি সন্তুষ্টি নয়। যেহন্যে অরবিন্দাক্ষ বিমুক্তমানিনস্ত্বয় অস্তভাবদ্‌ অবিশুদ্ধ-বুদ্ধয়। (ভাগবত ১০.২.৩২) মায়াবাদীরা মনে করে "এখন আমি ব্রহ্ম উপলব্ধি করেছি, আমি ব্রহ্ম, চিন্ময় আত্মা তাই আমি এই দেহ ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে পরম চিন্ময় আত্মার সঙ্গে এক হয়ে যাব।" বলা হয়েছে, ঘটাকাশ পটাকাশ। কিন্তু তাতে কোন প্রকৃত সন্তুষ্টি বা আনন্দ নেই যেহন্যে অরবিন্দাক্ষ বিমুক্তমানিন । তারা মনে করে, "আমি এখন মুক্ত হয়ে গেছি, সুতরাং আমি ব্রহ্মের সঙ্গে এক হয়ে গেছি" কিন্তু আসলে সে তা কৃত্রিমভাবে মনে করছে যেহন্যে অরবিন্দাক্ষ বিমুক্তমানিনস্ত্বয় অস্তভাবদ্‌ অবিশুদ্ধ-বুদ্ধয় কারণ ওদের কাছে এরকম কোন সঠিক তথ্য নেই যে কিভাবে পূর্ণ সন্তুষ্টি লাভ করা যায় তাই তারা অবিশুদ্ধ-বুদ্ধয়। তাদের বুদ্ধি শুদ্ধ নয় তা অবিশুদ্ধ, এবং জড়। আরুহ্য কৃচ্ছেন পরং পদং ততঃ পতন্তি অধঃ অনাদৃত যুষ্মদঙ্ঘ্রয় (ভাগবত ১০/২/৩২)

এই কারণে তোমরা দেখবে যে মায়াবাদী সন্ন্যাসীরা সমাজসেবা করার জন্য আবারো এই জগতে ফিরে আসে, পশুদের সেবা করতে, দেশের সেবা, সমাজের সেবা ইত্যাদি। এটি মায়াবাদ। অবিশুদ্ধ বুদ্ধয়। সে পরম প্রভু বা সেব্য এবং সেবকের সম্পর্কের মহিমান্বিত স্তরে থাকতে পারে নি পরমেশ্বর ভগবান সেব্য এবং আমরা তাঁর সেবক। যেহেতু আমরা সেই স্তরে উন্নীত হতে পারি নি, তাই ... আমার অবস্থা হচ্ছে সেবা করা। আমি কৃষ্ণের সেবা করতে চাই নি। আমি তাঁর সাথে এক হয়ে যেতে চেয়েছিলাম। তাই আমার অবস্থাটি পরিষ্কার নয়। তাই শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার পরিবর্তে আমি আবার এই জগতের সেবা করতে ফিরে এসেছি সম্প্রদায়ের, দেশের, জাতির ইত্যাদি বহু কিছুর সেবা করতে। সেবা কখনও পরিত্যাগ করা যায় না। কিন্তু যেহেতু অবিশুদ্ধ বুদ্ধয় যথার্থভাবে প্রশিক্ষণ নেই, শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার পরিবর্তে মন এখনও অবিশুদ্ধ অবস্থায় আছে, যেহেতু সে শ্রীকৃষ্ণকে বাদ দিয়ে নিরাকার, নির্বিশেষ - এর সেবা করতে লালায়িত তাহলে সে সেবাটা করবে কোথায়? সেবা করার মনোবৃত্তিটি কোথায় প্রয়োগ করবে? তাই তারা আবারও ফিরে আসে - সমাজ, দেশ... যখন তারা সেবা ত্যাগ করে , ব্রহ্ম সত্য জগন্মিথ্যা - "এই সবকিছুই মিথ্যা"। কারণ তারা জানেই না যে আসলে সেবা করাটাই প্রকৃত আনন্দের জীবন। তা তারা জানে না। আরুহ্য কৃচ্ছেন পরম্‌ পদম্‌ ততঃ পতন্তি অধঃ তাই তারা আবারও জাগতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে অধঃপতিত হয়।

জীবনের প্রকৃত বিষয় না জানার ফলে এইসব ঘটে। প্রহ্লাদ মহারাজ তাই জীবনের সুস্পষ্ট ধারণা দিচ্ছেন কিভাবে ভগবানের সেবা করতে হয় - একে বলা হয় ভাগবত ধর্ম। আমাদের সন্তানদের এই শিক্ষা দিতে হবে অন্যথায়, যখন সে অনেক ধরণের আজে বাজে জিনিসে যুক্ত থাকবে, সেটি অনেক কঠিন হয়ে যাবে যে, তাকে সেই সব মিথ্যা জিনিস থেকে সরিয়ে এনে আবারও ভগবানের সেবায় যুক্ত করাতে। তাই যখন আমরা শিশু থাকি - আমরা তখন কলুষিত নই - তখনই আমাদের ভাগবত ধর্ম শিক্ষা দেয়া উচিৎ সেটি প্রহ্লাদ মহারাজের আলোচ্য বিষয়। কৌমার আচরেৎ প্রাজ্ঞ ধর্মান্‌ ভাগবতানিহ দুর্লভম্‌ মানুষঃ (ভাগবত ৭/৬/১) আমরা সেবা করছি। পাখিরা সেবা করছে। তাদেরও ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে ওরা সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে ওদের সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার চেষ্টা করছে আর সেই সব ছোট বাচ্চারা জপ করছে, "মা , মা, আমাদের খাবার দাও" আর খাচ্ছে। সেখানেও সেবা রয়েছে। সেবা রয়েছে। মনে কর না, কেউ সেবা ছাড়া রয়েছে। প্রত্যেকেই সেবা করছে... একজন মানুষ সারা দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে। কেন? পরিবার, সমাজ, সন্তান, স্ত্রী - এঁদের সবার সেবা করতে সেবা চলছেই। কিন্তু সে আসলে জানে না যে কোথায় সেবা করা উচিৎ তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকম্‌ শরণম্‌ (গীতা ১৮.৬৬) - "আমার সেবা কর, তাহলেই তুমি সুখী হতে পারবে।" এই হচ্ছে আমাদের দর্শন।ভাগবত ধর্ম।

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ

ভক্তবৃন্দঃ জয় শ্রীল প্রভুপাদ।