BN/Prabhupada 0208 - সেই ব্যাক্তির শরন নেওয়া উচিত যিনি কৃষ্ণের ভক্ত
Lecture on SB 6.1.16 -- Denver, June 29, 1975
একজন বৈষ্ণব কখনও কোন পাপ কাজে ভাগ নেয় না এবং অতীতে যা কিছু তিনি করেছেন, তাও শেষ হয়ে যায়। এটা কৃষ্ণ বলেছেন। অন্য কথায়, আপনি যদি শ্রদ্ধাপূর্বক ভগবানের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন, তারপর নিশ্চিত আপনি সব পাপ কার্যক্রমের প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন।
সুতরাং কিভাবে এটি সম্ভব? যথা কৃষ্ণার্পিত-প্রানঃ। প্রানঃ, প্রানৈর অর্থৈর ধীয়া বাচা। প্রান, প্রান অর্থ জীবন। কৃষ্ণের সেবার জন্য যিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, এমন ব্যাক্তি। কীভাবে কৃষ্ণ সেবা করার জন্য এই জীবন উৎসর্গ সম্ভব করা যায়? সেটাও এখানে বলে হয়েছেঃ তৎ-পুরুষ-নিসেবয়া। আপনাকে সেই ভক্তের আশ্রয় নিতে হবে যিনি কৃষ্ণের ভক্ত, এবং আপনাকে সেবা করতে হবে। তার মানে আপনাকে একজন ভক্তকে স্বীকার করতে হবে, একজন সত্যি ভক্ত, একজন শুদ্ধ ভক্ত, আপনার পথপ্রদর্শক হিসাবে। এটা আমাদের পদ্ধতি। রূপ গোস্বামী ভক্তি-রসামৃত-সিন্ধুতে বলেছেন, "প্রথম পদ্ধতি হচ্ছে, প্রথম ধাপ হল আদৌ গুরবাশ্রয়, গুরু গ্রহণ করা।" গুরু গ্রহণ, গুরু মানে কৃষ্ণের প্রতিনিধী। একজন যিনি কৃষ্ণের প্রতিনিধী নয়, তিনি গুরু হতে পারেন না। গুরু মানে এই নয়, যে কোন বদমাশ গুরু হতে পারে। না, শুধুমাত্র তৎ-পুরুষ। তৎ পুরুষ মানে একজন ব্যক্তি যিনি পরম পুরুষ ভগবানকে সবকিছু হিসাবে গ্রহণ করেছেন। তৎ পুরুষ-নিসেবয়া। এই হচ্ছে বৈষ্ণব, শুদ্ধ ভক্ত। তাই এটা খুব মুশকিল নয়। কৃষ্ণের কৃপায় শুদ্ধ ভক্ত আছে, তাই আমাদের তাকে আশ্রয় নিতে হবে। আদৌ গুর্বাশ্রয়ম। তারপর শ্রদ্ধর্ম পৃচ্ছাৎঃ একটি প্রামানিক আধ্যাত্মিক গুরু গ্রহণ করার পর, আমাদের জিজ্ঞাসু হতে হবে, কৃষ্ণ বিজ্ঞান কি এটা জানার জন্য। শ্রদ্ধর্ম পৃচ্ছেৎ সাধু-মার্গ-অনুগমনম। এবং এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত অর্থ একজন ভক্তের পদাঙ্ক অনুসরন করতে হবে, সাধু-মার্গ-অনুগমনম।
তাই কে সাধু? সেটা শাস্ত্রে বর্ননা করা হয়েছে, আমরা ইতিমধ্যেই বর্ননা করেছি।
- স্বংয়ভু নারন শম্ভূ
- কুমার কপিল মনু
- প্রহ্লাদ জনক ভীষ্ম
- বলীর বৈয়াসকীর বয়ম
- (শ্রী.ভা.৬.৩.২০)
এই দুই..., বারো ব্যাক্তিত্বের কথা বিশেষ করে বর্ননা করা হয়েছে, তারা হচ্ছে মহাজন, তারা কর্তৃপক্ষ, সঠিক গুরু, এবং আপনারা তাদের পথ অনুসরন করুন। এটা কঠিন নয়। তাই স্বংয়ভু মানে ভগবান ব্রহ্মা। স্বংয়ভু নারদ শম্ভূ। শম্ভূ মানে ভগবান শিব। তাই প্রত্যেকে... এই বারো মহাজনের মধ্যে, চারজন খুব বিশিষ্ট। তারা হচ্ছে স্বংয়ভু, মানে ব্রহ্মা, এবং তারপর শম্ভূ, ভগবান শিব এবং তারপর কুমার। এবং অরেকটা সম্প্রদায় আছে, শ্রী সম্প্রদায়, লক্ষ্মীদেবী থেকে। তাই আমাদের আধ্যাত্মিক গুরু গ্রহণ করতে হবে , যিনি উত্তরাধিকার ভাবে এই চারটি পরম্পরা ধারায় আছেন। তারপর আমাদের লাভ হবে। যদি আমরা তথাকথিত গুরু গ্রহণ করি, তাহলে এটা সম্ভব হবে না। আমাদেরকে পরম্পরা ধারার উত্তরাধিকারী গুরু গ্রহণ করতে হবে। সেইজন্য এটা অনুমোদন করা হয়েছে যে, তৎ-পুরুষ-নিসেবয়াঃ আমাদেরকে শ্রদ্ধাপুর্বক এবং বিশ্বাসের সঙ্গে তাকে সেবা করতে হবে। তারপর আমাদের উদ্দেশ্য পুরো হবে। এবং যদি আপনারা এই কার্য গ্রহন করেন, কৃষ্ণের জন্য জীবন সর্মপন করা আর সর্বদা কৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত থাকা তৎ-পুরুষের নির্দেশ। কৃষ্ণ ভাবনামৃত প্রচার ছাড়া যার আর কোন কাজ নেই,- তাহলে আমাদের জীবন সফল হবে। আমরা সমস্ত পাপী কার্যক্রম থেকে মুক্ত হইয়া যাই, এবং শুদ্ধ হওয়া ছাড়া... কারন কৃষ্ণ শুদ্ধ বা ভগবান শুদ্ধ। অর্জুন বলেছেন, পরম ব্রহ্ম পরম ব্রহ্ম পবিত্রম পরমম ভবান। " হে আমার পরম কৃষ্ণ, আপনি পরম শুদ্ধ।" তাই যতক্ষন আমরা শুদ্ধ না হচ্ছি, কৃষ্ণের কাছে যেতে পারবো না। এটাই শাস্ত্রের ব্যখ্যা। আগুনের মত না হলে, আগুনে প্রবেশ করা যাবে না। এইভাবে, পুরোপুরি শুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত, আপনি ভগবানের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না। এটা সমস্ত ধর্মিক প্রনালী দ্বারা গ্রহণ করা হয়েছে। খৃষ্টান ব্যবস্থাও এই রকম যে বিশুদ্ধ হওয়া ছাড়া আপনি ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না।