BN/Prabhupada 0302 - মানুষ আত্মসর্মপন করার জন্য ইচ্ছুক নয়: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0302 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1968 Category:BN-Quotes - L...")
 
No edit summary
 
Line 8: Line 8:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0301 - সবথেকে বুদ্ধিমান ব্যাক্ত, তিনি নাচ করছেন|0301|BN/Prabhupada 0303 - চিন্ময়।" আপনি তারও পরে"|0303}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0301 - सबसे बुद्धिमान व्यक्ति, वे नाच रहे हैं|0301|HI/Prabhupada 0303 - दिव्य । तुम इससे परे हो|0303}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 36: Line 34:
তমাল কৃষ্ণঃ উনত্রিশ পৃষ্ঠা চলছে, কিন্তু আপনি বলেছেন পড়া শেষ?  
তমাল কৃষ্ণঃ উনত্রিশ পৃষ্ঠা চলছে, কিন্তু আপনি বলেছেন পড়া শেষ?  


প্রভুপাদঃ এটা যেখান থেকে হোক পড়ুন, ব্যাস। হ্যাঁ।
প্রভুপাদঃ যেখান থেকে হোক পড়। হ্যাঁ।
 
তমাল কৃষ্ণঃ ঠিক আছে। ভগবদ গীতার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে জীবাত্মার স্বাভাবিক স্বভাব সে কোনো পদার্থ নয়। অতএব, আত্মা, এটি পরমাত্মার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, পরম সত্য, ভগবৎব্যক্তিত্ব। আমরা প্রত্যেকে জানি যে আত্মার কর্তব্য হল আত্মসর্মপন করা কেবল মাত্র এর ফলেই সে সুখী হতে পারে। ভাগবত-গীতার শেষ নির্দেশ হল যে আত্মার সম্পূর্ণ রূপে আত্মসর্মপণ, পরমাত্মা কৃষ্ণের নিকট, এবং এর দ্বারা আনন্দের অনুভব করা যায়। এমনকি এখানে, প্রভু চৈতন্য সনাতন গোস্বামীর প্রশ্নের উত্তরে একই সত্য পুনরাবৃত্তি করেন, কিন্তু তার তথ্য ছাড়াও আত্মা সম্পর্কে গীতায় বর্ণণা আছে।


তমাল কৃষ্ণঃ ঠিক আছে। ভগবদ গীতার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে স্বাভাবিক স্বভাব জীবের ব্যক্তিগত আত্মার। সে কোনো পদার্থ নয়। অতএব, আত্মা, এটি পরমাত্মার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, পরম সত্য, ভগবৎব্যক্তিত্ব। আমরা প্রত্যেকে জানি যে আত্মার কর্তব্য হল আত্মসর্মপন করা কেবল মাত্র এর ফলেই সে সুখী হতে পারে। ভাগবত-গীতার শেষ নির্দেশ হল যে আত্মার সম্পূর্ণ রূপে আত্মসর্মপণ, পরমাত্মা কৃষ্ণের নিকট, এবং এর দ্বারা আনন্দের অনুভব করা যায়। এমনকি এখানে, প্রভু চৈতন্য সনাতন গোস্বামীর প্রশ্নের উত্তরে একই সত্য পুনরাবৃত্তি করেন, কিন্তু তার তথ্য ছাড়াও আত্মা সম্পর্কে গীতায় বর্ণণা আছে।
প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বিষয় টি হল আত্মার সংবিধানিক অবস্থান টি কী, তা বিস্তারিত ভাবে শ্রীমদ্ভগবদ-গীতায় বর্ণিত আছে। এখন ভগবদ-গীতার শেষ নির্দেশ, ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন যে, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ([[Vanisource:BG 18.66 (1972)|ভ.গী. ১৮.৬৬]])। তিনি সমস্ত প্রকার যোগ সম্পর্কে অর্জুন কে নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত প্রকার ধর্মীয় কর্মকান্ড, ত্যাগ এবং দার্শনিক তত্ত্ব, শরীরের স্বাভাবিক অবস্থান, আত্মার স্বাভাবিক অবস্থান। সমস্ত কিছু তিনি ভগবত-গীতায় বর্ণনা করেছেন। এবং শেষ পর্যন্ত তিনি অর্জুন কে বলেছেন,"আমার প্রিয় অর্জুন, তুমি আমার খুব অন্তরঙ্গ এবং আমার প্রিয় সখা, তাই আমি বৈদিক জ্ঞানের গোপন বিষয় তোমাকে বলছি।" এবং সেটা কি? " তুমি আমাতে আত্মসর্মপণ করো।" ব্যাস। মানুষ আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছুক নন, তাই তাদের অনেক কিছু শিখতে হচ্ছে। যেমন একটি শিশু সে কেবল তার পিতা মাতার নিকট আত্মসর্মপন করেই খুশি হয়। কীভাবে সুখী জীবন যাপন করা যায় তা জানার জন্য দর্শন জানার কোনো প্রয়োজন নেই। শিশু তার যত্নের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে তার পিতা মাতার উপর ভরসা করে এবং সে সুখী হয়। সহজ দর্শন। কিন্তু যেহেতু আমরা সভ্যতা এবং জ্ঞানের দিক থেকে উন্নত, তাই আমরা এই সহজ দর্শন টাকে আমরা উল্টো ভাবে বোঝার চেষ্টা করি। ব্যাস। যদি আপনি উল্টো টা শিখতে চান তাহলে কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। আমরা দর্শনের অনেক গ্রন্থ পেয়েছি। কিন্তু আমরা যদি এই সামান্য ব্যপার টি বুঝতে পারি, যে ভগবান মহান এবং আমরা তাঁর অভিন্ন অংশ, তাই আমাদের কর্তব্য হল ভগবানের দাসত্ব করা এবং ভগবানের নিকট আত্মসর্মপন করা। ব্যাস। তাই চৈতন্য মহাপ্রভু, সাংবিধানিক অবস্থান, দর্শন, জ্ঞান, আলোচনা ছাড়াই, এবং অনেক অন্যান্য জিনিস, যোগ পদ্ধতি, তিনি অবিলম্বে শুরু করেন যে জীবের স্বাভাবিক ধর্ম হল পূর্ণের সেবা করা। এখান থেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষার শুরু। এর মানে যেখানে ভগবদ গীতার শিক্ষা শেষ হয়, সেখান থেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর শুরু।


