BN/Prabhupada 0034 - সকলেই কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে জ্ঞানলাভ করেন
Lecture on BG 7.1 -- Durban, October 9, 1975
সপ্তম অধ্যায় , " সম্পূর্ণ বিদ্যা। " দুই প্রকার জিনিস হয় , পরম এবং আপেক্ষিক। এই জগৎ টি হচ্ছে আপেক্ষিক। এখানে আমরা একের সাহায্য ছাড়া আরেকটা বুঝতে পারিনা। যখনি আমরা বলি " এই হচ্ছে পুত্র , " তবে পিতা নিশ্চই থাকবে। যখনি আমরা বলি " এই হলেন স্বামী, " তবে স্ত্রী নিশ্চই থাকবে। যখনি আমরা বলি " এই হলো দাস ," তবে তার প্রভু নিশ্চই থাকবেন। যখনি আমরা বলি " এই হলো আলো , " তবে অন্ধকার ও নিশ্চই থাকবে। ইহাকেই বলা হয় আপেক্ষিক জগৎ। একটি বুঝতে হয় অন্য আরেক আপেক্ষিক অর্থের দ্বারা। কিন্তু আরো এক ধরনের জগৎ আছে, যাহাকে বলা হয় সম্পুর্ন বা পরম জগৎ । সেখানে দাস এবং প্রভু, সমান। তাদের কোনো পার্থ্যক্য নেই। যদিও একজন প্রভু এবং অপরজন দাস, কিন্তু স্থান এক। কাজেই ভগবদ গীতা এর সপ্তম অধ্যায় পরম জগৎ, পরম জ্ঞান সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে। কিভাবে সেই জ্ঞান সাধন করা যায়, সেটাই পরম, সর্বোচ্চ ব্যক্তি, কৃষ্ণ কর্তৃক বলা হয়েছে। কৃষ্ণ হচ্ছেন পরম সর্বোচ্চ ব্যক্তি।
- īśvaraḥ paramaḥ kṛṣṇaḥ
- sac-cid-ānanda-vigrahaḥ
- anādir ādir govindaḥ
- sarva-kāraṇa-kāraṇam
- (Bs. 5.1)
ভগবান ব্রহ্মা তাঁর গ্রন্থ ব্রহ্ম-সংহিতা, যা কিনা অনুমোদিত গ্রন্থ কৃষ্ণ কে এভাবেই সংজ্ঞায়িত করেছেন। এই গ্রন্থখানা দক্ষিণ ভারত থেকে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু কর্তৃক সংগ্রহীত হয়েছিল। যখন তিনি দক্ষিণ ভারত যাত্রা শেষে ফিরে এসেছিলেন তখন তিনি এটা তাঁর ভক্তদেরকে উপহার দিয়েছিলেন। অতএব আমরা এই ব্রহ্ম-সংহিতা গ্রন্থখানা খুবই প্রামাণিক হিসেবে গ্রহন করি। এটা হল আমাদের জ্ঞানের প্রক্রিয়া। আমরা কতৃপক্ষের নিকট হতে জ্ঞান গ্রহন করি। সকলেই কতৃপক্ষের নিকট হতে জ্ঞান গ্রহন করে, কিন্তু সাধারন কতৃপক্ষ, এবং আমাদের গ্রহন প্রক্রিয়ার কতৃপক্ষ কিছুটা ভিন্ন। আমাদের গ্রহন প্রক্রিয়ার কতৃপক্ষ মানে হচ্ছে তিনি তাঁর পূর্বের কতৃপক্ষকেও গ্রহন করেন। একজন নিজে নিজেই কতৃপক্ষ হতে পারে না। এটা সম্ভব নয়। তারপরে এটা নির্ভুল নয়। আমি এই উদাহরণটি অনেক বার দিয়েছি, যে একটি বাচ্চা তাঁর পিতার কাছ থেকে শিখে। বাচ্চাটি তাঁর বাবাকে জিজ্ঞেস করল, বাবা এটা কি ধরনের যন্ত্র? এবং বাবা বলল, "আমার প্রিয় সন্তান, এটাকে বলা হয় মাইক্রোফোন"। কাজেই বাচ্চাটি তাঁর পিতার কাছ থেকে জ্ঞান গ্রহন করেছে, " এটা হচ্ছে মাইক্রোফোন"। কাজেই যখন বাচ্চাটি অন্য কাউকে বলবে, "এটা হচ্ছে মাইক্রোফোন", এটা সঠিক। যদিও সে শিশু, টা সত্ত্বেও, কারন সে কতৃপক্ষের নিকট হতে জ্ঞান গ্রহন করেছে, তার অভিব্যক্তি সঠিক। একইভাবে, যদি আমরা কতৃপক্ষের নিকট হতে জ্ঞান গ্রহন করি, তারপরে আমি শিশু হতে পারি, কিন্তু আমার তার অভিব্যক্তি সঠিক। এটা হচ্ছে আমাদের জ্ঞানের প্রক্রিয়া। আমরা জ্ঞান তৈরি করি না। সেটা হচ্ছে প্রক্রিয়া যা ভগবদগীতার চতুর্থ অধ্যায়ে দেওয়া আছে, evaṁ paramparā-prāptam imaṁ rājarṣayo viduḥ (BG 4.2). এটা পরমপরা পদ্ধতি...
- imaṁ vivasvate yogaṁ
- proktavān aham avyayam
- vivasvān manave prāha
- manur ikṣvākave 'bravīt
- (BG 4.1)
ইভম পরমপরা। কাজেই যখন পরম কারো কাছ থেকে আমরা শুনি তখন পরম জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। এই আপেক্ষিক পৃথিবীর কেউই আমাদেরকে পরম জ্ঞান সম্পর্কে অবহিত করতে পারে না। এটা সম্ভব নয়। কাজেই এখানে আমরা পরম জগত সম্পর্কে বুঝছি। পরম জ্ঞান, মহত্তম ব্যাক্তি কাছ থেকে, পরম ব্যাক্তি। পরম ব্যাক্তির অর্থ হচ্ছে anādir ādir govindaḥ (Bs. 5.1) তিনি হচ্ছেন প্রকৃত ব্যাক্তি, কিন্তু তাঁর কোন প্রকৃত নেই, অতএব পরম। তিনি কারো দ্বারা বুঝার কারন হবেন না। ওটাই ঈশ্বর। কাজেই এখানে এই অধ্যায়ে, অতএব, এটা বলা হয়েছে, śrī bhagavān uvāca, পরম ব্যাক্তি... ভগবান অর্থ হল পরম ব্যাক্তি যিনি অন্য কারোর উপর নির্ভরশীল নন।