BN/Prabhupada 0621 - কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী হতে শিক্ষা দেয়।: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0621 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1975 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 8: Line 8:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0620 - उसके गुण और कर्म के अनुसार वह एक विशेष व्यावसायिक कर्तव्य में लगा हुअा है|0620|HI/Prabhupada 0622 - जो कृष्ण भावनामृत में लगे हुए हैं, उनके साथ अपना संग करो|0622}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0620 - আপনার গুণ ও কর্ম অনুসারে আপনি একটি নির্দিষ্ট কর্তব্যে নিয়োজিত আছেন|0620|BN/Prabhupada 0622 - যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সঙ্গ করুন|0622}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 18: Line 18:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|N7O4CJGuoRo|কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী হতে শিক্ষা দেয়। <br />- Prabhupāda 0621}}
{{youtube_right|kVX9LfYWaoc|কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী হতে শিক্ষা দেয়<br />- Prabhupāda 0621}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 30: Line 30:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন শিক্ষা দিচ্ছে কিভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী ও শরণাগত হতে হয়। সেটি হচ্ছে জ্ঞানের সূচনা। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া ([[Vanisource:BG 4.34 (1972)|গীতা ৪.৩৪]]) আপনি যদি চিন্ময় বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে চান, যা কি না আপনার চিন্তাশক্তি, অনুভবশক্তি এবং ইচ্ছাশক্তির অতীত... মানসিক জল্পনা মানে চিন্তা, অনুভব ও ইচ্ছা করা, মনস্তত্ত্ব। কিন্তু যে বিষয়বস্তুটি আপনার চিন্তারও অতীত... সুতরাং ভগবান অথবা ভগবান সম্পর্কিত যে কোন কিছুই আমাদের চিন্তা, জল্পনা-কল্পনারও অতীত। তাই আমাদের এই জ্ঞান অত্যন্ত বিনয়ী হয়েই লাভ করতে হবে।  
আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন শিক্ষা দিচ্ছে কিভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী ও শরণাগত হতে হয়। সেটি হচ্ছে জ্ঞানের সূচনা। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া ([[Vanisource:BG 4.34 (1972)|গীতা ৪.৩৪]]) আপনি যদি চিন্ময় বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে চান, যা কি না আপনার চিন্তাশক্তি, অনুভবশক্তি এবং ইচ্ছাশক্তির অতীত... মানসিক জল্পনা মানে চিন্তা, অনুভব ও ইচ্ছা করা, মনস্তত্ত্ব। কিন্তু যে বিষয়বস্তুটি আপনার চিন্তারও অতীত... সুতরাং ভগবান অথবা ভগবান সম্পর্কিত যে কোন কিছুই আমাদের চিন্তা, জল্পনা-কল্পনারও অতীত। তাই আমাদের এই জ্ঞান অত্যন্ত বিনয়ী হয়েই লাভ করতে হবে। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন। প্রণিপাত মানে শরণাগত হওয়া। প্রকৃষ্টরূপেন নিপাত। 'নিপাত' মানে অনুগত হওয়া। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন ([[Vanisource:BG 4.34 (1972)|গীতা ৪.৩৪]])। প্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের কর যার কাছে তুমি পূর্ণরূপে শরণাগত হতে পারবে। তারপর চিন্ময় বিষয়বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পার।


তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন। প্রণিপাত মানে শরণাগত হওয়া। প্রকৃষ্টরূপেন নিপাত। 'নিপাত' মানে অনুগত হওয়া। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন (গীতা ৪.৩৪)। প্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের কর যার কাছে তুমি পূর্ণরূপে শরণাগত হতে পারবে। তারপর চিন্ময় বিষয়বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পার। ঠিক যেমন অর্জুন কঠোরভাবে অনুসরণ করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথমে শ্রীকৃষ্ণের কাছে শরণাগত হয়েছিলেন। শিষ্যস্তেহম্ শাধি মাম্ প্রপন্নম্। ([[Vanisource:BG 2.7 (1972)|গীতা ২.৭]]) "হে প্রিয় কৃষ্ণ, আমরা বন্ধুঢ় মতো কথা বলছি, সমপর্যায়ের ভাবে। তাই তুমি কিছু বলবে আর আমিও কিছু বলব। এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের সময়টাই শুধু নষ্ট হবে, আর কোন সিদ্ধান্ত আসবে না। তাই আমি আপনার কাছে শিষ্যরূপে শরণাগত হলাম। আপনি যাই বলবেন, আমি তাই গ্রহণ করব।"এটি হচ্ছে প্রথম শর্ত।  