প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বিষয় টি হল আত্মার সংবিধানিক অবস্থান টি কী, তা বিস্তারিত ভাবে শ্রীমদ্ভগবদ-গীতায় বর্ণিত আছে। এখন ভগবদ-গীতার শেষ নির্দেশ, ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন যে, সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ([[Vanisource:BG 18.66 (1972)|ভ.গী. ১৮.৬৬]])। তিনি সমস্ত প্রকার যোগ সম্পর্কে অর্জুন কে নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত প্রকার ধর্মীয় কর্মকান্ড, ত্যাগ এবং দার্শনিক তত্ত্ব, শরীরের স্বাভাবিক অবস্থান, আত্মার স্বাভাবিক অবস্থান। সমস্ত কিছু তিনি ভগবত-গীতায় বর্ণনা করেছেন। এবং শেষ পর্যন্ত তিনি অর্জুন কে বলেছেন,"আমার প্রিয় অর্জুন, তুমি আমার খুব অন্তরঙ্গ এবং আমার প্রিয় সখা, তাই আমি বৈদিক জ্ঞানের গোপন বিষয় তোমাকে বলছি।" এবং সেটা কি? " তুমি আমাতে আত্মসর্মপন করো।" ব্যাস। মানুষ আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছুক নন, তাই তাদের অনেক কিছু শিখতে হচ্ছে। যেমন একটি শিশু সে কেবল তার পিতা মাতার নিকট আত্মসর্মপন করেই খুশি হয়। কীভাবে সুখী জীবন যাপন করা যায় তা জানার জন্য দর্শন জানার কোনো প্রয়োজন নেই। শিশু তার যত্নের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে তার পিতা মাতার উপর ভরসা করে এবং সে সুখী হয়। সহজ দর্শন। কিন্তু যেহেতু আমরা সভ্যতা এবং জ্ঞানের দিক থেকে উন্নত, তাই আমরা এই সহজ দর্শন টাকে আমরা উল্টো ভাবে বোঝার চেষ্টা করি। ব্যাস। যদি আপনি উল্টো টা শিখতে চান তাহলে কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। আমরা দর্শনের অনেক গ্রন্থ পেয়েছি। কিন্তু আমরা যদি এই সামান্য ব্যপার টি বুঝতে পারি, যে ভগবান মহান এবং আমরা তাঁর অভিন্ন অংশ, তাই আমাদের কর্তব্য হল ভগবানের দাসত্ব করা এবং ভগবানের নিকট আত্মসর্মপন করা। ব্যাস। তাই চৈতন্য মহাপ্রভু, সাংবিধানিক অবস্থান, দর্শন, জ্ঞান, আলোচনা ছাড়াই, এবং অনেক অন্যান্য জিনিস, যোগ পদ্ধতি, তিনি অবিলম্বে শুরু করেন যে জীবের স্বাভাবিক ধর্ম হল পূর্ণের সেবা করা। এখান থেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষার শুরু। এর মানে যেখানে ভগবদ গীতার শিক্ষা শেষ হয়, সেখান থেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর শুরু। প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বলে যাও।  
প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বলে যাও।  


