BN/Prabhupada 0790 - কীভাবে অন্যের স্ত্রীর সাথে বন্ধুত্ব করা যায় এবং অন্যের টাকা হাতিয়ে নেয়া যায়
Lecture on SB 6.1.56-57 -- Bombay, August 14, 1975
শিক্ষা মানে মানুষ হয়ে ওঠা চাণক্য পণ্ডিত, যদিও তিনি একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন কিন্তু ব্রাহ্মণও ছিলেন, তিনিও বলেছেন শিক্ষিত বা পণ্ডিত কে। ব্রাহ্মণ পণ্ডিত হিসেবে পরিচিত। পণ্ডিতের লক্ষণ কি ? তিনি সেই কথা সংক্ষেপে বলেছেন -
- মাতৃবৎ পরদারেষু
- পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ
- আত্মবৎ সর্বভূতেষু
- যঃ পশ্যতি স পণ্ডিতাঃ
পণ্ডিত মানে মাতৃবৎ পরদারেষু "সমস্ত স্ত্রীলোকদের মা হিসেবে গ্রহণ করা" - পর দারেষু দারা মানে স্ত্রী, এবং পর মানে অন্যের। তাঁর নিজের স্ত্রী ব্যতীত তিনি সকল মহিলাদের মাতৃ জ্ঞানে ব্যবহার করবেন এই জন্য আজও হিন্দু সমাজে, অপরিচিত পুরুষেরা সমস্ত স্ত্রীলোককে মা বলে সম্বোধন করেন লোকটি অপরিচিত কিনা সেটিও মূল ব্যাপার নয় তিনি অন্য স্ত্রীদের সাথে কথা বলতে গেলে তাকে প্রথমে 'মাতাজী' বলে সম্বোধন করতে হবে। তাহলে কারোর প্রতি অপরাধ করা হয় না। সেটিই হচ্ছে সদাচার। চাণক্য পণ্ডিত সেই শিক্ষা দিয়েছেন মাতৃবৎ পরদারেষু - অন্য স্ত্রীলোকদের 'মা' বলে সম্বোধন করতে হবে। এবং পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ - অন্যের সম্পত্তিকে রাস্তায় পড়ে থাকা মাটির ঢেলার মতো মনে করতে হবে - কেউই ওসবের পরোয়া করে না। যদি কিছু মাটির ঢেলা বা পাথর রাস্তায় ছুঁড়ে মারা হয়, কেউই তার পরোয়া করে না। আবর্জনা। তাই কারোরই অন্যের সম্পত্তি স্পর্শ করা উচিৎ নয় আজকালকার দিনের শিক্ষা হচ্ছে অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করা আর অন্যের টাকা যে কোন উপায়ে হাতিয়ে নেয়া। এটা শিক্ষা নয়। শিক্ষা হচ্ছেঃ মাতৃবৎ-পরদারেষু পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ আত্মবৎ সর্বভূতেষু সর্বভূতেষু- সমস্ত জীবের প্রতি ৮৪ লক্ষ প্রজাতির বিভিন্ন জীবদেহ আছে ঘাসও একটা জীবসত্তা এবং ব্রহ্মাও একজন জীব অতএব পণ্ডিত ব্যক্তি সবাইকে জীব হিসেবে দেখেন এবং সকলকে তাঁর নিজের মতো বলে গ্রহণ করেন "আমি নিজে যেই দুঃখের বা সুখের অনুভূতি পাই, অন্যদের সাথে আচরণ করার সময়েও আমাকে একই অনুভূতি রাখতে হবে" তাই ...আধুনিক যুগে জাতীয়তা মানে কেবল মানব জাতি কিন্তু আসলে পশুরাও একই দেশের জাতীয়তাসম্পন্ন সংজ্ঞানুযায়ী, একই জাতীয়তার মানে একই দেশে জন্মগ্রহণকারী। 'জাতীয়' শব্দটি বৈদিক শাস্ত্রের কোথাও পাওয়া যায় না, এটি একটি আধুনিক আবিষ্কৃত শব্দ। তাই বলা হচ্ছে আত্মবৎ সর্বভূতেষু একই জাতির হোক বা না হোক তাতে কিছু যায় আসে না সর্বভূতেষু। এখানেও বলা হচ্ছে, সর্বভূত সুহৃৎ সুহৃৎ, বন্ধু, সর্বভূতের শুভাকাঙ্ক্ষী আমি কেন কেবল আমার পরিবার আর আমার আত্মীয়দের কথা ভাবব? সেটি কৃপণ মনোভাব একজন উদার হৃদয়সম্পন্ন ব্রাহ্মণ সকলের কল্যাণের জন্য নিযুক্ত থাকেন
তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর উদ্দেশ্য - পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম (চৈতন্য ভাগবত অন্ত্যখণ্ড ৪.১২৬) চৈতন্য মহাপ্রভু কখনই বলেন নি, প্রচার কোন বিশেষ স্থানে নিজের দেশ, সমাজ বা জাতির মধ্যেই কেবল সীমাবদ্ধ রাখতে। তিনি বলেছেন - পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম "এই ভূমণ্ডলে যত নগর বা গ্রাম আছে..." (পাশ থেকে) ঠিক আছে, বিরক্ত হয়ো না। সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম। এটিই তাঁর উদ্দেশ্য এই হচ্ছে বৈদিক জ্ঞান। সর্বভূত-সুহৃৎ