BN/Prabhupada 0277 - কৃষ্ণ ভাবনামৃত মানে সব প্রকার জ্ঞান থাকবে
Lecture on BG 7.2 -- San Francisco, September 11, 1968
জ্ঞানং তেহহং সবিজ্ঞানমিদং বক্ষ্যাম্যশেষতঃ যজজ্ঞাত্বা নেহ ভূয় অন্যাৎ জ্ঞাতব্যম অবশিষ্যতে (ভ.গী ৭.২) আমরা এই শ্লোক নিয়ে আলোচনা করেছি, জ্ঞান কি? জ্ঞান মানে মহাবিশ্ব কিভাবে কাজ করছে, কাজ বল কি, শক্তি কি? বিজ্ঞানীদের মতো, তারা বিভিন্ন শক্তির অনুসন্ধান করছে। ঠিক যেমন এই পৃথিবী ওজনহীন ভাবে ভেসে আছে। যেমন একটি বিশাল জড় শরীর, অনেক পাহাড়, অনেক সমুদ্র, মহাসাগর, গগনচুম্বী ঘর, শহর, গ্রাম, দেশ- এটি বায়ুতে তুলোর মত ভাসছে, তাই যদি কেউ বুঝতে পারে যে এটি কিভাবে ভাসমান, সেটা জ্ঞান। তাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত মানে সব ধরনের জ্ঞান থাকা। এটা এমন নয় যে আমরা কৃষ্ণ ভাবনাময় মানুষ কোন ভাবনায় ভেসে যাচ্ছি, না। আমরা এই দর্শন পেয়েছি, বিজ্ঞান, ধর্মতত্ত্ব, নীতিশাস্ত্র, নীতিমালা, সবকিছু। সবকিছু যা একটি মানুষের জীবনে জানতে প্রয়োজন। এ কারণেই কৃষ্ণ বলেন যে "আমি জ্ঞান নিয়ে তোমার সাথে কথা বলবো।" তাই এটি কৃষ্ণ ভাবনামৃত। এটি কৃষ্ণ ভাবনামৃত ... একজন কৃষ্ণ সচেতন ব্যক্তির বোকা হওয়া উচিত নয়। যদি তার প্রয়োজন হয় তবে তিনি বোঝাবে কিভাবে এই সার্বজনিন ব্রহ্মান্ড ভাসছে। কিভাবে এই মানব শরীর ঘুরছে, কত প্রজাতি আছে জীবনে, কিভাবে তারা বিকশিত হচ্ছে ... এই সব বৈজ্ঞানিক জ্ঞান। পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, রসায়ন, জ্যোতির্বিদ্যা, সবকিছু। তাই কৃষ্ণ বলছেন, যজ্ঞ জ্ঞাত্বা, যদি আপনি এই জ্ঞান বুঝতে পারেন, কৃষ্ণ ভাবনামৃত, তাই আপনাকে অন্য কিছু জানতে হবে না। এর মানে আপনি সম্পূর্ণ জ্ঞান পাবেন। আমরা জ্ঞানেরপিছনে উৎকন্ঠিত, কিন্তু আমরা যদি কৃষ্ণ ভাবনামৃত জ্ঞানে থাকি, যদি আমরা কৃষ্ণকে জানতে পারি, তাহলে সমস্ত জ্ঞান এতে জড়িত থাকবে। তাই তৎ-শক্তি বিষয় বিভিক্তা-স্বরূপ বিশয়াকম জ্ঞানম। আপনার সাংবিধানিক অবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকবে, এই জড় বিশ্বের, আধ্যাত্মিক বিশ্বে, ভগবান, আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক, সময়, স্থান, সবকিছু। জানার অনেক জিনিস আছে, কিন্তু প্রধান জিনিস হল যে ... ভগবান, জীব, সময়, কর্ম, এবং এই জড় শক্তি। এই পাঁচ জিনিস জানা উচিত। আপনি অস্বীকার করতে পারেন না "কোন ভগবান নেই।" ভগবান নিয়ামক, সর্বোচ্চ নিয়ামক। আপনি বলতে পারেন না যে আপনি নিয়ন্ত্রিত নন। নিয়ন্ত্রক আছে। যেমন এই রাষ্ট্রে, আপনি বলতে পারবেন না কোন নিয়ন্ত্রক নেই। নিয়ন্ত্রক আছে। প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি ঘরে নিয়ন্ত্রণ আছে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ। ধরুন এই দোকানটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আপনাকে এই ভাবে একটি দোকান নির্মাণ করতে হবে, আপনি থাকতে পারবেন না। যদি এটি একটি আবাসিক ঘর হয়, "অগ্নি ব্যবস্থা এই ভাবে করা উচিত।" নিয়ন্ত্রণ আছে। এমনকি আপনি রাস্তায় হাঁটুন, আপনি আপনার গাড়ী চালান, নিয়ন্ত্রণ আছে: "ডান দিকে থাকুন।" আপনি পার হতে পারবেন না, যেখানে লেখা আছে থামুন।" আপনাকে থামতেই হবে। তাই সব উপায়ে, আপনি নিয়ন্ত্রিত। তাই একজন নিয়ন্তা আছে। এবং সুপ্রিম নিয়ন্ত্রক হয় কৃষ্ণ। একজন নিয়ন্ত্রকের উপরে আরেক জন নিয়ন্ত্রক। যদি আপনি এমনভাবে অনুসন্ধান করেন যে কে চূড়ান্ত নিয়ামক, তাহলে আপনি কৃষ্ণকে পাবেন। সর্ব-কারন-কারনম (ব্র.সং. ৫.১) ব্রহ্মসংহিতা পুষ্টি করছে, ঈশ্বরঃ পরমঃ, সর্বোচ্চ নিয়ন্তা হচ্ছে কৃষ্ণ। ঈশ্বরঃপরমঃ কৃষ্ণঃ (ব্র.সং. ৫.১), ঈশ্বর মানে নিয়ন্তা। সুতরাং আমাদের এই নিয়ন্ত্রকের জ্ঞান পেতে হবে, কিভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। (শিশুরা গোলমাল করছে) এটি বিরক্তিকর। তাই জ্ঞানম বিজ্ঞানম তে সহিতাম। শুধুমাত্র এই নয় যে নিয়ামক তথ্য জানতে হবে, কিন্তু তিনি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন তা জানতে হবে। কত শক্তি নিয়ন্ত্রকের আছে, এবং কিভাবে তিনি নিয়ন্ত্রণ করছেন - এই বিজ্ঞান। তাই জ্ঞানং বিজ্ঞানং তে নতে তুভ্যম প্রপন্নায়া অশেষতঃ।