তমাল কৃষ্ণঃ "তিনি তাঁর বিষয়টি শুরু করেছেন যেখানে কৃষ্ণ তাঁর নির্দেশ শেষ করেছেন। মহান ভক্তরা এটা স্বীকার করেছেন যে চৈতন্য মহাপ্রভু স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণ। এবং তাইজন্য যেখানে তিনি তাঁর নির্দেশ গীতাতে শেষ করেছিলেন, তিনি আবার তা সনাতনকে দিয়ে তা শুরু করেছেন। ভগবান সনাতন কে বলেছিলেন, 'তোমার স্বাভাবিক স্থিতি হল তুমি শুদ্ধ জীবাত্মা। এই জড় দেহ টি তোমার আসল পরিচয় নয়, তোমার মন টি ও তোমার আসল পরিচয় নয়। আপনার বুদ্ধি, মিথ্যা অহংকার কোনোটাই আপনার আসল পরিচয় নয়। আপনার আসল পরিচয় হল পরমেশ্বর ভগবান কৃষ্ণের নিত্য দাস।  
তমাল কৃষ্ণঃ "তিনি তাঁর বিষয়টি শুরু করেছেন যেখানে কৃষ্ণ তাঁর নির্দেশ শেষ করেছেন। মহান ভক্তরা এটা স্বীকার করেছেন যে চৈতন্য মহাপ্রভু স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণ। এবং তাইজন্য যেখানে তিনি তাঁর নির্দেশ গীতাতে শেষ করেছিলেন, তিনি আবার তা সনাতনকে দিয়ে তা শুরু করেছেন। ভগবান সনাতন কে বলেছিলেন, 'তোমার স্বাভাবিক স্থিতি হল তুমি শুদ্ধ জীবাত্মা। এই জড় দেহ টি তোমার আসল পরিচয় নয়, তোমার মন টি ও তোমার আসল পরিচয় নয়। আপনার বুদ্ধি, মিথ্যা অহংকার কোনোটাই আপনার আসল পরিচয় নয়। আপনার আসল পরিচয় হল পরমেশ্বর ভগবান কৃষ্ণের নিত্য দাস।  


প্রভুপাদঃ এখন এখানে গুরুত্ব পূর্ন বিষয় হল, আমাদের আত্ম পরিচয়, যারা জড় জাগতিক তারা মনে করেন যে,"আমি এই দেহ" আমি এই দেহ, দেহ মানে ইন্দ্রিয়। তাই আমার সন্তুষ্টি মানে ইন্দ্রিয়ের সন্তুষ্টি-ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টি। এটা আত্ম পরিচয়ের অপরিষ্কৃত রূপ। এই শরীর স্বতন্ত্র। শরীর, মন, এবং আত্মা সবই স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্র সমার্থক। শরীর এবং মন এবং আত্মা সকলই.,  এই তিনটি হল স্বতন্ত্র। আমাদের জীবনের এই অপরিষ্কৃত পর্যায়ে, আমরা মনে করি যে এই শরীর টি স্বতন্ত্র। এবং একটি সুক্ষ পর্যায়ে আমরা চিন্তা করি যে মন এবং বুদ্ধিও স্বতন্ত্র। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে  স্বতন্ত্রতা এই শরীর, মন, বদ্ধি থেকে অনেক দূরে। এটিই স্থিতি। যারা কেবলমাত্র  দেহাত্ম উপলব্ধির দ্বারা আচ্ছন্ন তারা জড়জাগতিক। এবং যারা মন এবং বুদ্ধি  উপর নির্ভর করে তারা দার্শনিক এবং কবি। তারা কেবলমাত্র জাগতিক যুক্তি এবং কবিতা সম্পর্কে জ্ঞান দিতে পারে, কিন্তু তাদের ধারনা তবুও ভুল। যখন আমরা আধ্যাত্মিক স্তরে উন্নিত হব, তখন সেটাকে বলা হয় ভক্তিসেবা। যেটা চৈতন্য মহাপ্রভু দ্বারা বর্ণিত হয়েছে।  
প্রভুপাদঃ এখন এখানে গুরুত্ব পূর্ন বিষয় হল, আমাদের আত্ম পরিচয়, যারা জড় জাগতিক তারা মনে করেন যে,"আমি এই দেহ" আমি এই দেহ, দেহ মানে ইন্দ্রিয়। তাই আমার সন্তুষ্টি মানে ইন্দ্রিয়ের সন্তুষ্টি-ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টি। এটা আত্ম পরিচয়ের অপরিষ্কৃত রূপ। এই শরীর স্বতন্ত্র। শরীর, মন, এবং আত্মা সবই স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্র সমার্থক। শরীর এবং মন এবং আত্মা সকলই.,  এই তিনটি হল স্বতন্ত্র। আমাদের জীবনের এই অপরিষ্কৃত পর্যায়ে, আমরা মনে করি যে এই শরীর টি স্বতন্ত্র। এবং একটি সুক্ষ পর্যায়ে আমরা চিন্তা করি যে মন এবং বুদ্ধিও স্বতন্ত্র। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে  স্বতন্ত্রতা এই শরীর, মন, বদ্ধি থেকে অনেক দূরে। এটিই স্থিতি। যারা কেবলমাত্র  দেহাত্ম উপলব্ধির দ্বারা আচ্ছন্ন তারা জড়জাগতিক। এবং যারা মন এবং বুদ্ধি  উপর নির্ভর করে তারা দার্শনিক এবং কবি। তারা কেবলমাত্র জাগতিক যুক্তি এবং কবিতা সম্পর্কে জ্ঞান দিতে পারে, কিন্তু তাদের ধারণা তবুও ভুল। যখন আমরা আধ্যাত্মিক স্তরে উন্নিত হব, তখন সেটাকে বলা হয় ভক্তিসেবা। যা চৈতন্য মহাপ্রভু দ্বারা বর্ণিত হয়েছে।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 03:51, 13 December 2021



