BN/Prabhupada 0680 - আমরা ভাবছি আমরা এই মেঝেতে বসে রয়েছি, কিন্তু আসলে আমরা শ্রীকৃষ্ণের ওপর বসে রয়েছি

Revision as of 13:11, 5 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0680 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1969 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 6.25-29 -- Los Angeles, February 18, 1969

সুতরাং 'প্রকৃত যোগী সর্বভূতে আমাকে দর্শন করেন। এবং সর্বত্র আমাকে দর্শন করেন।" কীভাবে? আমাতে কীভাবে দর্শন করেন? কারণ তুমি যাই কিছু দেখছ না কেন, তাই শ্রীকৃষ্ণ। তুমি এই মেঝেতে বসে রয়েছ, তাই তুমি আসলে শ্রীকৃষ্ণতেই বসে রয়েছ। তুমি কার্পেটে বসে আছ, মানে তুমি শ্রীকৃষ্ণেই বসে আছ। এই কার্পেট কীভাবে শ্রীকৃষ্ণ হল? কারণ এটি শ্রীকৃষ্ণের দেয়া উপাদানেই নির্মিত।

বিভিন্ন প্রকারের - পরাস্য শক্তির্বিবিধৈব শ্রুয়তে (চৈতন্য চরিতামৃত মধ্যলীলা ১৩.৬৫ তাৎপর্য) ভগবানের অনেক শক্তি রয়েছে সেই সবের মধ্যে প্রধান তিনটি হচ্ছে মুখ্য জড়া শক্তি, চিন্ময় শক্তি, এবং তটস্থা শক্তি। আমরা বদ্ধ জীবেরা হচ্ছি তটস্থা শক্তি। এই সমস্ত জড়া প্রকৃতি হচ্ছে জড়া শক্তি। তারপর চিন্ময় শক্তি। চিন্ময় জগত। আমরা তটস্থা। তাই আমরা হয় জড়া শক্তির প্রভাবে রয়েছি ... তটস্থা মানে হয় এভাবে নয়তো ওভাবে। তুমি চিন্ময় হতে পার বা জড় হতে পার। কোন ৩য় বিকল্প নেই। হয় তুমি জড় বিষয়ে থাকবে নয় পারমার্থিক চিন্ময় হবে। যতক্ষণ তুমি এই জড় জগতে রয়েছ, তুমি জড়া প্রকৃতিতে বসে আছ, তাই তুমি শ্রীকৃষ্ণতেই বসে আছ। কারণ শক্তি শ্রীকৃষ্ণ থেকে আলাদা নয়। ঠিক যেমন এই আলোটি। এই শিখাটি, এতে তাপ এবং আলো দুইই আছে। দুই প্রকারের শক্তি। তাপ আগুন থেকে আলাদা নয়, আর আলোটাও আগুন থেকে পৃথক নয়। তাই এক বিচারে তাপটিও আগুন, আলোটিও আগুন। ঠিক তেমনই জড়া প্রকৃতিও শ্রীকৃষ্ণ। তাই আমরা ভাবছি আমরা মেঝেতে বসে আছি, কিন্তু আসলে আমরা শ্রীকৃষ্ণতেই বসে আছি। এটিই হল দর্শন।

তাই "...তিনি আমাতেই সবকিছুতেই দর্শন করেন। আত্মতত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি আমাকে সর্বত্র দর্শন করেন।" সেটিই হচ্ছে সর্বত্র দর্শন সবকিছুতেই, সমস্ত জীবেদের কৃষ্ণ সম্বন্ধে দর্শন করার মানেই হচ্ছে তুমি সর্বত্র শ্রীকৃষ্ণকে দর্শন করছ। ঠিক যেমনটি ভগবদ্গীতাতে শিক্ষা দেয়া হয়েছে, রসোহম্‌ অপ্সু কৌন্তেয় (গীতা ৭/৮) "আমিই জলের স্বাদ"। কেন সমস্ত জীবেরা জল পান করে? বিভিন্ন প্রাণী, পাখি, পশু, মানুষ সকলেই জল পান করে। তাই জল অত্যন্ত প্রয়োজন। আর শ্রীকৃষ্ণ প্রচুর পরিমাণ জলের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। দেখছ? প্রচুর জলের দরকার। কৃষিকাজ, ধোয়ার কাজে, পানের জন্য। যদি প্রয়োজনের সময় কেউ এক গ্লাস জল না পায়, তাহলে সে মরেই যাবে। যুদ্ধক্ষেত্রে যার জল না পাবার অভিজ্ঞতা আছে, সে বুঝতে পারে জল কত মূল্যবান। যুদ্ধের সময় যখন তারা তৃষ্ণার্ত থাকে, যদি কোন জল না পায়, তাহলে তারা মারা যায়। জল এতো গুরুত্বপূর্ণ কেন? কারণ সেটি খুবই স্বাদু। তুমি যদি খুব তৃষ্ণার্ত হও আর এক চুমুক জল পান করতে পার, - "ওহ্‌ ভগবান তোমাকে অনেক ধন্যবাদ" তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "আমি হচ্ছি সেই স্বাদ। আমি সেই জীবন দানকারী জলের স্বাদ।" শ্রীকৃষ্ণ বলেন। তাই তুমি যদি এই দর্শনটি শিখতে পার, তাহলে যখনই তুমি জল খাবে, তুমি শ্রীকৃষ্ণকেই দেখবে আর যখন তুমি জল পাবে না।? সেটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত রসোহম্‌ অপ্সু কৌন্তেয় প্রভাস্মি শশীসূর্যয়োঃ "আমিই সূর্য চন্দ্রের প্রভা"। তাই সে রাতেই হোক বা দিনের বেলাতেই হোক, তোমাকে সূর্যের বা চন্দ্রের আলো দেখতেই হবে। তাহলে তুমি কীভাবে কৃষ্ণকে ভুলতে পার? তুমি জল খাও, অথবা সূর্যের আলো দেখ বা চাঁদের আলোই দেখ না কেন, অথবা কোন শব্দই শোন না কেন শব্দোহম্‌ (ভাগবত ১১/১৬/৩৪) অনেক কিছু রয়েছে, এসব তোমরা চতুর্থ অধ্যায়ে পড়েছ যে কীভাবে শ্রীকৃষ্ণ সর্বব্যাপ্ত। তাই এই ভাবে প্রত্যেককে সর্বত্র শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করতে হবে। তাহলেই তুমি যোগসিদ্ধি লাভ করবে। এখানে সেই কথাই বলা হয়েছে। "প্রকৃত যোগী আমাকে সর্বভূতে এবং আমাতেই সর্বভূত দর্শন করেন"। যোগযুক্ত আত্মা সর্বত্র আমাকেই দর্শন করেন।