BN/Prabhupada 0588 - তুমি যাই চাও, কৃষ্ণ তোমাকে তা দেবেন

Revision as of 17:00, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.20 -- Hyderabad, November 25, 1972

যতক্ষণ পর্যন্ত কারোর এক বিন্দুও জড় বাসনা থাকবে যে "যদি আমি ব্রহ্মার মতো হতে পারতাম, অথবা রাজা কিংবা জওহরলাল নেহেরু," তাহলে আমাকে অবশ্যই আরেকটি দেহ পেতে হবে। এই বাসনার কারণে। শ্রীকৃষ্ণ এতোই উদার, এতোই করুণাময়। আমরা যাই চাই - যে যথা মাম্‌ প্রপদ্যন্তে (গীতা ৪/১১) - শ্রীকৃষ্ণ তোমাকে তাই দেবেন কৃষ্ণের থেকে কিছু নিতে গেলে... ঠিক যেমন খ্রিষ্টানরা প্রার্থনা করে, "হে ভগবান, আমাদের রোজকার রুটি দাও" তাহলে আমাদের কিছু দিতে কি শ্রীকৃষ্ণের জন্য খুব কঠিন ...? তিনি ইতিমধ্যেই দিচ্ছেন। তিনি রোজকার আহার দিচ্ছেন এটি প্রার্থনার ঠিক মনোভাব নয়। তাদের প্রার্থনার ভাবটি ... শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যেমন বলেছেন, মম জন্ম জন্মনীশ্বরে ভবতাদ্‌ভক্তিঃ অহৈতুকীত্বয়ি (চৈতন্য চরিতামৃত অন্ত্যলীলা শিক্ষাষ্টক ৪) এই হচ্ছে প্রার্থনা। আমাদের কিছুই চাইবার দরকার নেই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদের ভরণপোষণের প্রচুর সব ব্যবস্থা করে রেখেছেন। পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণমেবাবশিষ্যতে (ঈষোপনিষদ আবাহন) কিন্তু আমরা যখন পাপাচরণ করি তখন প্রকৃতি তা নিয়ন্ত্রণ করে নেয় আমরা নাস্তিক হয়ে যাই, আমরা অসুর হয়ে যাই। তাহলে সব সরবরাহ কমে যাবে। আর তখন আমরা কাঁদতে শুরু করি, "ওহ্‌ কোন বৃষ্টি নেই, এটা নেই, ওটা নেই..." সেটিই প্রকৃতির নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু ভগবানের তরফ থেকে সবার জন্য সবকিছুই রয়েছে একো বহুনাম্‌ যো বিদধাতি কামান্‌। (Kaṭha Upaniṣad 2.2.13) তিনি সকলকে দিচ্ছেন।

যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী জড় বাসনা থাকবে ততক্ষণ আমাদের এই জড়দেহ পেতে হবে, আর তার নাম জন্ম। অন্যথায়, জীবের কোন জন্ম মৃত্যু নেই। এখন এই জন্ম ও মৃত্যু এই সমস্ত জীবেদের স্ফুলিঙ্গের সাথে তুলনা করা হচ্ছে আর ভগবান হচ্ছেন এক বিশাল আগুনের মতো। বিশাল অগ্নিকুণ্ড। সেভাবেই তুলনা করা হয়েছে আর ছোট্ট স্ফুলিঙ্গ, দুটোই আগুন। কিন্তু কখনও কখনও স্ফুলিঙ্গ আগুন থেকে ছিটকে পড়ে সেটিই আমাদের অধঃপতন। অধঃপতন মানে জড়জগতে এসে পড়া। কেন? কেবল ভোগের মনোবৃত্তির জন্য। শ্রীকৃষ্ণকে নকল করার জন্য। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম ভোক্তা। আমরা হচ্ছি দাস। কখনও কখনও ... এটি স্বাভাবিক। সেবক ভাবছে যে "যদি আমি আমার মনিবের মতো ভোগ করতে পারতাম..." যখন সেই ভোগের মনোবৃত্তি আসে, তাকে বলে মায়া। কারণ আমরা ভোক্তা হতে পারি না। সেটি মিথ্যা। যদি আমি ভাবি যে আমি ভোক্তা হতে পারব, এমনকি এই জড়জগতেও... তথাকথিত ভোক্তা সকলেই ভোক্তা সাজতে চাইছে। আর সেই ভোগের চূড়ান্ত ফাঁদ হচ্ছে যখন কেউ ভাবে যে "এখন আমি ভগবান হব"। এটিই হচ্ছে চূড়ান্ত ফাঁদ। প্রথমে আমি ম্যানেজার বা মালিক হতে চাইছি। তারপর প্রধানমন্ত্রী। তারপর এটা সেটা। এবং যখন সবকিছুর শেষে আমরা হতভম্ব হয়ে পড়ি, তখনই কেউ ভাবে, "এখন আমি ভগবান হব"। অর্থাৎ প্রভু হবার সেই একই মনোবৃত্তি, শ্রীকৃষ্ণকে অনুকরণ করার মনোবৃত্তি... এসবই চলছে।