Lecture -- Seattle, October 2, 1968

প্রভুপাদঃ সুতরাং আমরা ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা পড়ছি। আমরা আমাদের শেষ বৈঠক শুরু করিয়াছি এবং আমরা এটি আবার পড়বো। তুমি কী এটা পড়বে? হ্যাঁ।

তমাল কৃষ্ণঃ উনত্রিশ পৃষ্ঠা চলছে, কিন্তু আপনি বলেছেন পড়া শেষ?

প্রভুপাদঃ যেখান থেকে হোক পড়। হ্যাঁ।

তমাল কৃষ্ণঃ ঠিক আছে। ভগবদ গীতার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে জীবাত্মার স্বাভাবিক স্বভাব সে কোনো পদার্থ নয়। অতএব, আত্মা, এটি পরমাত্মার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, পরম সত্য, ভগবৎব্যক্তিত্ব। আমরা প্রত্যেকে জানি যে আত্মার কর্তব্য হল আত্মসর্মপন করা কেবল মাত্র এর ফলেই সে সুখী হতে পারে। ভাগবত-গীতার শেষ নির্দেশ হল যে আত্মার সম্পূর্ণ রূপে আত্মসর্মপণ, পরমাত্মা কৃষ্ণের নিকট, এবং এর দ্বারা আনন্দের অনুভব করা যায়। এমনকি এখানে, প্রভু চৈতন্য সনাতন গোস্বামীর প্রশ্নের উত্তরে একই সত্য পুনরাবৃত্তি করেন, কিন্তু তার তথ্য ছাড়াও আত্মা সম্পর্কে গীতায় বর্ণণা আছে।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বিষয় টি হল আত্মার সংবিধানিক অবস্থান টি কী, তা বিস্তারিত ভাবে শ্রীমদ্ভগবদ-গীতায় বর্ণিত আছে। এখন ভগবদ-গীতার শেষ নির্দেশ, ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন যে, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ (ভ.গী. ১৮.৬৬)। তিনি সমস্ত প্রকার যোগ সম্পর্কে অর্জুন কে নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত প্রকার ধর্মীয় কর্মকান্ড, ত্যাগ এবং দার্শনিক তত্ত্ব, শরীরের স্বাভাবিক অবস্থান, আত্মার স্বাভাবিক অবস্থান। সমস্ত কিছু তিনি ভগবত-গীতায় বর্ণনা করেছেন। এবং শেষ পর্যন্ত তিনি অর্জুন কে বলেছেন,"আমার প্রিয় অর্জুন, তুমি আমার খুব অন্তরঙ্গ এবং আমার প্রিয় সখা, তাই আমি বৈদিক জ্ঞানের গোপন বিষয় তোমাকে বলছি।" এবং সেটা কি? " তুমি আমাতে আত্মসর্মপণ করো।" ব্যাস। মানুষ আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছুক নন, তাই তাদের অনেক কিছু শিখতে হচ্ছে। যেমন একটি শিশু সে কেবল তার পিতা মাতার নিকট আত্মসর্মপন করেই খুশি হয়। কীভাবে সুখী জীবন যাপন করা যায় তা জানার জন্য দর্শন জানার কোনো প্রয়োজন নেই। শিশু তার যত্নের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে তার পিতা মাতার উপর ভরসা করে এবং সে সুখী হয়। সহজ দর্শন। কিন্তু যেহেতু আমরা সভ্যতা এবং জ্ঞানের দিক থেকে উন্নত, তাই আমরা এই সহজ দর্শন টাকে আমরা উল্টো ভাবে বোঝার চেষ্টা করি। ব্যাস। যদি আপনি উল্টো টা শিখতে চান তাহলে কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। আমরা দর্শনের অনেক গ্রন্থ পেয়েছি। কিন্তু আমরা যদি এই সামান্য ব্যপার টি বুঝতে পারি, যে ভগবান মহান এবং আমরা তাঁর অভিন্ন অংশ, তাই আমাদের কর্তব্য হল ভগবানের দাসত্ব করা এবং ভগবানের নিকট আত্মসর্মপন করা। ব্যাস। তাই চৈতন্য মহাপ্রভু, সাংবিধানিক অবস্থান, দর্শন, জ্ঞান, আলোচনা ছাড়াই, এবং অনেক অন্যান্য জিনিস, যোগ পদ্ধতি, তিনি অবিলম্বে শুরু করেন যে জীবের স্বাভাবিক ধর্ম হল পূর্ণের সেবা করা। এখান থেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষার শুরু। এর মানে যেখানে ভগবদ গীতার শিক্ষা শেষ হয়, সেখান থেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর শুরু।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বলে যাও।

