BN/Prabhupada 0706 - প্রকৃত দেহ ভেতরে দেহ রয়েছে

Revision as of 09:28, 6 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0706 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1975 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 3.26.29 -- Bombay, January 6, 1975

তাই আমাদের প্রচেষ্টা করতে হবে কীভাবে আমরা এই জড় অস্তিত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারি এবং আমাদের চিন্ময় স্থিতিতে উপনীত হতে পারি। সেইটিই মনুষ্য জীবনের প্রচেষ্টা হওয়া উচিত। কুকুর বেড়ালের সেই রকম উন্নত চেতনা নেই। ওরা এসবের জন্য চেষ্টা করতে পারে না। ওরা জড় দেহ এবং জড় ইন্দ্রিয় পেয়েই সন্তুষ্ট। কিন্তু মনুষ্য জন্মে এই এটা বোঝার সুযোগ আছে যে এই জড় দেহ বা ইন্দ্রিয়গুলো মিথ্যা অনিত্য, মিথ্যা এই অর্থে যে এটি আমার আসল দেহ নয় প্রকৃত দেহটি এই জড় দেহের অভ্যন্তরে রয়েছে। সেইটি চিন্ময় দেহ। দেহিনোস্মিন্‌ দেহে, তথা দেহান্তরপ্রাপ্তির্ধীরস্তত্র ন মুহ্যতি (গীতা ২/১৩) অস্মিন্‌ দেহিনঃ তাই চিন্ময় দেহটি হচ্ছে আসল দেহ এবং এই জড় দেহটি হচ্ছে আবরণ। ভগবদগীতায় এটি আরেকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় (গীতা ২/২২)। এই দেহটি হচ্ছে পোশাকের মতো। পোশাক... আমি এই জামাটি পরছি, তুমি এই জামা বা প্যান্ট টি পরে আছ। সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জামার ভেতরে তোমার দেহটি। ঠিক তেমনই, এই জড় দেহ হচ্ছে চিন্ময় দেহের পোশাক মাত্র। জড় পরিবেশে, প্রকৃত দেহটি থাকে দেহাভ্যন্তরে। দেহিনোস্মিন্‌ যথা দেহে (গীতা ২/১৩) এই বাইরের শরীরটিকে বলা হয় দেহ, আর এই শরীরের যিনি মালিক তাঁকে বলা হয় দেহী। "এই দেহএর যিনি মালিক"। আমাদেরকে তা বুঝতে হবে। এটি ভগবদগীতার প্রথম উপদেশ।

তাই এটি জানার জন্য চেষ্টা করা উচিত যে এই জড় দেহটি আমার চিন্ময় দেহকে আবৃত করে কীভাবে এলো। অহম্‌ ব্রহ্মাস্মি। এই বিজ্ঞানকে বোঝার জন্য কপিলদেব তাঁর সাংখ্য দর্শন ব্যাখ্যা করে গেছেন। কীভাবে সবকিছু ঘটছে। এই কথা বুঝতে গেলে... সেই একই কথাঃ এই সরল কথাটি বুঝতে হবে যে "আমি এই দেহ নই যে "আমি এই দেহ নই"। দেহটি আত্মার থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমরা জড় বৈজ্ঞানিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহ্বান করি। তারা বলে দেহ থেকে আত্মা এসেছে না। আত্মা দেহ থেকে আসে নি। বরং আত্মা কারণ দেহ ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি হয়। ঠিক উল্টোটা। জড় বৈজ্ঞানিকেরা মনে করে এই সব কিছু জড় বস্তুর সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়েছে যেখানে প্রাণের লক্ষণ রয়েছে। না। তা নয় প্রকৃত সত্য হচ্ছে চিন্ময় আত্মা আছে সারা বিশ্বে সেই আত্মাগুলো ভ্রমণ করছে। ব্রহ্মাণ্ড, ব্রহ্ম। ব্রহ্মাণ্ড মানে সমস্ত সৃষ্টি। চিন্ময় কখনও এই দেহে, কখনও অন্য দেহে। কখনও সে এই গ্রহে, কখনও অন্য গ্রহে। এইভাবে তাঁর কর্ম অনুযায়ী সে ভ্রমণ করছে। এর নাম জড় জীবন। এই রূপে ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে (চৈতন্য চরিতামৃত ১৯/১৫১) । আত্মা কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই পরিভ্রমণ করছে। "জীবনের লক্ষ্য কি?" কেন তাদেরকে এই অবস্থায় ফেলা হয়েছে? এই জড় দেহ যা সমস্ত দুঃখের উৎস তা গ্রহণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে কেন? এই প্রশ্নগুলো করা উচিত। এর নাম ব্রহ্ম জিজ্ঞাসা। আর সেই গুলো যথাযথ ভাবে উত্তর দেয়া উচিত। তাহলেই আমাদের জীবন সার্থক হবে। অন্যথায় এই দেহ কুকুর বেড়ালের দেহের মতোই অর্থহীন। কোন বোধ নেই, মূঢ়। মূঢ়।