BN/Prabhupada 0309 - আধ্যাত্মিক গুরু হচ্ছেন নিত্য
Lecture -- Seattle, October 2, 1968
মধুদ্বিষঃ পারমার্থিক গুরুর সাহায্য ছাড়া কোন খ্রীষ্টানের জন্য কোনো উপায় আছে কি, যীশু খ্রীষ্টের বাণীর প্রতি বিশ্বাস এবং তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করার চেষ্টা করে আধ্যাত্মিক স্তরে পৌঁছানোর?
প্রভুপাদঃ আমি মনে করি না।
তমাল কৃষ্ণঃ এই যুগে একজন আধ্যাত্মিক গুরু ছাড়া খ্রীষ্টানের পক্ষে , কিন্তু কেবল বাইবেল পড়ে এবং যিশুর বাণী অনুসরণ করে আধ্যাত্মিক স্তরে পৌঁছানো
প্রভুপাদঃ যখন আপনি বাইবেল পড়েন তখন আপনি আধ্যাত্মিক গুরু কে অনুসরণ করেন। তাহলে কীভাবে আপনি কীভাবে বলতে পারছেন তাকে ছাড়া? যখন আপনি বাইবেল পড়ছেন, এর মানে হল যে আপনি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নির্দেশ অনুসরণ করছেন, এবং আপনি আধ্যাত্মিক গুরু কে অনুসরণ করছেন। তাহলে একটি আধ্যাত্মিক গুরু ছাড়া কীভাবে হতে পারে?
মধুদ্বিষঃ আমি একটি সৎ আধ্যাত্মিক গুরুর কথা বলছিলাম।
প্রভুপাদঃ আধ্যাত্মিক গুরু কোনো প্রশ্ন নয়। আধ্যাত্মিক গুরু শাশ্বত এবং নিত্য। তাই আপনি আধ্যাত্মিক গুরু ছাড়া অন্য প্রশ্ন করুন। আধ্যাত্মিক গুরু সাহায্য ছাড়া জীবনের কোনো স্তরে পৌঁছান সম্ভব না। আপনি এই আধ্যাত্মিক গুরু বা অন্য আধ্যাত্মিক গুরু গ্রহণ করতে পারেন। সেটা আলাদা কথা। কিন্তু গুরু আপনাকে গ্রহণ করতেই হবে। আপনি বলেছিলেন, "বাইবেল পড়া" যখন আপনি বাইবেল পড়েন, তার মানে এই যে আপনি আধ্যাত্মিক গুরু কে অনুসরণ করছেন, কারণ যীশু খ্রীষ্টের প্রতিটী বাণী পাদ্রী এবং যাজক দ্বারা পরিবেশিত। সুতরাং কোন না কোনো ভাবে আপনাকে একটি আধ্যাত্মিক গুরুকে অনুসরণ করতে হবে। আধ্যাত্মিক গুরু ছাড়া কোনো কিছু সম্ভব না। এটা কি বুঝতে পেরেছেন?
মধুদ্বিষঃ আমি বলতে চাইছি যে আপনার সাহায্য এবং উপস্তিতি ছাড়া আমরা ভগবত গীতার শিক্ষা গ্রহন করতে পারি না।
প্রভুপাদঃ একইভাবে, গির্জার একজন যাজকের সহায়তায় আপনাকে বাইবেল বুঝতে হবে।
মধুদ্বিষঃ হ্যাঁ। কিন্তু এই ব্যাখ্যা কী বহু আগে পরম্পরা সূত্রে বা বিশপ থেকে পাওয়া? কারণ বাইবেলের ব্যাখ্যায় কিছু অসঙ্গতি বলে মনে হচ্ছে। খ্রিস্টধর্মের বিভিন্ন অংশগুলি বাইবেল বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে।
প্রভুপাদঃ অবশ্যই, সেখানে বাইবেলের মধ্যে কোন সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে না। কারণ সেখানে বাইবেলের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। যদি আপনি কিছু ব্যাখ্যা করেন ... তা হত কেবল, "একটি সোজা কথা কে ঘুড়িয়ে বলা"। সুতরাং যদি আপনি অন্য কিছু দাবি করেন, সেটা অন্য ব্যাপার। তিনি আধ্যাত্মিক শিক্ষক নয়। যেমন একটি ঘড়ি। প্রত্যেকে এটা কে ঘড়ি বলে। এবং যদি আমি বলি এটা চশমা, তাহলে আমি আধ্যাত্মিক গুরু হয়ে কি লাভ? আমি তো বিপথে চালিত করছি। এটা ঘড়ি, এটা আমাকে এটাই বলতে হবে। (হাসি) সুতরাং যদি কেউ ভুল ব্যাখ্যা করে, তবে তিনি সৎ গুরু নয়। তিনি কখনই আধ্যাত্মিক গুরু নন, তিনি কী বুদ্ধিমান? যদি আমি আপনাকে শেখাতে চাই যে ঘড়ি কীভাবে দেখতে হয়, আমাকে বলতে হবে যে এটাকে ঘড়ি বলা হয়, এটা কে হাত বলা হয়, এটা কে বলা হয় সময়ের চিহ্ন ইত্যাদি ইত্যাদি তাহলে সেটা ঠিক আছে। এবং আমি যদি বলি যে " সকলে বলছে এটি