BN/Prabhupada 0241 - ইন্দ্রিয়গুলি সাপের মতো
Lecture on BG 2.3 -- London, August 4, 1973
স্বর্গ বৈদিক সাহিত্যে বর্ননা আছে ত্রি-দশ-পুর হিসাবে। ত্রি-দশ-পুর। ত্রি-দশ-পুর মানে তেত্রিশ কোটী দেবতা আছে, তাদের আলাদা আলাদা গ্রহ আছে। একেই ত্রি-দশ-পুর বলা হয়। ত্রি মানে তিন এবং দশ মানে দশম। তাই তেত্রিশ অথবা ত্রিশ। যাইহোক, ত্রি-দশ-পুর আকাশ-পুস্পায়তে। আকাশ পুস্প মানে কিছু কাল্পনিক, কিছু কাল্পনিক। আকাশে একটি ফুল। একটা ফুলকে বাগানে হওয়া উচিত, কিন্তু যদি কেউ আকাশে ফুলকে কল্পনা করে তাহলে কাল্পনিক কথা। তাই একজন ভক্তের জন্য এই স্বর্গ গ্রহে যাওয়া, উন্নতির পথে শুধুমাত্র আকাশে একটি ফুলের মতো। ত্রি-দশ-পুর আকাশ-পুস্পায়তে। কৈবল্যং নরকায়তে। জ্ঞানী এবং কর্মী। আর দুদান্ত ইন্দ্রিয় কাল-স্বর্প-পটলী প্রখ্যাত দ্রংষ্টায়তে। তারপর যোগী। যোগীরা চেষ্টা করছে। যোগী মানে যোগ ইন্দ্রিয়-সংযম, ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রন করা। এটা যোগ অভ্যাস। আমাদের ইন্দ্রিয় হচ্ছে খুব শক্তিশালী। যেমন আমরা বৈষ্ণব, আমরা প্রথমে জীহ্বাকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করছি। তেমন যোগীরাও, তারা চেষ্টা করছে তাদের ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রন করতে, শুধুমাত্র জীহ্বা নয় অন্য সব, দশ রকমের ইন্দ্রিয় গুলিও, রহস্যবাদী যৌগিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কেন তারা নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করছে? কারন ইন্দ্রিয় সর্পের মত। একটা সাপ... যেমন তারা কিছু সাপ স্পর্শ করে, সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু পর্যন্ত যে কোন কিছু হতে পারে। অসুস্থ তো হবেই, এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই উদাহরন দেওয়া যেতে পারেঃ আমাদের যৌন আবেগ। যত তাড়াতাড়ি অবৈধ যৌন সম্পর্ক আছে, অনেক অসুবিধা আছে। অবশ্য আজকাল এটা খুব সহজ হয়ে গেছে। আগে এটা খুব মুশকিল ছিল, বিশেষ করে ভারতে। এইজন্য একজন যুবতী মেয়েকে সর্বদা রক্ষা করা হত, কারন যদি সেই মেয়ে ছেলেদের সাথে মেশে, কোন না কোন ভাবে, যখনই যৌন সন্মন্ধ হয়, সে গর্ভবতী হয়ে যায়। আর তার বিয়ে দেওয়া অসম্ভব হয়ে যায়, না, সর্প দ্বারা ছোঁওয়া হয়েছে। এই হচ্ছে... বৈদিক সভ্যতা খুব শক্ত। কারন পুরো উদ্দেশ্য ছিল বাড়ি ফিরে যাওয়া ভগবদ্ধাম ফিরে যাওয়া। ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টি নয়, খাওয়া, পান করা, মগ্ন হওয়া, আনন্দ নেওয়া, এটা মানুষ্য জীবনের উদ্দেশ্য নয়। তাই সবকিছু সেই উদ্দেশ্যে আয়োজিত করা হয়েছিল, বিষ্ণুর আরাধ্যতে।
বর্নাশ্রমাচারব্রতা পুরুষেন পরঃ পুমান বিষ্ণুর আরাধ্যতে পন্থা নান্যত তত-তোশ-কারনম (চৈ.চ.মধ্য ৮.৫৮)
বর্নাশ্রম, এই ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব বিশেষ বিভাগের নিয়মগুলি কঠোরভাবে পালন করতে হয়। একটি ব্রাহ্মণকে একটি ব্রাহ্মণ হিসাবে কাজ করতে হবে। একটি ক্ষত্রিয় এখানে ... কৃষ্ণ বলছেন, "আপনি ক্ষত্রিয়, আপনি কেন এই অর্থহীন কথা বলছেন? আপনাকে এটা করতে হবে।" নৈতৎ ত্বব্য উপপদ্যতে (ভ.গী ২.৩) "দুটি উপায়ে আপনি এটি করতে পারবেন না। একজন ক্ষত্রিয় হিসাবে এটি করা উচিত নয় এবং আমার একজন বন্ধু হিসাবে, আপনাকে এই কাজ করা উচিত নয়। এটি আপনার দুর্বলতা। "সুতরাং এই বৈদিক সভ্যতা। যুদ্ধ ক্ষত্রিয়ের জন্য। একজন ব্রাহ্মণ যুদ্ধ করবে না। ব্রাহ্মন হচ্ছে সত্য, শমো, দমো, সে অভ্যাস করছে, কিভাবে সত্যবাদী হওয়া যায়, কিভাবে শুচী হওয়া যায়। কি ভাবে ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রন করা যায়, কিভাবে মনকে নিয়ন্ত্রন করা যায়, কিভাবে সহজ হওয়া যায়, কিভাবে বৈদিক সাহিত্যের পুরো জ্ঞান পাওয়া যায়, ব্যক্তিগত জীবনে কিভাবে প্রয়োগ করতে হয়, কীভাবে অধ্যবসায় চালিয়ে যেতে হয়। এই হচ্ছে ব্রাহ্মন, একইভাবে ক্ষত্রিয় - যুদ্ধ করা এটা প্রয়োজন। বৈশ্য-কৃষি-গো-রক্ষা-বানিজ্যম (ভ.গী ১৮.৪৪) তাই এই সব কঠোরভাবে অনুসরণ করা আবশ্যক।