BN/Prabhupada 0936 - শুধু প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া; 'ভবিষ্যতে'। কিন্তু এখনই আপনি কি দিচ্ছেন, মহাশয়
730425 - Lecture SB 01.08.33 - Los Angeles
বর্তমান সময়ে আমরা রোগগ্রস্ত অবস্থায় আছি। এই বদমাশগুলো জানে না যে রোগগ্রস্ত অবস্থা কি আর সুস্বাস্থ্য কি। তারা কোন কিছুই জানে না, তবুও তারা বড় বড় পণ্ডিত আর দার্শনিকরূপে পরিগণিত হচ্ছে... তারা অনুসন্ধান করে না যেঃ "আমি মরতে চাই না। তাহলে কেন আমার ওপর মৃত্যু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে? এই ধরণের কোন জিজ্ঞাসা নেই। না আছে এর কোন সমাধান। অথচ তবুও তারা বিজ্ঞানী। কি ধরণের বিজ্ঞানী? যদি তুমি...
বিজ্ঞান মানে তুমি জ্ঞানে উন্নতি সাধন করবে। যাতে করে তোমার জীবনের দুর্দশাজনক পরিস্থিতি হ্রাস পায় বা কমে আসে। এটি হচ্ছে বিজ্ঞান। অন্যথায় এটি কিসের বিজ্ঞান? তারা শুধু আশা দেখাচ্ছে; "ভবিষ্যতে।" "কিন্তু এই মুহূর্তে আপনারা কি দিচ্ছেন, মহাশয়? "এই মুহূর্তে তুমি অসুখে ভুগছ- যেমন ভুগছ, তেমন ভুগে যাও। ভবিষ্যতে আমরা কিছু রাসায়নিক পদার্থ খুঁজে পাব।" না। প্রকৃতপক্ষে আত্যন্তিক দুঃখ নিবৃত্তি। আত্যন্তিক, চূড়ান্ত। আত্যন্তিক মানে চূড়ান্ত। দুঃখ মানে ভোগান্তি। এটিই মানব জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। তারা জানে না আত্যন্তিক দুঃখ কি। দুঃখ মানে ভোগান্তি। ভগবদ্গীতায় আত্যন্তিক দুঃখের উল্লেখ রয়েছে। "এখানে আত্যন্তিক দুঃখ আছে মহাশয়।" এগুলো কি? জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি (ভগবদ্গীতা ১৩.৯)। জন্ম,মৃত্যু,বার্ধক্য আর রোগ।
তো আপনারা এই সমস্ত দুঃখ বা ক্লেশ দূর করার বা নির্মূল করার জন্য কি করছেন? কিন্তু এই জড় জগতে এমন কিছু নেই। আত্যন্তিক দুঃখ নিবৃত্তি। ভগবদ্গীতায় এই সমস্ত দুঃখ দুর্দশা থেকে চূড়ান্ত ভাবে মুক্তি লাভের উপায় বর্ণনা করা হয়েছে। এটি কি?
- মাম্ উপেত্য কৌন্তেয়
- দুঃখালয়ম্ অশাশ্বতম্
- নাপ্নুবন্তি মহাত্মানঃ
- সংসিদ্ধিং পরমাং গতাঃ
সুতরাং তোমাদের এই সবগুলো পড়া উচিত। আত্যন্তিক দুঃখ নিবৃত্তি। সমস্ত রকমের দুঃখ দুর্দশা থেকে চূড়ান্ত ভাবে মুক্তি লাভ। সেটি কি? মাম্ উপেত্য। "যিনি আমার কাছে ফিরে আসেন অথবা তাঁর নিত্য আলয়ে ফিরে আসেন।" তাই ভগবান কি এবং কেউ কি ভগবানের কাছে ফিরে যেতে পারে কিনা, তাঁর নিত্য ধামে, এই বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। এটি একটি বাস্তব সম্মত দিক, তাই নয় কি। কোন জ্ঞান নেই।ঠিক পশুর মতো। এই যা। জ্ঞানহীন। তারা প্রার্থনা করেঃ "হে ভগবান, আমাদের প্রতিদিনের রুজি-রোজগার দাও।" তাহলে তাকে এখন জিজ্ঞাসা করঃ "ভগবান কে?" সে কি ব্যাখ্যা করতে পারবে? না। তাহলে আমরা কার কাছে চাচ্ছি? বাতাসের কাছে? যদি আমি কিছু চাই, আমি কিছু আবেদন করি, তাহলে নিশ্চয়ই সেখানে একজন ব্যক্তি আছেন। তাই আমি জানি না যে এই ব্যক্তিটি কে, কার কাছে প্রার্থনা জানাতে হবে। শুধু... তারা বলে যে, তিনি আকাশে আছেন। আকাশে অনেক পাখিও আছে, (হাস্য) কিন্তু সেগুলো ভগবান নয়। তোমরা দেখেছ? তাদের এ বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই। অপূর্ণ জ্ঞান। আর তারা বড় বড় বিজ্ঞানী, দার্শনিক, বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, লেখক রূপে পার পেয়ে যাচ্ছে। সব আবর্জনা, সব জঞ্জাল। এক মাত্র গ্রন্থ হচ্ছে শ্রীমদ্ভাগবতম, ভগবদ্গীতা। বাকি সব জঞ্জাল। ভগবদ্গীতায় বলা হয়েছেঃ
- তদ্বাগ্বিসর্গো জনতাঘবিপ্লবো
- যস্মিন্ প্রতিশ্লোকমবদ্ধত্যপি।
- নামান্যনন্তস্য যশঃ অঙ্কিতানি যৎ
- শৃন্বন্তি গায়ন্তি গৃণন্তি সাধবঃ
অন্যদিকেঃ ণ যদ্বচশ্চিত্রপদং হরের্যশো জগৎ পবিত্রং প্রগৃণীত কর্হিচিৎ তদ্বায়সং তীর্থম... (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৫.১০)। তদ্বায়সং তীর্থম। যে সাহিত্য ভগবদ্ জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়, তদ্বায়সং তীর্থম, সেটি এমন একটি জায়গা যেখানে শুধু কাকেরা একত্রিত হয়ে আনন্দ করে। কাকেরা কোথায় আনন্দ পায়? নোংরা, আবর্জনাময় স্থানে। আর শুভ্র বর্ণ রাজহংরা , তাঁরা সুন্দর,নির্মল সরোবরে, যেখানে সুন্দর বাগান রয়েছে, পাখি রয়েছে সেখানে আনন্দ পায়।