BN/Prabhupada 0692 - ভক্তিযোগ হচ্ছে যোগপন্থার সর্বোচ্চ স্তর

Revision as of 03:49, 6 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0692 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1969 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 6.46-47 -- Los Angeles, February 21, 1969

ভক্তঃ "যোগী তপস্বীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, জ্ঞানীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং সকাম কর্মীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। অতএব হে অর্জুন, তুমি সর্বাবস্থাতেই যোগী হও।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ যোগী হচ্ছেন জাগতিক জীবনের সর্বোচ্চ সিদ্ধ অবস্থা । এই জড় জগতে বিভিন্ন ধরণের জীবন আছে কিন্তু কেউ যদি নিজেকে যোগ স্তরে আনতে পারে বিশেষ করে ভক্তিযোগে, তাহলে বুঝতে হবে তিনি যোগের সর্বোন্নত স্তরে রয়েছেন। তাই শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলছেন, "প্রিয় অর্জুন, তুমি সমস্ত অবস্থাতেই যোগী হও।" পড়ো।

ভক্তঃ সমস্ত যোগীদের মধ্যে যিনি শ্রদ্ধা সহকারে মদগতচিত্তে আমার ভজনা করেন, তিনিই সবচেয়ে অন্তরঙ্গভাবে আমার সঙ্গে যুক্ত এবং সমস্ত যোগীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সমস্ত যোগীদের মধ্যে - অনেক ধরণের যোগী আছে। অষ্টাঙ্গ যোগী, হঠযোগী, জ্ঞানযোগী, কর্মযোগী, ভক্তিযোগী। তাদের মধ্যে ভক্তিযোগ হচ্ছে সমস্ত যোগের সর্বোচ্চ স্তর। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "সমস্ত যোগীদের মধ্যে"। বিভিন্ন ধরণের যোগী রয়েছে। "সমস্ত যোগীদের মধ্যে যিনি শ্রদ্ধাসহকারে আমার ভজনা করেন", আমার মানে - শ্রীকৃষ্ণ বলছেন "আমাতে"। অর্থাৎ যিনি সর্বদা শ্রীকৃষ্ণে নিমগ্ন। "দৃঢ় শ্রদ্ধা সহকারে মদ্গতচিত্তে প্রেমময়ী সেবার মাধ্যমে আমার ভজনা করেন, তিনিই সবচাইতে অন্তরঙ্গভাবে আমার সাথে যুক্ত এবং সমস্ত যোগীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।" এটিই এই অধ্যায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ উপদেশ। সাংখ্যযোগ। যদি কেউ সর্বোচ্চ স্তরের আদর্শ যোগী হতে চায় তাহলে তাকে কৃষ্ণভাবনাময় হতে হবে এবং এইভাবে সে সর্বোৎকৃষ্ট যোগী হতে পারবে। পড়ো।

ভক্তঃ তাৎপর্য - "এখানে সংস্কৃত শব্দ 'ভজতে' অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ মূল সংস্কৃত শ্লোকে ভজতে শব্দটি দেখা যায়।

যোগীনাম্‌ অপি সর্বেষাম্‌

মদ্গতেনান্তরাত্মনা

শ্রদ্ধাবান ভজতে যো মাম্‌

স মে যুক্ততমো মতঃ

(গীতা ৬/৪৭)

এই ভজতে শব্দটি একটি সংস্কৃত শব্দ, এই শব্দটি এসেছে ভজ্‌ ধাতু থেকে। এটি একটি ক্রিয়া, ভজ্‌ ধাতু। ভজ্‌ মানে সেবা করা। ভজনা। এই ভজ্‌ ধাতুর শব্দটি এই শ্লোকে ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ যিনি ভক্ত হয়েছেন। ভক্ত না হয়ে কে শ্রীকৃষ্ণের ভজনা করতে পারে? যেমন ধর তুমি এখানে সেবা করছ। কেন? তুমি যে কোন জায়গাতেই সেবা করতে পার। তার ফলে প্রতি মাসে এক হাজার ডলার পাবে, দু হাজার ডলার পাবে। কিন্তু তুমি এখানে এসে সেবা করছ কোন টাকা ছাড়াই। কেন? শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভালবাসার কারণে। তাই এই ভজনা, সেবা, প্রেমপূর্ণ সেবা এটি ভগবানের প্রতি ভালবাসার ওপর ভিত্তি করে সম্পন্ন হয়। নয়তো কেন কেউ অযথা সময় নষ্ট করবে? এইসব শিষ্যেরা বিভিন্নভাবে যুক্ত আছে। কেউ বাগান করছে, কেউ টাইপ করছে, কেউ রান্না করছে, কেউ বা অন্য কিছু করছে। এইভাবে সবকিছুই করছে, কিন্তু এই সমস্ত কিছু শ্রীকৃষ্ণের সম্পর্কে। তাই সবকিছুতেই কৃষ্ণভাবনামৃত থাকছে, চব্বিশ ঘণ্টা। এটিই হচ্ছে সর্বোচ্চ যোগ। যোগ মানে শ্রীবিষ্ণু বা শ্রীকৃষ্ণের সাথে চেতনাকে সর্বদা যুক্ত রাখা। এটিই হচ্ছে যোগের সার্থকতা। যে কেউ তা স্বাভাবিকভাবে রাখতে পারে, এমন কি একটি শিশুও। বাচ্চারা তাদের বাবা মায়ের সাথে আসছে এবং প্রণাম করছে "কৃষ্ণ, আমি প্রণাম করছি।" সুতরাং সেও কৃষ্ণভাবনাময়। একটা ছোট্ট বাচ্চা, সেও হাততালি দিচ্ছে। কেন? "হে কৃষ্ণ"। যাই হোক এইভাবে সকলেই কৃষ্ণস্মরণ করছে। অন্যদেরকে কৃষ্ণভাবনাময় রাখছে। এই কৃষ্ণভাবনামৃতে একটি ছোট্ট শিশুও সর্বোচ্চ যোগী। এটা আমাদের অহঙ্কার নয়। এটি প্রামাণিক শাস্ত্র ভগবদগীতাতেই বলা হয়েছে । আমরা বলি না যে এই সব কথা আমাদের অহঙ্কার বাড়ানোর জন্য আমরা নিজেরা বানিয়েছি। এই মন্দিরে একটি ছোট্ট শিশুও যোগের সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকতে পারে সেটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। পড়ো।