BN/Prabhupada 0529 - রাধা-কৃষ্ণের প্রেমময় লীলা কোন সাধারণ বস্তু নয়

Revision as of 16:07, 23 June 2022 by Visnu Murti (talk | contribs)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Radhastami, Srimati Radharani's Appearance Day -- London, August 29, 1971

তাই শ্রীকৃষ্ণকে বোঝার চেষ্টা করুন। এবং যখন শ্রীকৃষ্ণ উপভোগ করতে চান, তখন এটি কী ধরণের উপভোগ হবে? এই বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করুন। শ্রীকৃষ্ণ এত মহান; ঈশ্বর মহান, সবাই জানেন। সুতরাং মহান যখন উপভোগ করতে চান, তখন উপভোগের কী মানের হওয়া উচিত? সেটা বুঝতে হবে। রাধা-কৃষ্ণ ... সুতরাং স্বরূপ দামোদার গোস্বামী একটি রচনা লিখেছেন, রাধা-কৃষ্ণ-প্রণয়-বিকৃতিঃ। শ্রীমতী রাধারাণী ও শ্রীকৃষ্ণের প্রেম সাধারণ নয়, এই জাগতিক প্রেম, যদিও সেরকম মনে হয়। কিন্তু যে শ্রীকৃষ্ণ বুঝতে পারে না, অবজানন্তি মাম্‌ মূঢ়া (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯।১১)। মূঢ়া, দুষ্টু, বোকা, তারা শ্রীকৃষ্ণকে সাধারণ মানুষ বলেই বোঝে। যখনি আমরা শ্রীকৃষ্ণকে আমাদের একজন হিসাবে মনে করি... মানুষীম্‌ তনুম আশ্রিতম্‌, পরম ভাবম্‌ অজানন্ত এই দুর্বৃত্তরা, তারা জানে না পরম ভাবম। তারা কৃষ্ণলীলা, রাসলীলা নকল করার চেষ্টা করে। অনেক দুর্বৃত্ত রয়েছে। সুতরাং এই সব চলছে। শ্রীকৃষ্ণকে বোঝার কোনও চেষ্টাই নেই। শ্রীকৃষ্ণকে বোঝা খুব কঠিন।

মনুষ্যানাম্‌ সহস্রেষু
কশ্চিদ যততি সিদ্ধয়ে
যততাম্‌ অপি সিদ্ধানাম্‌
কশ্চিন মাম বেত্তি তত্ত্বতঃ
(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৭।৩) ।

লক্ষ লক্ষ ব্যক্তির মধ্যে কেউ একজন তার জীবনকে নিখুঁত করার চেষ্টা করে। সবাই পশুর মতো কাজ করছে। জীবনের পূর্ণতার প্রশ্নই আসে না। প্রাণীর প্রবণতা: খাওয়া, ঘুমানো, সঙ্গম করা এবং রক্ষা করা ... সুতরাং সবাই পশুর মতো ব্যস্ত। তাদের আর কোনও কাজ নেই, যেমন প্রাণী, শূকর, কুকুর, দিনরাত কাজ করে: "মল কোথায়? মল কোথায়?" এবং কিছুটা মল পাওয়ার সাথে সাথে কিছুটা মেদ হয়, " যৌনসহবাস কোথায়? যৌনসহবাস কোথায়?" মা বা বোনের কোন চিন্তা নেই। এটি শূকরের জীবন।

সুতরাং মানবজীবন শূকর সভ্যতার জন্য নয়। সুতরাং আধুনিক সভ্যতা শূকর সভ্যতা, যদিও এটি শার্ট এবং কোট দিয়ে পালিশ করা। সুতরাং, আমাদের বোঝার চেষ্টা করা উচিত। শ্রীকৃষ্ণকে বোঝার জন্য এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন। শ্রীকৃষ্ণ বোঝার জন্য অল্প পরিশ্রম, কঠোরতা এবং তপস্যা দরকার। তপস্যা ব্রহ্মচর্যেণ শমেন দমেন চ। তপস্যা। তপস্যা করতে হয়। ব্রহ্মচার্য। তপস্যা। ব্রহ্মচর্য মানে যৌন জীবন বন্ধ করা বা যৌনজীবন নিয়ন্ত্রণ করা। ব্রহ্মচর্য। সুতরাং বৈদিক সভ্যতা হল প্রথম থেকেই, ছেলেদের ব্রহ্মচারী, ব্রহ্মচারী হতে প্রশিক্ষণ দেওয়া। আধুনিক দিনের মত নয়, স্কুল, ছেলে-মেয়েরা, দশ বছর, বারো বছর, তারা উপভোগ করছে। মস্তিষ্ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা উচ্চতর জিনিস বুঝতে পারে না। মস্তিষ্কের টিস্যুগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং ব্রহ্মচারী না হয়ে কেউ আধ্যাত্মিক জীবন বুঝতে পারে না। তপস্যা ব্রহ্মচর্যেণ শমেন দমেন চ। শমের অর্থ ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করা, মনকে নিয়ন্ত্রণ করা; দমেন, ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ; ত্যাগেন; শৌচেন, পরিচ্ছন্নতা; ত্যাগে, ত্যাগ অর্থ দাতব্য। এগুলি নিজেকে বোঝার প্রক্রিয়া, আত্ম-উপলব্ধি। তবে এই যুগে এই সমস্ত প্রক্রিয়া অতিক্রম করা খুব কঠিন। ব্যবহারিকভাবে এটি অসম্ভব। অতএব ভগবান শ্রীচৈতন্য, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ, নিজেকে এক প্রক্রিয়া দ্বারা সহজেই উপলব্ধ করেছেন:

হরের নাম হরের নাম হরের নামৈব কেবলম
কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতির অন্যথা
(শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত আদি ১৭।২১)

এই যুগে কলি-যুগ ... কলিযুগকে সবচেয়ে পতিত যুগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আমরা ভাবছি যে আমরা খুব উন্নত তবে এটি সবচেয়ে পতিত যুগ। কারণ মানুষ পশুর মতো হয়ে উঠছে। শারীরিক প্রয়োজনীয়তার চারটি নীতি ব্যতীত প্রাণীগুলির কোনও আগ্রহ নেই - আহার, নিদ্রা, ভয় এবং মৈথুন সুতরাং এই যুগে লোকেরা শারীরিক প্রয়জোনীয়তার চারটি নীতি নিয়ে আগ্রহী। তাদের আত্মার কোন তথ্য নেই, তারা আত্মা কি তা উপলব্ধি করতে প্রস্তুত নয়। এটাই এই যুগের ত্রুটি। তবে জীবনের মানব রূপটি বিশেষত নিজেকে উপলব্ধি করার জন্য যে, "আমি কে?" এটাই মানব জীবনের লক্ষ্য।