BN/Prabhupada 0056 - বারো জন মহাজনের কথা শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে
Lecture on SB 7.6.1 -- Madras, January 2, 1976
- শ্রীপ্রহ্লাদ উবাচ
- কৌমার আচরেৎ প্রাজ্ঞো
- ধর্মান্ ভগবতানিহ।
- দুর্লভং মানুষং জন্ম
- তদপ্যধ্রুবমর্থদম্।।
- (শ্রীমদ্ভাগবত ৭/৬/১ )
এই হল প্রহ্লাদ মহারাজ। তিনি হলেন কৃষ্ণভাবনার অন্যতম মহাজন। শাস্ত্রে দ্বাদশ মহাজনের কথা উল্লেখ রয়েছে: স্বয়ম্ভূর্নারদঃ শম্ভুঃ কুমারঃ কপিলো মনুঃ। প্রহ্লাদো জনকো ভীষ্মো বলিবৈয়াসকির্বয়ম্।। (শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৩/২০ ) ধর্মের মহাজনদের নিয়ে এটি হলো যমরাজের উক্তি।
ধর্ম মানে হলো ভাগবত-ধর্ম। আমার মনে হয় গত রাত্রে আমি এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছি, ধর্ম মানে হলো ভাগবত। ধর্মং তু সাক্ষাদ্ভগবৎপ্রণীতং (শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৩/১৯ ) যেরকম আমাদের মুখ্য বিচারক আইনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বিচার করেন, অতএব কোনো সাধারণ ব্যক্তি বা কোনো ব্যবসায়ী, কেউই আইন তৈরি করতে পারে না। আইন শুধুমাত্র রাস্ট্র কর্তৃক, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত হতে পারে। অন্য কেউ তা প্রদান করতে পারে না। এটি হবে না... যদি উচ্চ আদালতে কেউ বলে, “স্যার, আমার নিজস্ব আইন রয়েছে,” তখন বিজ্ঞ বিচারক তার সে আইন গ্রহণ করবেন না। অতএব তদ্রুপ, ধর্মও কেউ তৈরি করতে পারে না। আপনি যত বড় ব্যক্তিই হোন না কেন... এমনকি মুখ্য বিচারকও কোনো আইন তৈরি করতে পারে না। রাষ্ট্রই আইন তৈরি করতে পারে।
তদ্রুপ, ধর্ম অর্থ হলো ভাগবত-ধর্ম। এবং অন্যান্য তথাকথিত ধর্ম, সেগুলো ধর্ম নয়। সেগুলো গ্রহণ করা যাবে না। ঠিক একইভাবে, আপনার গৃহে যে আইন প্রদত্ত হয় তাও গ্রহণযোগ্য নয়। অতএব ধর্মং তু সাক্ষাদ্ভগবৎপ্রণীতং (শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৩/১৯ )। এবং ভগবৎ-প্রণীতম্ ধর্ম কি? সেটি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় উক্ত রয়েছে, সেটি আমরা সবা্ই জানি। তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন, কৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার মিশন ছিল ধর্মসংস্থাপনার্থায়, ধর্ম সংস্থাপনের জন্য। ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত। যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত (ভ.গীতা ৪/৭ ) । তাই মাঝে মাঝে ধর্মের গ্লানি বা অধঃপতন ঘটে। সেই সময়েই, কৃষ্ণ আবির্ভূত হন। পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্ (ভ.গীতা ৪/৮ )
যুগে যুগে সম্ভবামি।
অতএব এই ধর্ম, কৃষ্ণ তথাকথিত ধর্ম পুনঃ সংস্থাপনের জন্য আবির্ভূত হন নি: হিন্দু ধর্ম, মুসলিম ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম। না। শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে, ধর্মঃ প্রোজ্ঝিতকৈতবো (শ্রীমদ্ভাগবত ১/১/২ ) । ধর্ম যেটি হলো ছল ধর্ম, সে প্রকার ধর্ম হলো প্রোজ্ঝিত। প্রকৃষ্ট রূপেন উজ্জীত। অর্থাৎ এটিকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে বা বিতাড়িত করা হয়েছ্ তাই প্রকৃত ধর্ম হলো ভাগবত-ধর্ম, প্রকৃত ধর্ম। অতএব প্রহ্লাদ মহারাজ বলছেন, কৌমার আচরেৎ প্রাজ্ঞো ধর্মান্ ভগবতানিহ (শ্রীমদ্ভাগবত ৭/৬/১ )। প্রকৃতপক্ষে ধর্ম হলো ভগবান, ভগবানের সাথে আমার সম্পর্ক, এবং সে সম্পর্কে অনুসারে আচরণ করা যাতে করে আমরা জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। সেটিই হলো ধর্ম।