BN/Prabhupada 0042 - দীক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নাও
Initiation Lecture Excerpt -- Melbourne, April 23, 1976
শ্রীচৈতন্য চরিতামৃততে বর্ণিত আছে, শ্রীল রূপ গোস্বামীকে শিক্ষা প্রদান করার সময় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছিলেন,
- এইরূপে ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে কোনও ভাগ্যবান জীব,
- গুরুকৃষ্ণ কৃপায় পায় ভক্তিলতাবীজ
জীব এক প্রকারের জীবন থেকে অন্য প্রকারের জীবনে ভ্রমণ করছে, এবং এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কখনও নিম্নতর জীবনে, কখনও উচ্চতর জীবনে। এটিই চলছে। একে বলা হয় সংসার-চক্র-বর্ত্মনি। গত রাতে আমরা ব্যাখ্যা করছিলাম, 'মৃত্যু-সংসারবর্ত্মনি'। এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, 'মৃত্যুসংসারবর্ত্মনি'। জীবনধারণের উপায় অত্যন্ত কঠিন, মৃত্যুও কঠিন। সবাই মৃত্যুকে ভয় পায় কারণ কেউ জানে না মৃত্যুর পর কি ঘটবে। যারা নির্বোধ, তারা পশু। ঠিক যেমন যখন পশুদের হত্যা করা হয়, অন্য পশুরা মনে করে যে "আমি নিরাপদ"। যে কোনও ব্যক্তি যার সামান্য বুদ্ধিও আছে, কখনই মরতে চাইবে না এবং আরেকটি দেহ ধারণ করতে চাইবে না। আর আমরা জানিও না যে কি ধরনের শরীর আমরা পেতে যাচ্ছি। সুতরাং গুরু এবং শ্রীকৃষ্ণের করুণা দ্বারা এই যে দীক্ষা, একে খুব হালকাভাবে নিও না। এটি খুব গুরুত্ব সহকারে নাও। এটি একটি বিশাল সুযোগ। এখানে 'বীজ' মানে ভক্তির বীজ।
সুতরাং ভগবানের সামনে তোমরা যা প্রতিজ্ঞা করেছ, তোমার গুরুদেবের সামনে, অগ্নির সামনে, বৈষ্ণবদের সামনে, এই প্রতিজ্ঞাগুলো থেকে কখনও বিচ্যুত হইও না। তবেই তুমি তোমার পারমার্থিক জীবনে স্থির থাকতে পারবে। কোনও অবৈধ সঙ্গ নয়, আমিষাহার নয়, কোনও জুয়া খেলা নয়, কোনও নেশা করা চলবে না, এই চারটি করা যাবে না - এবং হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করা -এই একটি করণীয়। চারটি 'না' এবং একটা হ্যাঁ। এটিই আপনার জীবনকে সফল করবে। এটা খুব সহজ। এটা কঠিন নয়. কিন্তু মায়া খুব শক্তিশালী। কখনও কখনও আমাদেরকে বিচ্যুত করে দেয়। সুতরাং যখন যখন মায়া আমাদের পথচ্যুত করতে চেষ্টা করবে, তখন শুধু শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করবে। "দয়া করে আমাকে বাঁচান। আমি আত্মসমর্পণ করছি, সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করছি, এবং দয়া করে আমাকে রক্ষা করুন" এবং শ্রীকৃষ্ণ তোমাকে রক্ষা করবেন। কিন্তু এই সুযোগটি হারিও না। এটা আমার অনুরোধ। আমার সব শুভেচ্ছা এবং আশীর্বাদ তোমাদের ওপর আছে। তাই এসো, আমরা ভক্তির এই সুযোগ গ্রহণ করি,ভক্তি-লতা-বীজ। মালী হইয়া সেই বীজ করে আরোপন। সুতরাং যখন তুমি একটি চমৎকার বীজ পাবে, তা তোমাদের মাটিতে বপন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি তুমি প্রথম শ্রেণীর গোলাপ ফুলের খুব ভাল বীজ পাও, তুমি সেটি মাটিতে বপন কর এবং শুধু একটু, সামান্য, সামান্য জল প্রদান দিতে থাকো। এটি বাড়তে থাকবে। সুতরাং এই বীজটি জলসিঞ্চনের দ্বারা বাড়বে। সেই জলসেচনটি কি? শ্রবণ কীর্তন জলে করয়ে সেচন (চৈ. চ.মধ্য ১৯.১৫২)। এই ভক্তি-লতায় জলসেচন হচ্ছে শ্রবণ-কীর্তন, শ্রবণ ও জপ করা । সুতরাং তোমরা সন্ন্যাসী ও বৈষ্ণবদের থেকে আরও বেশি বেশি শুনবে। কিন্তু এই সুযোগ হারাবে না। এটা আমার অনুরোধ। অনেক ধন্যবাদ।
ভক্তরা: জয় শ্রীল প্রভুপাদ!