BN/Prabhupada 1047 - সে মিথ্যা কিছু কর্তব্য নিয়েছে আর খেটে চলছে, তাই সে একটা গাধা ছাড়া আর কিছুই না
750712 - Lecture SB 06.01.26-27 - Philadelphia
সে কিছু মিথ্যা বা মনগড়া দায়িত্ব বানিয়ে নিয়েছে আর এর জন্য কঠোর পরিশ্রেম করে যাচ্ছে, তাই সে একটি গাধা সুতরাং এই মনুষ্য জীবনেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু তুমি যদি না জান যে "পরবর্তী জীবনে আমি কি ধরণের দেহ পেতে যাচ্ছি," যদি তুমি বিশ্বাস না কর... তুমি বিশ্বাস কর আর না কর, সেটি কোন ব্যাপার নয়, প্রকৃতির আইন কাজ করবেই। তুমি যদি বল, "আমি পরজন্মে বিশ্বাস করি না," তুমি এরকম বলতে পার, কিন্তু প্রকৃতি তার আইন অনুযায়ী ক্রিয়া করবেই। কর্মণা দৈবনেত্রেণ (শ্রীমদ্ভাগবত ৩.৩১.১)। তুমি যেমন কর্ম করছ, সেই অনুযায়ী তোমার পরবর্তী দেহ তৈরি করছ। সুতরাং মৃত্যুর পর - মৃত্যু মানে যখন এই দেহটি শেষ হয়ে যাবে - তুমি তৎক্ষণাৎ আরেকটি দেহ পাবে, কারণ তুমি ইতিমধ্যেই সেই কর্মক্ষেত্রটি তৈরি করেছ, কেমন ধরণের দেহ তুমি পাবে
তো অজামিল, সে সুন্দরভাবে তার শিশু পুত্রের সেবাযত্নে নিয়োজিত ছিল, তার সম্পূর্ণ মনোযোগ শিশুটির উপর নিবদ্ধ ছিল। (কেউ মন্তব্য করছে) (একপাশেঃ) বিরক্ত করো না। তাই তাকে মূঢ় বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, ভোজয়ন পায়য়ন মূঢ়ঃ। আমরা ভুলে গেছি যে সামনে এমন একটি দিন আসছে। যাকে বলে মৃত্যু। আমরা এটি ভুলে গেছি। এটিই আমাদের ভুল। তো এই মানুষটিও ভুলে গিয়েছিল, সে একজন স্নেহময় পিতা কিংবা প্রেমময় পতি হিসেবে খুব ব্যস্ত ছিল। অথবা অন্যকিছু। আমার অনেক সম্পর্ক রয়েছে। স্নেহময় বন্ধু কিংবা হিংসাপূর্ণ শত্রু হিসেবে আমাদের অনেক সম্পর্ক রয়েছে। এই পৃথিবীতে আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু সম্পর্ক রয়েছে, হতে পারে এটা প্রীতিপূর্ণ অথবা হিংসাপূর্ণ, এটি ব্যাপার নয়। তো এভাবেই আমরা এটি ভুলে গিয়ে জীবনযাপন করছি যে মৃত্যু সামনেই রয়েছে। কাজেই আমরা মূঢ়।
মূঢ় মানে বদমাশ, গাধা যে জানে না যে প্রকৃত স্বার্থ কি? ঠিক যেমন গাধা, ...। মূঢ় মানে গাধা। গাধা তার নিজের স্বার্থ বোঝে না। আমরা দেখেছি যে গাধা ধোপার তিন টন কাপড়ের বোঝা বহন করে। সে চলতে পারে না; তবুও তাকে চলতে হয়। এবং সে জানে না যে "আমি বহু টন কাপড় আমার পিঠে বহন করছি, আর এটি বহন করে আমার কি লাভ আছে? একটি কাপড়ও আমার নয়।" তো গাধার এই ধরণের কোন বুদ্ধি নেই। গাধা মানেই যার এইটুকুন বুদ্ধিও নেই। সে ভাবছে , "এটি আমার দায়িত্ব। আমার পিঠে প্রচুর পরিমাণ কাপড় বহন করে নেয়াই হচ্ছে আমার দায়িত্ব।" কেন এটি দায়িত্ব? "কারণ ধোপা আমাকে ঘাস দেয়।" তার কোন বুদ্ধিই নেই যে "ঘাস আমি যেকোনো জায়গায়ই পেতে পারি। আমাকে কেন এই দায়িত্ব নিতে হবে?" প্রত্যেকেই এই দায়িত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেউ রাজনীতিবিদ, কেউ কেউ গৃহস্থ, কেউ আবার অন্যকিছু। কিন্তু যেহেতু সে কিছু মিথ্যা বা মনগড়া দায়িত্ব তৈরি করে নিয়েছে, আর এর পিছনে খেটে যাচ্ছে, তাই সে একটা গাধা। সে তার আসল উদ্দেশ্যের কথা ভুলে গেছে। আসল কাজ হচ্ছে যে মৃত্যু আসবেই। এটি আমাকে ছেড়ে দিবে না। প্রত্যেকেই বলে, "মৃত্যু সুনিশ্চিত।" এখন মৃত্যু আসার পূর্বেই আমাকে এমনভাবে কাজ করতে হবে যে, আমি যেন বৈকুণ্ঠ কিংবা বৃন্দাবনে স্থান পাই। এবং আমি যেন শ্রীকৃষ্ণের সাথে নিত্যকাল বসবাস করার মতো জীবন লাভ করতে পারি। এটিই হচ্ছে আমাদের আসল দায়িত্ব। কিন্তু আমরা তা জানি না। ন তে বিদুঃ স্বার্থগতিং হি বিষ্ণুং (শ্রীমদ্ভাগবত ৭.৫.৩১)।