BN/Prabhupada 0044 - সেবার অর্থ হচ্ছে আপনি গুরুর আদেশ পালন করবেন

Revision as of 07:11, 4 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 4.1 -- Montreal, August 24, 1968

তাই তার মানে হচ্ছে তিনি শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশ অনুসরণ করছেন। সেটিই সবকিছু। "আমি কৃষ্ণের শত্রূ হতে যাচ্ছি।" এ কথা ভেবে তিনি কিছু মনে করেন না। মূলনীতি হচ্ছে যে তিনি অনুসরণ করছেন। যদি শ্রীকৃষ্ণ বলেন যে "তুমি আমার শত্রূ হও," তাহলে আমি তার শত্রূ হতে পারি। সেটিই হচ্ছে ভক্তিযোগ। হ্যাঁ। আমি শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করতে চাই। ঠিক যেমন একজন গুরু তাঁর শিষ্যকে আদেশ করছেন, "তুমি আমাকে এখানে আঘাত কর।" সে গুরুদেবের কথামতো তাঁকে এভাবে আঘাত করল। সুতরাং এই হচ্ছে সেবা। অন্যরা হয়তো দেখছে, "ওহ, সে আঘাত করল আর সে কি না মনে করছে, 'আমি সেবা করছি'? এটা কী ধরণের সেবা? সে তো আঘাত করছে।" কিন্তু গুরু চাইছেন যে "তুমি আমাকে আঘাত কর।" সেটি হচ্ছে সেবা। সেবা মানে যে আপনি গুরুর নির্দেশ মান্য করবেন। আদেশটি কি তা কোন ব্যপার নয়। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনে একটি চমৎকার উদাহরণ রয়েছে। গোবিন্দ নামে তাঁর একজন সেবক ছিল। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু প্রসাড পাবার পর গোবিন্দ প্রসাদ পেতেন। একদিন চৈতন্য মহাপ্রভু প্রসাদ গ্রহণ করার পর, ঘরে ঢোকার দুয়ারে শুয়ে পড়লেন। কি বলে একে? দরজা, প্রবেশের দুয়ার। সুতরাং গোবিন্দ তাঁকে ডিঙিয়ে গেলেন। যখন মহাপ্রভু বিশ্রাম নিতেন, গোবিন্দ তাঁর চরণসেবা করতেন। গোবিন্দ চৈতন্য মহাপ্রভুকে ডিঙিয়ে গিয়ে তাঁর পাদসম্বাহন করছিলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ঘুমিয়ে ছিলেন, এবং আধা ঘন্টা পর, যখন তাঁর ঘুম ভাঙ্গল, তিনি দেখলেন, "গোবিন্দ, তুমি কি এখনও তোমার প্রসাদ গ্রহণ কর নি?" "না প্রভু." "কেন?" "আমি তো আপনাকে ডিঙিয়ে যেতে পারি না। আপনি তো এখানে শুয়ে আছেন।" "তাহলে তুমি এসেছো কিভাবে?" "আমি আপনাকে ডিঙিয়ে এসেছি." "তুমি প্রথমে কিভাবে ভেতরে এলে, তাহলে কেন আবার ডিঙিয়ে যাচ্ছো না?" "সেটা আমি আপনাকে সেবা করতে এসেছিলাম। আর এখন আমার নিজের প্রসাদ পাওয়ার জন্য আমি ওভাবে ডিঙিয়ে যেতে পারবো না।" সেটি আমার করা উচিৎ নয়। এটা তো আমার জন্য। আর সেবা করাটা ছিল আপনার জন্য। " সুতরাং শ্রীকৃষ্ণের প্রীতিবিধানের জন্য আপনি তার শত্রূ হতে পারেন, আপনি তার বনধু হতে পারেন, আপনি যে কোন কিছুই হতে পারেন। সেটিই হচ্ছে ভক্তিযোগ। কেন না আপনার উদ্দেশ্য হচ্ছে কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করা যায়। এবং যেই মুহূর্তে আপনার ইন্দ্রিয় তৃপ্তির কথা আসে, সঙ্গে সঙ্গে তা জাগতিক হয়ে যায়।

কৃষ্ণ-বহির্মুখ হইয়া ভোগ বাঞ্ছা করে।
নিকটস্থ মায়া তারে জাপটিয়া ধরে।।
(প্রেম-বিবর্ত)

যখনই আমরা শ্রীকৃষ্ণকে ভুলে যাই এবং আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় পরিতৃপ্তির জন্য কিছু করতে চাই, সেটাই মায়া। আর যখনই আমরা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির পন্থা পরিত্যাগ করি এবং শ্রীকৃষ্ণের জন্য সবকিছু করি, সেটিই হচ্ছে প্রকৃত মুক্তি।