BN/Prabhupada 0907 - চিন্ময় জগতে তথাকথিত অমরত্বও ভাল

Revision as of 07:36, 28 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Bengali Pages - 207 Live Videos Category:Prabhupada 0907 - in all Languages Categor...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


730419 - Lecture SB 01.08.27 - Los Angeles

ভক্তঃ "... জাগতিকভাবে দুর্দশাগ্রস্তদেরও সম্পদ। প্রকৃতির গুণের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার অতীত। তুমি সম্পূর্ণরূপে আত্মতৃপ্ত, তুমি প্রশান্ত এবং মুক্তিদানে সমর্থ।"

প্রভুপাদঃ নমঃ অকিঞ্চনবিত্তায় জাগতিকভাবে নিঃস্ব। এটি হচ্ছে ভক্তের প্রথম গুণ। এই জগতের কিছুই যার নেই তাঁর কেবল কৃষ্ণ রয়েছেন। এই হচ্ছে অকিঞ্চন-বিত্ত। অকিঞ্চন মানে জড় বিষয়ে যিনি সম্পূর্ণভাবে নিঃস্ব। কারণ তোমার যদি সামান্যতমও আসক্তি থাকে যে, "আমি এই বিষয়ে জাগতিকভাবে সুখী হতে চাই" ততদিন পর্যন্ত তোমাকে আরেকটি দেহ পেতে হবে।

প্রকৃতি এতোই করুণাময়ী যে তুমি যে ভাবেই এই জগতকে ভোগ করতে চাও না কেন, তিনি তোমাকে ভগবানের নির্দেশে সেই উপযোগী একটি দেহ দান করবে । ভগবান সকলের হৃদয়ে বসে আছেন তাই তিনি জানেন যে তুমি এখনও জাগতিক কিছু চাইছ। তিনি তোমাকে তা দেবেন। "হ্যাঁ, এই নাও" কৃষ্ণ চান যে তুমি নিজে এই অভিজ্ঞতা পাও যে এই জগতের কোন কিছুতেই কোনভাবেই তুমি সুখী হতে পারবে না এই হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের কাজ। এটাতে তাঁর পূর্ণ স্বাধীনতা। যদিও তুমি সামান্যমাত্র স্বাধীনতা পেয়েছ কারণ যেহেতু আমরা ভগবানের অংশ। শ্রীকৃষ্ণের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে, তাই আমার মধ্যেও সেই স্বাধীনতা গুণটি আছে যেহেতু আমি তাঁর অংশ। রাসায়নিক গঠন। সমুদ্রের এক বিন্দু জলের মধ্যেও একবিন্দু লবন আছে যদিও সম্পূর্ণ সমুদ্রের মধ্যে যত পরিমাণ লবণ আছে, তার সঙ্গে এটার তুলনা হয় না। কিন্তু লবণ উপাদানটি তাতে আছে এটাই হচ্ছে আমাদের দর্শন। জন্মাদি অস্য যতঃ (ভাগবত ১.১.১) আমাদের মধ্যে ক্ষুদ্র পরিমাণে যা আছে, তা কৃষ্ণের মধ্যেও আছে , পূর্ণরূপে। পূর্ণরূপে । ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন - মৃত্যু সর্বহরশ্চাহম্‌

এখন আমাদের প্রবণতা হচ্ছে অন্যের জিনিস দখল করা বলতে পার এটি চুরি করা। আমাদের সেই প্রবণতা আছে। কেন? কারণ শ্রীকৃষ্ণের মধ্যেও তা আছে। তিনি মাখনচোর নামে প্রসিদ্ধ। চুরি করার উৎস। তাই সেই চুরির প্রবণতা না থাকলে আমি তা পেলাম কোথা থেকে? কিন্তু কৃষ্ণের চুরি করা আর আমার চুরি করা ভিন্ন ব্যাপার। কারণ আমি জাগতিকভাবে কলুষিত। তাই আমার চুরি করা হচ্ছে ঘৃণ্য। যেখানে এই একই চুরি করা চিন্ময় জগতে আনন্দদায়ক, চমৎকার বিষয়। মা যশোদা কৃষ্ণের সেই চুরি করাকে উপভোগ করছেন সেটিই হচ্ছে জাগতিক ও চিন্ময় এর মধ্যে পার্থক্য। যে কোন কাজ তা যখন চিন্ময়, তা ভাল এবং যে কোন কাজ তা যখন জাগতিক তখন তা খারাপ। এই হচ্ছে পার্থক্য। এখানে যতসব জাগতিক ন্যায়নীতি সবকিছুই খারাপ। আর চিন্ময় জগতে তথাকথিত অমরত্বও ভাল। সেই কথা তোমাদের বুঝতে হবে

ঠিক যেমন রাতের অন্ধকারে অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে নাচানাচি করাটা অনৈতিক। সেই কথা সবাই জানেন। অন্ততপক্ষে বৈদিক সভ্যতায় কখনই অনুমোদিত নয়। একজন যুবতী নারী আরেকজন যুবকের সঙ্গে মাঝরাতে নাচতে যাচ্ছে তা ভারতবর্ষে কখনও অনুমোদন করা হয় না। এখনও তা নিষিদ্ধ। কিন্তু আমরা দেখি যে যেই মুহূর্তে গোপীরা কৃষ্ণকে মুরলীধ্বনি করতে শুনলেন, তৎক্ষণাৎ তাঁরা সেখানে এলেন জাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা অনৈতিক কিন্তু পারমার্থিক বিচার থেকে তা সর্বোত্তম নৈতিকতা ঠিক যেমনটা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, রম্যা কাচিদ্‌ উপাসনা ব্রজবধুবর্গেন যা কল্পিতা "ব্রজের রমণীরা যেভাবে কৃষ্ণের ভজনা করেছেন, তার চেয়ে ভাল ভজনা আর কিছুই হতে পারে না।" শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মহিলাদের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন তাঁর সংসার জীবনেও তিনি কোনদিন কোন স্ত্রীলোকের সঙ্গে ঠাট্টা কৌতুক করেন নি। তিনি খুব কৌতুকী ছিলেন, তিনি সব কেবল পুরুষভক্তদের সঙ্গে তিনি কখনই স্ত্রীলোকের সঙ্গে কৌতুক করেন নি। না। সম্ভবত কেবল একবার তিনি তাঁর পত্নী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে কৌতুক করেছিলেন যখন শচীমাতা কিছু একটা খুঁজছিলেন, তখন তিনি খেলাচ্ছলে সামান্য কৌতুক করেছিলেন "হয়তো তোমার বউমা এটা নিয়েছে" তাঁর সম্পূর্ণ জীবনে আমরা কেবল এই একটি মাত্র কৌতুকের কথাই খুঁজে পাই। অন্যথায় তিনি অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। তিনি যখন সন্ন্যাসী ছিলেন কোন স্ত্রীলোক প্রণাম করার জন্য তাঁর কাছে আসতে পারতেন না। তাঁরা তাঁকে দূর থেকে প্রণাম করতেন কিন্তু তিনি বলেছেন, রম্যা কাচিদ্‌ উপাসনা ব্রজবধুবর্গেন যা কল্পিতা তিনি বলেছেন ব্রজবধূগণের দেখানো পন্থার চেয়ে আর উন্নত কোন আরাধনা হতে পারে না। আর ব্রজবধূদের পন্থা কি ছিল? তাঁরা শ্রীকৃষ্ণকে যে কোন ঝুঁকি নিয়েই ভালবাসতে চেয়েছিলেন। তাই এটা অনৈতিক নয়। এই কথাটা আমাদেরকে বুঝতে হবে।