BN/Prabhupada 0308 - আত্মার কাজ হচ্ছে কৃষ্ণ ভাবনামৃত

Revision as of 08:02, 13 December 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture -- Seattle, October 2, 1968

যুবকঃ কিভাবে মনকে প্রশিক্ষিত করা যায়?

প্রভুপাদঃ এটি হচ্ছে প্রশিক্ষন। আপনি কেবল কৃষ্ণ ভাবনামৃতে নিজেকে ব্যস্থ রাখুন। এটা বাস্তবিক। যেমন জপের মাধ্যমে একটি দশ বছরের শিশু ও এর সাথে যুক্ত। তার মন সবসময় হরে কৃষ্ণ জপের উপর নিয়োজিত। তার অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলি, পা বা হাত, তারা কাজ করে, নাচ করে। তাই এই ভাবে আমাদের মনকে সবসময় অনুশীলন করতে হবে, আমাদের ইন্দ্রিয়গুলিকে সবসময় কৃষ্ণ চেতনায় নিযুক্ত করতে হবে। যেটি আপনাকে পূর্ণতা দেবে। এবং যেটা প্রত্যেকের দ্বারা সম্ভব। কৃত্রিমভাবে ধ্যান করার জন্য আপনার একটি জায়গায় বসার প্রয়োজন নেই। আপনি যত বেশি হরে কৃষ্ণ জপ করবেন, তত শীঘ্রই আপনার মন সংযত হবে। তখন আপনি কৃষ্ণকে স্মরণ করতে পারবেন, কৃষ্ণ শিক্ষা, কৃষ্ণ কাজ, সবকিছু সম্বন্ধে। এর জন্য অনুশীলন প্রয়োজন।

যুবক (2)ঃ আপনি সূর্যের একটি রশ্মি, কারণ ...

প্রভুপাদ: হ্যাঁ।

যুবক (2)ঃ আপনি নিজের সম্বন্ধে চিন্তা করেন?

প্রভুপাদ: কেন করবো না? আমি একজন ব্যক্তি।

যুবক (2)ঃ এবং আপনি যখন চিন্তা করেন, আপনি কি কৃষ্ণের চিন্তা করেন?

