BN/Prabhupada 0046 - আপনি পশু হবেন না - নিবারণ করুন

Revision as of 07:12, 4 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Morning Walk -- May 28, 1974, Rome

যোগেশ্বর: যাওয়ার আগে ভগবান আমাকে একটি প্রশ্ন তালিকা দিয়ে গেছে। আমি কি আপনাকে তার কিছু জিজ্ঞেস করতে পারি?

শ্রীল প্রভুপাদ: হ্যাঁ।

যোগেশ্বর: একটি সমস্যা যা ঘন ঘন ঘটছে বলে মনে হচ্ছে সেটি হলো সন্ত্রাসীদের আবির্ভাব, অর্থাৎ সেই সমস্ত মানুষগুলো যারা কিছু রাজনৈতিক কারণে প্ররোচিত, বেশিরভাগ রাজনৈতিক কারণেই।

শ্রীল প্রভুপাদ: হ্যাঁ। সম্পূর্ণ মৌলিক নীতিটি আমি ইতিমধ্যেই ব্যাখ্যা করেছি। কারণ তারা পশু, তাই ওরা কখনও কখনও হিংস্র প্রাণী হয়ে যায়। ব্যাস। পশু, ওরা বিভিন্ন ধরনের পশু মাত্র। বাঘ এবং সিংহ, ওরা হচ্ছে হিংস্র পশু। কিন্তু তোমরাও তো পশু সমাজেই বসবাস করছ। তাই একটা পশু সমাজে, কিছু, অন্য প্রাণী খুব হিংস্র হয়ে আসে, সেটি খুব একটা আশ্চর্যের নয়। শেষ পর্যন্ত তোমরা তো পশু সমাজেই বসবাস করছ। তাই তোমরা মানুষ হও, আদর্শ মানুষ। এটিই একমাত্র সমাধান। আমরা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছি যে এটি একটি পশু সমাজ। যদি কিছু হিংস্র প্রাণী বেরিয়ে আসে, তাতে আশ্চর্য হবার কি আছে? শেষ পর্যন্ত, এটা তো পশু সমাজই। বাঘ-ই আসুক আর হাতিই আসুক, তারা সবাই পশুই। কিন্তু তোমরা পশু হইওনা। এসব বন্ধ কর। সেটিই প্রয়োজন। মানুষকে বলা হয় যুক্তিবাদী/যৌক্তিক প্রাণী। তুমি যৌক্তিক স্তরে আসতে পারছ কি না সেটিই হচ্ছে প্রয়োজন। যদি তোমরাও আরেকটা পশু হয়েই থাকো, অন্য এক প্রকারের পশু, তাহলে তা কোন কাজে আসবে না। তোমাদের আসলেই প্রকৃত মানুষ হতে হবে। কিন্তু, দুর্লভম্ মানুষম্ জন্ম তদপি অধ্রূবং অর্থদম্। এইসমস্ত লোকেরা, তাদের জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই। মানুষের উদ্দেশ্য কি ..., তারা জানে না। তাই তাদের পশু প্রবৃত্তিটি কোনও না কোনভাবে মানিয়ে নেয়া হচ্ছে, এই ভাবে, সেই ভাবে, অথবা অন্য কোনও ভাবে। ঠিক যেমন ওরা নগ্ন নাচ দেখতে যাচ্ছে। এই হচ্ছে পশু প্রবণতা, সে তার স্ত্রীকে প্রতিদিন নগ্ন দেখছে, কিন্তু তবুও সে পয়সা দিয়ে নগ্ন নাচ দেখতে যাচ্ছে। কারণ ওদের কাছে এই পাশবিকতা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তাই নয় কি? তাই অন্য একটি নগ্ন মহিলাকে দেখতে যাওয়ার কি দরকার? তুমিতো প্রতি দিন, প্রতি রাতে তোমার স্ত্রীকে নগ্ন দেখছ। কেন তাহলে... কারণ ওদের আর কোন কাজ নেই। পশুরা। পুনঃ পুনশ্চর্বিত-চর্বনানাম্ (ভাগবত ৭.