BN/Prabhupada 0589 - এইসব জড় বৈচিত্রের দ্বারা আমরা বিরক্ত

Revision as of 15:29, 3 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0589 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1972 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.20 -- Hyderabad, November 25, 1972

সুতরাং আমি ভগবানের অস্তিত্বের সাথে মিশে যাব, এই যে বাসনা, আমি এক হয়ে যাব ...... ঠিক যেমন এই উদাহরণটি দেয়া হয় যে, আমি হচ্ছি এক বিন্দু জল এখন আমি বিশাল সমুদ্রে মিশে যাব, তাহলে আমিও সমুদ্র হয়ে যাব এই উদাহরণটা সাধারনত মায়াবাদী দার্শনিকেরা দিয়ে থাকে এক বিন্দু জল যখন সমুদ্রের সাথে মিশ্রিত হয় , তখন তারা এক হয়ে যায় এটা শুধু কল্পনা মাত্র। প্রতিটি জল কণা আণবিক। এখানে বহু পরিমান পৃথক আণবিক অংশ রয়েছে। এছাড়াও, ধর তুমি জলের সাথে মিশে গেলে, এবং ব্রহ্মের অস্তিত্ব, সমুদ্র বা সাগরের সাথে মিশে গেলে কিন্তু পুনরায় তুমি ঘনীভূত হতে থাকবে, কারণ জল সমুদ্র থেকে ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয় এবং আবার তা ভূমিতে নেমে আসে এবং আবার সমুদ্রে পতিত হয়। এটাই চলতে থাকে। এটাকে বলা হয় আগমা-গমন, আসা এবং পুনরায় মিশে যাওয়া। সুতরাং কি লাভ ? কিন্তু বৈষ্ণব দর্শন বলে যে আমরা জলের সাথে মিশে যেতে চাই না । আমরা সমুদ্রের মধ্যে একটি মাছ হতে চাই । এটা খুব সুন্দর। যদি কেউ মাছ হয়, ছোট অথবা বড়, সেটা কোন ব্যাপার নয়। তুমি যদি জলের গভীরে প্রবেশ কর, তবে সেখানে কোন ঘনীভবন নেই , তুমি সেখানেই থাকবে।

একইভাবে চিন্ময় জগত, ব্রহ্মজ্যোতি, যদি...... নির্ভেদ- ব্রহ্মানুসন্ধি যারা ব্রহ্মের অস্তিত্বের সাথে লীন হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের জন্য এটা খুব এটা নিরাপদ নয়। ভাগবতে এটা ব্যাখ্যা করা হয়েছেঃ বিমুক্ত-মানিন। বিমুক্ত-মানিন। তারা মনে করে যে , এখন আমি ব্রহ্ম জ্যোতিতে মিশে গেছি , আমি এখন নিরাপদ। না, এটা নিরাপদ নয়। কারণ এটা বলা হয়েছে, আরুহ্য কৃচ্ছ্রেণ পরং পদং ততঃ পতন্ত্য(শ্রীমদভাগবত ১০.২.৩২)। এমনকি কঠোর তপশ্চর্যা আর কৃচ্ছতা সাধনের পর কেউ সেখানে উন্নীত হতে পারে, পরম পদম। ব্রহ্মজ্যোতিতে লীন হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু তবুও সেখান থেকে তার পতন হবে, সে অধঃপতিত হবে। কারণ ব্রহ্ম বা চিন্ময় আত্মা হচ্ছে আনন্দময়। যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ বা পরমতত্ত্ব বা পরম পুরুষোত্তম ভগবান হচ্ছেন আনন্দময়োভ্যাসাৎ (বেদান্ত-সূত্র ১.১.১২) সৎ-চিদ-আনন্দ-বিগ্রহ (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.১)। তাই শুধুমাত্র ব্রহ্মের অস্তিত্বে সাথে মিশে গিয়ে কেউ আনন্দময় হতে পারে না। যেমন ধর তুমি আকাশের অনেক উঁচুতে উঠেছ কিন্তু শুধু আকাশে থাকাটাই আনন্দময় নয়। যদি তুমি কোন গ্রহে আশ্রয় লাভ করতে পার তবে সেটা হবে আনন্দময়। অন্যথায় তোমাকে পুনরায় এই গ্রহে ফিরে আসতে হবে। সুতরাং যা নির্বিশেষ, বৈচিত্রহীন সেখানে কোন আনন্দ থাকতে পারে না। বৈচিত্র আনন্দের জননী। এভাবে আমরা চেষ্টা করছি...... আমরা এই জড় বৈচিত্রের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। তাই কেউ কেউ এই বৈচিত্রকে শুন্য আবার কেউ অব্যক্ত বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। কিন্তু এটা আমাদেরকে যথাযথ চিন্ময় আনন্দ প্রদান করতে পারবে না। তুমি যদি ব্রহ্ম জ্যোতিতে পার এবং সেখানে শ্রীকৃষ্ণ বা নারায়ণের আশ্রয় গ্রহণ করতে পার...... ব্রহ্ম জ্যোতিতে অস্যংখ্য গ্রহ রয়েছে। তাদেরকে বলা হয় বৈকুণ্ঠলোক। আর সর্বোচ্চ বৈকুণ্ঠলোককে বলা হয় গোলোকবৃন্দাবন। তাই তুমি যদি এই সমস্ত গ্রহের কোন একটিতে আশ্রয় লাভ করার মতো যথেষ্ট সৌভাগ্যবান হও, তাহলে তুমি জ্ঞানের আনন্দময় অবস্থায় চির সুখী হবে। অন্যথায় শুধুমাত্র ব্রহ্মজ্যোতিতে মিশে থাকাটাই নিরাপদ নয়। কারণ আমরা আনন্দ চাই, কিন্তু অব্যক্ত শুন্য অবস্থায় কোন আনন্দ থাকতে পারে না। কিন্তু যেহেতু বৈকুণ্ঠ জগত সম্বন্ধে আমাদের কোন তথ্য জানা নেই, তাই মায়াবাদী দার্শনিকেরা তারা ফিরে আসে, পুনরায় জড়জগতে অধঃপতিত হয়। আরুহ্য কৃচ্ছ্রেণ পরং পদং ততঃ পতন্ত্য অধঃ(শ্রীমদ্ভাগবত ১০.২.৩২) অধঃ মানে এই জড়জগত, যেটা আমি অনেকবার ব্যাখ্যা করেছি। এখানে অনেক বড় বড় সন্ন্যাসী আছে, তারা এই জড়জগতকে মিথ্যা বলে ত্যাগ করে। জগত মিথ্যা। এবং সন্ন্যাস গ্রহণ করে। কিন্তু কিছুদিন পর আবার সমাজ সেবা বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে আসে। কারণ তারা উপলব্ধি করতে পারে নি যে ব্রহ্ম কি। তারা আনন্দ পাওয়ার জন্য এইসমস্ত জড়জাগতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। কারণ আনন্দ...... আমরা চাই আনন্দময়োভ্যাসাৎ (বেদান্ত সূত্র ১.১.১২)। সুতরাং যদি কোন চিন্ময় আনন্দ না থাকে তবে সেখানে, তারা নিশ্চিতরূপে নিকৃষ্টা প্রকৃতিতে ফিরে আসবে, এই জড়জগত হচ্ছে নিকৃষ্টা প্রকৃতি, অপরা যদি আমরা চিন্ময় আনন্দ বা উচ্চতর আনন্দ না পাই, তবে আমাদের জড় আনন্দ পেতে হবে। কারণ আমরা আনন্দ চাই, প্রত্যেকেই আনন্দের অনুসন্ধান করছে।