প্রভুপাদঃ যদিও আমি ক্ষুদ্র, কিন্তু আমি একজন ব্যক্তি। আমার চিন্তা, অনুভূতি, ইচ্ছা সব শক্তি আছে। আমরা যেটা করি। আমরা সকলেই ব্যক্তি। আপনি এখানে আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছায় এসেছেন। কেউ আপনাকে জোর করেনি। যদি আপনি চান, আপনি চলেও যেতে পারেন। কেউ কেউ এখানে আসেন, কেউ কেউ আসে্ন না, কেউ কেউ রোজ আসেন। কেন? যদিও আপনি ক্ষুদ্র, তবুও আপনার ব্যক্তিত্ব আছে। সুতরাং এই অবস্থায়, আপনি তাই মুক্ত, এবং স্বাধীন । এবং যখন আপনি অনিয়ন্ত্রিত থাকেন , আপনি জানেন যে আপনি বিশুদ্ধ আত্মা, কতটা স্বাধীনতা পেয়েছেন। এটা কোন ব্যাপার না আপনি ক্ষুদ্র, কিন্তু আপনি একটি পরমাত্মার অংশ। আপনি দেখতে পাবেন না যে একটি ক্ষুদ্র আত্মা যা কোন চিকিৎসক, কোন চিকিৎসা বিজ্ঞান এখনও আবিষ্কার করেছে, কোথায় আত্মা আছে, কিন্তু আত্মা আছে। এটি একটি সত্য। যেই মাত্র আত্মা এই শরীর থেকে চলে যায়, এটা অর্থহীন হয়। খুঁজে বের করুন যে এই গুরুত্বপূর্ণ কণা টি কেমন? এটা সম্ভব নয়, কারণ এটি এত সূক্ষ্ম যে তোমা্র, জড় চক্ষু অথবা অনুবিক্ষন যন্ত্র বা এ জগতের কোনো কিছু দ্বারা দেখা সম্ভব নয়। সেই জন্য তারা বলছেন সেখানে আত্মা নেই। কিন্তু তারা বোঝাতে পারছে না কি চলে গিয়েছে। এটা ছোট হলেও এটা চিন্ময় আত্মা এবং শক্তিশালী এটা যতদিন শরীরের মধ্যে আছে, ততদিন শরীর কে সতেজ ও সুন্দর রাখে। এবং যেই মাত্র চলে যায়, শরীরটি তৎক্ষণাৎ পচে যায়। কেবল দেখুন। এটি কেবল মাদক ইনজেকশনের মত। এর এক ফোঁটা একটি ছোটো শস্য দানা কেও সতেজ রাখে। এটা দেখতে অল্প, এটা খুব শক্তিশালী। আপনি জা্নেন না যে এই আত্মার শক্তি কতটা। আপনাকে শিখতে হবে। তবে আত্মউপলব্ধি হবে। একটি নীরব জায়গায় বসে ধ্যান প্রক্রিয়াটি, জীবনের শারীরীক ধারনা কে উচ্চ স্তরে পৌঁছে দেয়। কেবল একটি চিন্তা ও, ধ্যান করুন যে, "আমি কি এই শরীর ?" তারপর বিশ্লেষণ করুন। আপনি দেখবেন যে, "না। আমি শরীর না। আমি এই শরীর থেকে ভিন্ন।" তারপর আরও ধ্যান: "যদি আমি এই শরীর না হই, তাহলে শারীরিক কর্ম, কিভাবে এটি করা হচ্ছে? এটা হচ্ছে কেবল সেই ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতির জন্য। কীভাবে শরীর বৃদ্ধি পায়? কারণ কেউ উপস্থিত থাকে। ঠিক একটি বালকের মতো, বালক টি দেহের একটি ছোট অংশ পেয়েছে। এখন, এই বালকটি চব্বিশ বছর বয়সে খুব তীব্র এবং দৃঢ় হয়ে গড়ে উঠবে। আবার এই শরীরটি চলে যাবে তখন আরেকটি শরীর আসবে। এটা কিভাবে সম্ভব হয়? এটি আত্মার ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতির কারণে হয়। কিন্তু যদি আত্মার কণা টি শরীর থেকে চলে যায় বা সরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে এই শরীরের আর বৃদ্ধি বা পরিবর্তন হবে না। এই গুলি ধ্যানের বিষয় বস্তু। কিন্তু যখন আপনি বোঝেন যে "আমি এই দেহ নই, আমি চিন্ময় আত্মা," তারপর পরবর্তী স্তর হবে "আত্মার ক্রিয়া কি?" আত্মার ক্রিয়া কৃষ্ণ ভাবনামৃত, কৃষ্ণ ভাবনামৃত কর্ম করা। অতএব বর্তমান যুগে আত্মার কার্যকারিতা আমাদের সরাসরি গ্রহণ করা উচিত; তারপর অন্যান্য বস্তু গুলি আপনা থেকেই আসবে। বর্তমান মুহুর্তে এটি সম্ভব নয় যে, আপনি একটি নির্জন স্থানে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সেখানে বসে ধ্যান করবেন ... এই যুগে এটি সম্ভব নয়। এটি অসম্ভব। তাও আপনি যদি কৃত্রিমভাবে চেষ্টা করেন, তবে এটি ব্যর্থ হবে। সুতরাং আপনাকে এই প্রক্রিয়াটি গ্রহণ করতে হবে,

হরের্নাম হরের্নাম হরের্নাম এব কেবলম
কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা
(চৈ চ আদি ১৭.২১)

এই কলি যুগে, হরে কৃষ্ণ জপের চেয়ে আত্মোপলব্ধির জন্য অন্য কোন বিকল্প নেই এটা বাস্তব, ও সত্য।