৫.৩০) সেটি হচ্ছে কুকুর যে জানে না আসল স্বাদ কি? সে কেবল একটাই হাড় চিবোতে থাকছে, এভাবে, সেভাবে, বিভিন্ন ভাবে। কারণ সে একটা পশু। ওর আর কোন কাজ নেই। তাই এই পুরো সমাজটাই পশু। বিশেষত পাশ্চাত্যবাসীরা, এবং তারা ঐ পশু প্রবৃত্তির ওপর ভিত্তি করে একটি সভ্যতা গড়ে তুলেছে, মানে হচ্ছে "আমি এই শরীর, এবং আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো উপযোগ হল ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করা।" এটি হচ্ছে পশুর চিন্তা "আমি এই শরীর।" দেহ মানে ইন্দ্রিয়গুলো "আর এই ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করাই হচ্ছে সর্বোচ্চ পরিপূর্ণতা। " এই হচ্ছে ওদের সভ্যতা। তাই তোমাদের প্রকৃত মানব সভ্যতার সূচনা করতে হবে। একটা পশুকে বিভিন্ন রূপে বা আকৃতিতে দেখে তোমাদের আশ্চর্য হওয়া উচিৎ নয়, যখন ওরা বিভিন্ন ভাবে আমাদের সামনে আসে। চরমে যে একটা পশুই। মৌলিক নীতি হলো পশুবাদ । কারণ সে ভাবছে, "আমি এই শরীরটি..." যেমন কুকুরটি মনে করছে, "আমি কুকুর, খুব সুঠাম আর শক্তিশালী কুকুর" আর একটি মানুষও ভাবছে, "আমি খুব বড় জাতির লোক।" কিন্তু মূল নীতিটি কি? একটি কুকুরও তার শরীরের ভিত্তিতে ভাবছে, আরএই বিশাল জাতিটিও তাদের দেহের ভিত্তিতেই ভাবছে। সুতরাং এই কুকুর এবং এই বড় জাতির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। একমাত্র পার্থক্য হল প্রকৃতির উপহারের দ্বারা মানুষজাতি, সে অপেক্ষাকৃত উন্নত ইন্দ্রিয় পেয়েছে। এবং তার কোন শক্তি নেই, অথবা অপেক্ষাকৃত উন্নত ইন্দ্রিয়গুলোকে ব্যবহার করার জন্য জ্ঞান নেই, যে সে কিভাবে পারমার্থিকভাবে এগিয়ে যাবে এবং জড় জগৎ থেকে মুক্তি পাবে। এই সম্পর্কে তার কোন জ্ঞানই নেই। সে কেবল তার সেই উন্নত বুদ্ধিমত্তাকে পাশবিকতার কাজে লাগাচ্ছে। এই হচ্ছে তার জীবনের অর্থ। তার কোন শিক্ষাই নেই যে কিভাবে সে তার উন্নত বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করতে পারে। তাই সে শুধুমাত্র পাশবিক কাজেই তা ব্যবহার করছে। এবং সারা বিশ্বের মানুষ, যখন তারা পাশ্চাত্যবাসীদের দেখে, ওরা ভাবে "এরা খুব উন্নত"। এতে কি এমন আছে? পশুত্বের দিক দিয়ে উন্নতি করছে। মৌলিক নীতিটি পশুত্বই থেকে যাচ্ছে। ওরা তাতেই আশ্চর্য হচ্ছে। ওরাও অনুকরণ করছে। এভাবে ওরা শুধু পাশবিকতারই বিস্তার ঘটাচ্ছে , পাশবিক সভ্যতা। এখন আমাদেরকে মানব সভ্যতার উপকারের জন্য এই পশুত্ব প্রতিহত করতে হবে।