BN/Prabhupada 0381 - দশাবতার স্ত্রোত্র ভাগ ১

Revision as of 08:04, 22 December 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Purport to Sri Dasavatara Stotra -- Los Angeles, February 18, 1970

প্রলয়-প্রয়োধি-জলে-ধৃতবানসিবেদং, বিহিত-বহিত্র-চরিত্রম আখেদম। আজ ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শূকর আকারে অবতার হবার দিন। উনি পৃথিবীকে উঠিয়েছিলেন যখন এটা গর্ভদকশায়ী সাগরে নিমজ্জিত ছিল। যে ব্রহ্মান্ড আমরা দেখছি, সেটা তার অর্ধেক। বাকি অর্ধেক জল দিয়ে ভরা এবং বিষ্ণু সেই গর্ভদকশায়ী জলে শয়ন করে আছেন। তাই একটি দৈত্য, হিরন্যাক্ষ, তিনি এই পৃথিবী গ্রহকে জলে ধাক্কা মারেন, এবং ভগবান কৃষ্ণ এই পৃথিবী গ্রহকে জল থেকে বাচাঁন একটি শূকর আকারে, তাই সেই শুভদিন বরাহ দ্বাদশী আজ। একে বরাহ দ্বাদশী বলা হয়। সুতরাং এই দিনে গান গাওয়া, এই ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে ভগবানের বিভিন্ন অবতারের মহিমান্বিত করা ভাল। প্রথম অবতার মাছের আকারে। তাই এই প্রার্থনা জয়দেব গোস্বামী দ্বারা উপস্থাপিত হয়েছিল। একটি বৈষ্ণব কবি, প্রায় সাত শত বছর আগে, ভগবান চৈতন্যর অবতার হবের আগে আবির্ভূত হয়েছেন।

তিনি একজন মহান ভক্ত ছিলেন, এবং তাঁর বিশেষ কবিতা, গীত-গোবিন্দ, এটি সারা বিশ্বে বিখ্যাত। গীত গোবিন্দ। গীত-গোবিন্দের বিষয় হল,কৃষ্ণ রাধারানী সন্মন্ধে বাঁশি বাজান। এটি গীত-গোবিন্দের বিষয়। একই কবি, জয়দেব গোস্বামী, এই প্রার্থনাকে প্রস্তাব করেছেন, প্রলয়-প্রয়োধী-জলে-ধৃতবানসিবেদম। তারা বলেন, "আমার প্রিয় প্রভু, যখন মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, তখন সবকিছুই জল দিয়ে ভরে গিয়েছিল। সেই সময় আপনি বেদকে রক্ষা করেন একটি নৌকায় রেখে। এবং আপনি যে নৌকাকে জল থেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, একটি বড় মাছের আকৃতির ধারণ করে ধরে রেখে।" এই মাছটি প্রথমে একটি ছোট মাছের মত ধরা পড়েছিল। তারপর এটি বড় হয় এবং মাছ একটি বৃহৎ জলাধারের মধ্যে রাখা হয়। এই ভাবে মাছ বড় হয়ে ওঠে। তারপর মাছ জানায় যে "বিপর্যয় আসছে। আপনি সব বেদ একটি নৌকার উপর সংরক্ষণ করুন, এবং আমি তাদের রক্ষা করব।" তারপর জয়দেব গোস্বামী প্রার্থনা করছিলেন, "হে আমার প্রভু, আপনি বেদকে রক্ষা করেছেন, যখন বিপর্যয় ঘটেছিল, তখন একটি মাছের আকারে এসে।

পরবর্তীটি হল কূর্মাবতার। সাগর মন্থন হয়েছিল। এক দিকে সমস্ত দেবতা এবং একদিকে সব দানব। এবং মন্থন দন্ড ছিল একটি মহান পর্বত, মন্দর পর্বত। বিশ্রামের আধার ছিল ভগবানের পিঠ, একটি কচ্ছপের রূপে অবতরিত হয়েছিল। তিনি প্রার্থনা করছিলেন যে, আপনি একটি কচ্ছপের রুপে আর্বিভূত আরামের আধার হবার জন্য। এবং এটি ঘটেছে কারণ আপনি আপনার পিঠে কিছু চুলকুনি অনুভব করেছিলেন। তাই আপনি এই বড় দন্ড কে স্বীকার করেছেন, মন্দর পর্বতকে, চুলকানির জন্য।"

তারপর পরবর্তী অবতার বরাহ, শুয়োর অথবা শুকর। তিনি এই গ্রহটিকে তার দাঁত দিয়ে রক্ষা করেছেন, এবং তিনি সমগ্র পৃথিবীকে তাদের দাঁত উপর স্থাপিত করেন। আমরা শুধু কল্পনা করতে পারি তাকে কত বড় দেখাচ্ছিল। এবং সেই সময় পৃথিবীকে চাঁদের মতো লাগছিল, যাতে কিছু চিহ্ন ছিল। তাই কেশব ধৃত-ববাহ-শরীর। তিনি বলেছেন, " হে আমার প্রিয় প্রভু, আপনি আর্বিভূত হয়েছেন মহান শুকর রুপে। তাই আমি আপনাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রনাম করছি।"