তমাল কৃষ্ণঃ "তিনি তাঁর বিষয়টি শুরু করেছেন যেখানে কৃষ্ণ তাঁর নির্দেশ শেষ করেছেন। মহান ভক্তরা এটা স্বীকার করেছেন যে চৈতন্য মহাপ্রভু স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণ। এবং তাইজন্য যেখানে তিনি তাঁর নির্দেশ গীতাতে শেষ করেছিলেন, তিনি আবার তা সনাতনকে দিয়ে তা শুরু করেছেন। ভগবান সনাতন কে বলেছিলেন, 'তোমার স্বাভাবিক স্থিতি হল তুমি শুদ্ধ জীবাত্মা। এই জড় দেহ টি তোমার আসল পরিচয় নয়, তোমার মন টি ও তোমার আসল পরিচয় নয়। আপনার বুদ্ধি, মিথ্যা অহংকার কোনোটাই আপনার আসল পরিচয় নয়। আপনার আসল পরিচয় হল পরমেশ্বর ভগবান কৃষ্ণের নিত্য দাস।

প্রভুপাদঃ এখন এখানে গুরুত্ব পূর্ন বিষয় হল, আমাদের আত্ম পরিচয়, যারা জড় জাগতিক তারা মনে করেন যে,"আমি এই দেহ" আমি এই দেহ, দেহ মানে ইন্দ্রিয়। তাই আমার সন্তুষ্টি মানে ইন্দ্রিয়ের সন্তুষ্টি-ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টি। এটা আত্ম পরিচয়ের অপরিষ্কৃত রূপ। এই শরীর স্বতন্ত্র। শরীর, মন, এবং আত্মা সবই স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্র সমার্থক। শরীর এবং মন এবং আত্মা সকলই., এই তিনটি হল স্বতন্ত্র। আমাদের জীবনের এই অপরিষ্কৃত পর্যায়ে, আমরা মনে করি যে এই শরীর টি স্বতন্ত্র। এবং একটি সুক্ষ পর্যায়ে আমরা চিন্তা করি যে মন এবং বুদ্ধিও স্বতন্ত্র। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে স্বতন্ত্রতা এই শরীর, মন, বদ্ধি থেকে অনেক দূরে। এটিই স্থিতি। যারা কেবলমাত্র দেহাত্ম উপলব্ধির দ্বারা আচ্ছন্ন তারা জড়জাগতিক। এবং যারা মন এবং বুদ্ধি উপর নির্ভর করে তারা দার্শনিক এবং কবি। তারা কেবলমাত্র জাগতিক যুক্তি এবং কবিতা সম্পর্কে জ্ঞান দিতে পারে, কিন্তু তাদের ধারণা তবুও ভুল। যখন আমরা আধ্যাত্মিক স্তরে উন্নিত হব, তখন সেটাকে বলা হয় ভক্তিসেবা। যা চৈতন্য মহাপ্রভু দ্বারা বর্ণিত হয়েছে।