BN/Prabhupada 0594 - চিন্ময় আত্মাকে আমাদের জড় যন্ত্রপাতির দ্বারা মাপা অসম্ভব

Revision as of 16:13, 3 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0594 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1972 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.23 -- Hyderabad, November 27, 1972

তাই নেতিবাচকতার মাধ্যমে সংজ্ঞা দান। আমরা সরাসরিভাবে এই চিদ্‌কণার মূল্য অনুধাবন করতে পারিনা, যা আমাদের দেহের অভ্যন্তরে রয়েছে। কারণ আমাদের পার্থিব যন্ত্রের দ্বারা চিন্ময় আত্মার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ্য পরিমাপ করা অসম্ভব। যদিও বিজ্ঞানীরা বলে যে তারা এটি পরিমাপ করতে পারে। যাই হোক, যদি তা সম্ভব হয়ও, তাহলে সর্বপ্রথমে আমাদেরকে দেখতে হবে আত্মা কোথায় অবস্থিত। তখন তুমি এটার পরিমাপ করার উদ্যোগ নিতে পার। প্রথমত, তুমি তাকে দেখতেই পাবে না। কারণ এটি খুবই খুবই ছোট, একটি চুলের অগ্রভাগের দশহাজার ভাগের একভাগ। যেহেতু আমরা দেখতে পারিনা, তাই আমরা আমাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দ্বারা তা অনুধাবনও করতে পারিনা। তাই শ্রীকৃষ্ণ নিজে আত্মার অস্তিত্ব নেতিবাচকভাবে বর্ণনা করেছেনঃ "এটি তা নয়।" অনেক সময় যখন আমরা বুঝতে পারিনা, তখন ব্যাখ্যাটা এভাবে দেয়া হয়ঃ "এটি তা নয়।" যদি আমি ব্যক্ত করতে না পারি যে এটি কি, তখন আমরা নেতিবাচকভাবে এটিকে প্রকাশ করতে পারি যে " এটি এরকম নয়।" তো এই যে " তা নয় " টা কি? এই " তা নয় " টা হচ্ছে " এটি জড় পদার্থ নয়।" চিন্ময় আত্মা জড় বস্তু নয়। কিন্তু আমাদের জড় বস্তুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাহলে কিভাবে বুঝব যে এটি নেতিবাচক? পরবর্তী শ্লোকেই তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি। (BG 2.23) তুমি চিন্ময় আত্মাকে কোন অস্ত্র, ছুরি, তলোয়ার বা ক্ষুর দিয়ে কাটতে পারবেনা। এটি সম্ভব নয়। নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি। মায়াবাদ দর্শন বলে যে " আমি ব্রহ্ম। মায়াগ্রস্ত হওয়ার কারণে আমি মনে করছি যে, আমি ভিন্ন। অন্যথায় আমি এক।" কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে মমৈবাংশ জীবভূতঃ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ১৫.৭)। তো এর মানে কি এটি বোঝায় যে, একটি সম্পূর্ণ চিন্ময় আত্মা থেকে একটি কণাকে কেটে টুকরো করে আলাদা করা হয়েছে? না। নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি। (BG 2.23) এটিকে কেটে টুকরো করা যায় না। তাহলে? তাহলে উত্তরটি হচ্ছে চিন্ময় আত্মা কণা নিত্য। এমন নয় যে মায়ার কারণে তা বিভক্ত হয়েছে। না। এটি কিভাবে হতে পারে? কারণ এটিকে তো টুকরো টুকরো করে কাটা যায়না।

যদি আমি বলি ...... ঠিক যেমন তারা যুক্তি দেখায়ঃ ঘটাকাশ পটাকাশ, ঘটের ভিতরের আকাশ আর ঘটের বাইরের আকাশ। পাত্রটার দেয়ালের কারণে ভিতরের আকাশ আলাদা হয়ে গেছে। কিন্তু এটি কিভাবে আলাদা হতে পারে? এটিকে টুকরো টুকরো করে কাটা যায় না। যুক্তির খাতিরে...... প্রকৃতপক্ষে আমরা চিন্ময় আত্মার অতি অতি নগণ্য অংশ, আণবিক কণা। তাই ...... আর তারা হচ্ছে নিত্য অংশ। এমন নয় যে পরিস্থিতির কারণে তা আলাদা হয়েছে এবং আবার তা জোড়া লেগে যেতে পারে। এটি যুক্ত হতে পারে কিন্তু একীভূত বা সমসত্ত্ব হয়ে নয় বা মিশে গিয়ে নয়। না। এমনকি যদি এটি যুক্ত হয়ও , তবু আত্মা তার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখে। ঠিক যেমন একটি সবুজ পাখি, সে যখন একটি গাছে প্রবেশ করে, তখন মনে হয় যেন পাখিটি এখন গাছের সাথে মিশে গেছে, কিন্তু এটি এরকম নয়। পাখিটি গাছের মধ্যেও তার অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। এটিই হচ্ছে সিদ্ধান্ত। যদিও গাছ এবং পাখি উভয়ই সবুজ রঙের হওয়ার কারণে মনে হচ্ছে যে পাখিটি এখন গাছের সাথে মিশে গেছে, এই মিশে যাওয়া এটি বোঝায় না যে, পাখি এবং গাছ এক হয়ে গেছে। না। এটি এরকম মনে হয়। কারণ তারা উভয়ই একই রঙের, এরকম মনে হয় যে পাখিটি ...... পাখিটির আর কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু এটি সত্য নয়। পাখিটি...... একইভাবে আমরা হচ্ছি স্বতন্ত্র চিন্ময় আত্মা। গুণ এক, বলা যায় সবুজতা, যখন কেউ ব্রহ্মজ্যোতিতে মিশে যায়, জীবাত্মা তার স্বতন্ত্র পরিচয় হারিয়ে ফেলে না। যেহেতু সে তার পরিচয় হারিয়ে ফেলে না এবং যেহেতু জীব প্রকৃতিগতভাবেই আনন্দময়, তাই সে অব্যক্ত ব্রহ্মজ্যোতিতে বেশী দিন অবস্থান করতে পারেনা। কারণ সে আনন্দ খুঁজে বেড়ায়। আর আনন্দ মানে বৈচিত্রতা।