চতুর্থ অবতার নরসিংহ-দেব। নৃসিংহ দেব আবির্ভুত হন প্রহ্লাদ মহারাজকে রক্ষা করতে যে ছিল পাঁচ বছরের ছোট বালক। এবং তার নাস্তিক পিতা দ্বারা তাকে নির্যাতন করা হচ্ছিল। সুতরাং, তিনি প্রসা্দের স্তম্ভ থেকে বেড়িয়ে এসেছিল, অর্ধেক মানুষ, অর্ধ সিংহের আকারে। যেহেতু এই হিরণ্যকিপ্পু ব্রহ্মার আশীর্বাদ প্রাপ্ত করেছিলেন যে তিনি কোন মানুষ বা কোন প্রাণীর দ্বারা হত্যা হবেন না। তাই ভগবান না মানুষ না পশু রুপে আর্বিভূত হয়েছিলেন। এটাই পার্থক্য ভগবানের বুদ্ধিমত্তা এবং আমাদের বুদ্ধিমত্তার মধ্যে। আমরা চিন্তা করি যে আমরা আমাদের বুদ্ধির মাধ্যমে ভগবানকে প্রতারিত করতে পারব। কিন্তু ভগবানের বুদ্ধি আমাদের থেকেও বেশী। এই হিরণ্যকশিপু পরোক্ষ রুপে ব্রহ্মকে প্রতারিত করতে চেয়েছিলেন। প্রথমত, তিনি অমর হতে চেয়েছিলেন। ব্রহ্মা বললেন, "এ সম্ভব না কারণ আমি অমর নই। এই জড় জগতে কেউ অমর নয় এটা সম্ভব নয়।" তাই হিরণ্যকশিপু, দানব ... দানব খুব বুদ্ধিমান হয়। তিনি মনে করেন, "আমি অমর হয়ে যাব, আমি অমর হয়ে যাব।" তিনি ব্রহ্মের কাছে প্রার্থনা করেন, "আমাকে আশীর্বাদ করুন, আমি কোন মানুষ বা কোন পশু দ্বারা হত্যা হব না। "ব্রহ্মা বললেন," হ্যাঁ, ঠিক আছে।" "আমি আকাশে জলে বা মাটিতে মারা যাব না।" ব্রহ্ম বলেন, "ওহ হ্যাঁ।" "আমি কোনও মানুষের তৈরী অস্ত্র দ্বারা হত্যা হব না।" "ঠিক আছে।" এই ভাবে, তিনি অনেক উপায়ে তাঁর বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেন, অমরত্ব হবার জন্য। কিন্তু ভগবান এত চালাক, তিনি ব্রহ্ম কর্তৃক প্রদত্ত সকল আশীর্বাদ রেখেছিলেন, তবুও তিনি নিহত হন। তিনি বললেন, "আমি দিন ও রাতে মারা যাব না।" ব্রহ্মা বললেন, "হ্যাঁ।" তাই তারা সন্ধ্যায় নিহত হন, দিন এবং রাতের মিলিত সময়ে। আপনি বলতে পারেন না যে এ্টা দিন না রাত। তিনি এই আশীর্বাদ গ্রহণ করেন যে, "আমি মাটিতে, আকাশে পানিতে, মরব না।" তাই তিনি তার কোলে মারা গিয়েছিলেন। তিনি এই আশীর্বাদ পেয়েছেন যে, "ভগবানের দ্বারা সৃষ্ট বা কোন মানুষের তৈরি অস্ত্র দ্বারা আমি মারা যাব না।" এটি দেওয়া হয়েছে, "ঠিক আছে।" তাই তিনি নখ দ্বারা হত হয়েছিলেন। এইভাবে, সকল আর্শিবাদ রাখা হয়েছিল, কিন্তু তবুও তিনি নিহত হয়েছিলেন। একইভাবে, আমরা পরিকল্পনা করতে পারি, আমরা বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে ব্যাপকভাবে উন্নত করতে পারি, কিন্তু প্রকৃতির হত্যার প্রক্রিয়াটিও থাকবে। কেউ পালাতে পারবে না আমরা আমাদের বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে পালাতে পারব না। জড় অস্তিত্বের চারটি নিয়ম হল জন্ম, মৃত্যু, বার্ধক্য এবং রোগ। আমরা অনেক ওষুধ, অনেক অস্ত্র, অনেক সরঞ্জাম, বিভিন্ন উপায়ে উৎপাদন করতে পারি, কিন্তু আপনি জড় অস্তিত্বের এই চারটি নীতি থেকে অব্যাহতি পাবেন না, আপনি যত মহান হোন না কেন। এটা হিরণ্যকশিপু প্রমাণ করে দিয়েছেন। হিরণ্যকশিপু একজন জড়বাদী প্রবীণ ছিলেন এবং তিনি চিরকাল বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন, উপভোগ করেছিলেন। কিন্তু এমনকি তিনি বাঁচতে পারে নি, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।