ঘড়ি। আমি বলছি এটা চশমা," তাহলে আমি কী প্রকার আধ্যাত্মিক গুরু? তৎক্ষণাৎ তাঁকে পরিত্যাগ করো। এই জ্ঞান আপনার থাকা উচিত যে কে আসল আধ্যাত্মিক গুরু এবং কে নকল আধ্যাত্মিক গুরু। অন্যথায় আপনি প্রতারিত হবেন। এবং এটাই এখন হচ্ছে। প্রত্যেকেই নিজের মত করে সমস্ত কিছু ব্যাখ্যা করছেন। ভগবদ্গীতার হাজার হাজার সংস্করণ আছে, এবং তারা সেটি তাদের নিজের মত করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন, সমস্তটাই বোকামো। সেই সমস্ত গুলি ছুঁড়ে ফেলে দিন। আর কেবল ভগবদ্গীতা যথাযথ পড়ুন। তখন আপনি সমস্ত কিছু বুঝতে পারবেন। সেখানে ব্যাখ্যার কোনো প্রশ্ন হ্য় না। এর একজন মালিক আছেন। আর যেটার ব্যাখ্যা আপনি করবেন, তার মানে তার কোনো মালিক নেই। যেমন আইনের বই। আপনি যদি আদালতে বিচারক কে বলেন যে আমার প্রিয় প্রভু, আমি এই লেখাটি এইভাবে ব্যাখ্যা করছি," এটা কি গ্রহণযোগ্য হবে? বিচারক তখন বলবেন যে," আপনি ব্যাখ্যা করার কে? আপনার কোনো আধিকার নেই। তারপর যদি সকলে এসে বলে আইনের বইয়ের লেখক কি? আমি এটি নিজের মত করে ব্যাখ্যা করতে চাই। আর ব্যাখ্যা কখন করা যায়? যখন বিষয় টি বোঝা না যায়। আর যদি আমি বলি, হ্যাঁ এটা ঘড়ি, আর সেটা যদি সবাই বুঝতে পারে যে এইটা ঘড়ি হ্যা, তাহলে আর এটা ব্যাখ্যা করার কোনো প্রয়োজনই থাকে না যে এটা চশমা। লেখাটি তে কি বলা হয়েছে তা যদি কেউ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে যেমন বাইবেলে ভগবান বলেছেন, সৃষ্টি হচ্ছে, এবং সৃষ্টি হয়েছিল। এখানে ব্যাখ্যার কী আছে? হ্যাঁ, ভগবান সৃষ্টি করেছেন। আপনি সৃষ্টি করেন নি। এখানে ব্যাখ্যার প্রয়োজন কোথায়? সুতরাং অযথা ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই, বিশেষত যেটা সত্য নয়। এবং যিনি অপ্রয়োজনীয় কিছু ব্যাখ্যা করেন, তাঁকে অবিলম্বে প্রত্যাখ্যান করা উচিত। কোনো কিছু বিচার না করে , তৎক্ষণাৎ। ভগবান বলছেন, যেহেতু সৃষ্টি হচ্ছে। সুতরাং সৃষ্টি হয়েছিল। সাধারণ ব্যাপার। এখানে ব্যাখ্যার কি আছে? এখানে ব্যাখ্যার কি বা হতে পারে? বোঝান যে এই ব্যাখ্যাটি হতে পারে। আমি ঠিক বলেছি কী? বাইবেলের শুরু তে এটাই বলা আছে কি? ভগবান বলছেন, যেহেতু সৃষ্টি হচ্ছে। সুতরাং সৃষ্টি হয়েছিল। তাহলে আপনি কি ব্যাখ্যা করতে চা্ন? বলুন আমাকে কি ব্যাখ্যা করতে চান? এখানে আর কোনো ব্যাখ্যা সম্ভব কি? আপনারা কেউ একজন পারলে বোঝান। তাহলে আর এটা ব্যাখ্যা করার কোনো প্রয়োজন কী? এটি বুঝতে পেরেছেন। যাই হোক, কিন্তু ভগবান সমস্ত কিছুর সৃষ্টি করেছেন এটি সত্য এবং সত্য থাকবে। এটা আপনি বদলাতে পারবেন না। এখন কিভাবে সমস্ত কিছু সৃষ্টি হয়েছে তা শ্রীমদ্ভাগবতমে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সবার প্রথমে আকাশ, তারপর শব্দ, এবং তারপর এটা ,ওটা। এটি হল সৃষ্টি লীলা যেটি আরেকটি বিষয়। কিন্তু প্রাথমিক সত্য হল ভগবান সৃষ্টি করেছেন। এটি যে কোনো পরিস্থিতিতে সত্য থাকবে। কোনো বোকা বৈজ্ঞানিক যেন না বলেন যে সেখানে একটি গ্রহ খন্ড ছিল সেটি বিভক্ত হয়েছে। এবং সেখানে এই গ্রহ গুলি ছিল। সম্ভবত এইগুলি সেইগুলি," সমস্ত টা বোকামো। তারা "সম্ভবত", " হয়ত" ইত্যাদি বলে ব্যাখ্যা করে। "সম্ভবত", "হয়তো"- এগুলি কখনো বিজ্ঞান নয়। সম্ভবত কেন? স্পষ্ট কথা হল, "ভগবান সৃষ্টি করেছেন।" ব্যাস হয়ে গেলো।