BN/Prabhupada 0022 - শ্রীকৃষ্ণ ক্ষুধার্ত নন

Revision as of 07:05, 4 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 1.8.18 -- Chicago, July 4, 1974

শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "আমার ভক্ত প্রীতির সহিত", যো মে ভক্তা প্রযচ্ছতি। শ্রীকৃষ্ণ ক্ষুধার্ত নন। শ্রীকৃষ্ণ তোমার নিবেদিত বস্তু এই কারণে গ্রহণ করতে আসেন না যে তিনি ক্ষুধার্ত। না, তিনি ক্ষুধার্ত নন। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং চিন্ময় জগতে তিনি সেবিত হন লক্ষ্মী-সহস্র-শত-সভ্রম-সেব্যমানম, হাজার হাজার ভাগ্যের দেবী লক্ষ্মীদেবী কর্তৃক সেবিত হন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ এতই দয়ালু, আপনি যদি শ্রীকৃষ্ণকে খুব ঐকান্তিকভাবে ভালবাসেন তবে তিনি আপনার পত্রং পুষ্পং গ্রহণ করবেন। যদি আপনি সবচাইতে দরিদ্রও হন, তাহলেও তিনি আপনার নিবেদন গ্রহণ করবেন। একটু পাতা, একটু জল, একটু ফুল। এই পৃথিবীর যে কোন অংশে যে কেউই এই জিনিসগুলো সহজেই পেতে পারেন এবং শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করতে পারেন। "হে শ্রীকৃষ্ণ, আপনাকে দেয়ার মতো আমার কাছে কিছুই নেই, আমি অনেক দরিদ্র, দয়া করে এটি গ্রহণ করুন। " শ্রীকৃষ্ণ গ্রহণ করবেন, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, তদহম্ অশ্নামি, 'আমি খাই'। আসল জিনিস হচ্ছে, ভক্তি, স্নেহ, প্রেম। এইজন্যে এইখানে বলা হয়েছে, 'অলক্ষ্যম্'। . শ্রীকৃষ্ণকে দেখা যায় না, ভগবানকে দেখা যায় না। কিন্তু তিনি এত দয়ালু যে তিনি আমাদের কাছে এসেছেন যাতে এই জড় চক্ষু দিয়ে দেখা যায়। শ্রীকৃষ্ণকে এই জড় জগতে দেখা যায় না, জড় চোখ দিয়ে দেখা যায় না। ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা সবাই শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সকল জীবেরাই, কিন্তু আমরা একে ওপরকে দেখতে পারি না। তুমি আমাকে দেখতে পারছো না, আমি তোমাকে দেখতে পারছি না। 'না, আমি আপনাকে দেখতে পারছি', তুমি কি দেখতে পারছো? তুমি কেবল আমার শরীরটা দেখতে পারছো। তাহলে যখন আত্মা শরীর থেকে চলে যায়, তাহলে কেন তুমি "আমার বাবা চলে গেলেন?" বলে কাঁদো? কেন বলছো বাবা চলে গিয়েছে? বাবা তো এখানে শুয়ে আছে। তাহলে তুমি কি দেখলে? তুমি তোমার পিতার মৃত শরীরটি দেখলে, তোমার বাবাকে নয়। সুতরাং যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের একটা অংশকণা আত্মাকেই না দেখতে পাও, তাহলে শ্রীকৃষ্ণকে কি করে দেখবে? সুতরাং শাস্ত্র বলছে অতঃ শ্রীকৃষ্ণনামাদি, ন ভবেদ্ গ্রাহ্যম্ ইন্দ্রিয়ৈঃ (চৈতন্য চরিতামৃত ১৭.১৩৬) এই ভোতা চোখ শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পায় না, অথবা শ্রীকৃষ্ণের নাম শুনতে পারে না, নামাদি। 'নাম' মানে নাম, নামাদি মানে নাম, রূপ, গুণ, লীলা। এইসব জিনিস তোমার ভোতা চোখ বা ইন্দ্রিয় দিয়ে দেখা যাবে না। কিন্তু যদি এগুলোকে শুদ্ধ করা যায় তাহলে, 'সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ'। যদি ভক্তিযোগের পন্থার দ্বারা এগুলোকে শুদ্ধ করা যায় তাহলে , আপনি শ্রীকৃষ্ণকে, সব জায়গায় সব সময়ে দেখতে পারবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্যে, অলক্ষ্যম; দৃশ্যমান নয়। শ্রীকৃষ্ণ সব জায়গায় আছেন, ভগবান সর্বত্র, অণ্ডান্তরস্থং পরমাণুচয়ান্তরস্থং। অলক্ষ্যম সর্ব-ভূতানাং। যদিও শ্রীকৃষ্ণ বাহির এবং ভিতর সব জায়গায় আছেন তবুও আমরা শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পারব না যদি না আমরা তাঁকে দেখার মতো দিব্যচক্ষু লাভ করতে পারি।

সুতরাং কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে সেই দিব্য চক্ষু খোলার জন্যে যার দ্বারা শ্রীকৃষ্ণকে দেখা যায়। এবং যদি আপনি শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পারেন, অন্তর বাহির, তাহলে আপনার জীবন সফল হবে। সুতরাং শাস্ত্র বলছেন যে অন্তর -বাহির।

অন্তর্বহির্যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্,
নান্তর্বহির্যদিস্তপসা ততঃ কিম্।

সবাই নির্ভুল হতে চাইছে, কিন্তু নির্ভুল হওয়া মানে হচ্ছে যখন একজন শ্রীকৃষ্ণকে অন্তরে এবং বাইরে দেখতে পারবে। সেটিই হচ্ছে পরিপূর্ণতা।