ঠিক যেমন অর্জুন কঠোরভাবে অনুসরণ করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথমে শ্রীকৃষ্ণের কাছে শরণাগত হয়েছিলেন। শিষ্যস্তেহম্ শাধি মাম্ প্রপন্নম্। ([[Vanisource:BG 2.7 (1972)|গীতা ২.৭]]) "হে প্রিয় কৃষ্ণ, আমরা বন্ধুঢ় মতো কথা বলছি, সমপর্যায়ের ভাবে। তাই তুমি কিছু বলবে আর আমিও কিছু বলব। এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের সময়টাই শুধু নষ্ট হবে, আর কোন সিদ্ধান্ত আসবে না। তাই আমি আপনার কাছে শিষ্যরূপে শরণাগত হলাম। আপনি যাই বলবেন, আমি তাই গ্রহণ করব।"এটি হচ্ছে প্রথম শর্ত। প্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের করুন যার ওপর আপনার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে এবং তিনি যা বলবেন আপনি তাই-ই গ্রহণ করব। এই হচ্ছে গুরুদেব। যদি তুমি মনে কর তুমি গুরুর চেয়ে ভাল জানো, তাহলে কোনও লাভ নেই। সর্বপ্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের কর, যে তোমার চেয়ে উন্নত। তারপর তাঁর কাছে শরণাগত হও। তাই নিয়ম হচ্ছে কেউ যেন অন্ধের মত গুরু নির্বাচন না করে। আর কারোরই অন্ধভাবে শিষ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। তাঁদের যথাযথভাবে আচরণ করা উচিত, কমপক্ষে ১ বছর। যাতে করে আকাঙ্ক্ষী শিষ্যটিও বুঝতে পারে, "আমি কি এই ব্যক্তিকে আমার গুরুরূপে গ্রহণ করতে পারি কি না," এবং সম্ভাব্য গুরুও সেই ব্যক্তিকে বুঝতে  পারবেন, "এই ব্যক্তি আমার শিষ্য হতে পারবে কিনা।" শ্রীহরিভক্তিবিলাসে শ্রীল সনাতন গোস্বামী এই এই নির্দেশ দিয়েছেন। এখানে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে তাঁর গুরুরূপে বরণ করে নিচ্ছেন। আর তিনি বিনয়ের সাথে বলছেন, "প্রকৃতং পুরুষং চৈব।" প্রকৃতি, প্রকৃতি মানে কোন কিছুর স্বভাব বা প্রকৃতি, আর পুরুষ মানে সেই প্রকৃতির ভোক্তা। ঠিক যেমন এই জড় জগতে, বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে, তারা অনুন্নত দেশগুলোকে উন্নত করতে খুব পছন্দ করে। তার মানে তারা ভোগ করছে, শোষণ করছে, পুরুষ বা ভোক্তা হতে চাচ্ছে। আপনারা  মার্কিনীরা ইউরোপ থেকে এসেছেন এবং এখন আপনারা মার্কিন দেশটি উন্নত করেছেন। অনেক সুন্দর সুন্দর শব্দ, শহর, আর অনেক উন্নতিও হয়েছে। একে বলা হয় সম্পদের ভোগ। সুতরাং প্রকৃতি এবং আমরা, বিশেষ করে আমরা মানুষেরা হলাম পুরুষ। কিন্তু আসলে আমরা ভোক্তা নই, আমরা মিথ্যা ভোক্তা। আমরা এই ইন্দ্রিয়ের বশীভূত হয়ে ভোক্তা নই। ধরুন আপনারা আমেরিকানরা, আপনারা এই আমেরিকা নামের ভূখণ্ডটিকে  সুন্দর করে উন্নয়ন করেছেন । কিন্তু আপনি তা উপভোগ করতে পারবেন না। আপনারা ভাবছেন আপনারা উপভোগ করছেন, কিন্তু আপনারা উপভোগ করতে পারেন না। কিছুদিন পরে আপনাকে লাথি মেরে বের করে দেয়া হবে, "বেরিয়ে যাও"। তাহলে কিভাবে আপনি উপভোক্তা হলেন? আপনি ভাবতে পারেন, "কমপক্ষে ৫০ বছর বা ১০০ বছরের জন্য তো আমিই ভোগ করছি"। তাই আপনি আপনি বলতে পারেন যে আপনি সুখভোগ করছেন, তথাকথিত সুখভোগ। কিন্তু আপনি চিরস্থায়ী উপভোক্তা হতে পারেন না। সেটি সম্ভব নয়।  
 
প্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের করুন যার ওপর আপনার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে এবং তিনি যা বলবেন আপনি তাই-ই গ্রহণ করব। এই হচ্ছে গুরুদেব। যদি তুমি মনে কর তুমি গুরুর চেয়ে ভাল জানো, তাহলে কোনও লাভ নেই। সর্বপ্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের কর, যে তোমার চেয়ে উন্নত। তারপর তাঁর কাছে শরণাগত হও। তাই নিয়ম হচ্ছে কেউ যেন অন্ধের মত গুরু নির্বাচন না করে। আর কারোরই অন্ধভাবে শিষ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। তাঁদের যথাযথভাবে আচরণ করা উচিত, কমপক্ষে ১ বছর। যাতে করে আকাঙ্ক্ষী শিষ্যটিও বুঝতে পারে, "আমি কি এই ব্যক্তিকে আমার গুরুরূপে গ্রহণ করতে পারি কি না," এবং সম্ভাব্য গুরুও সেই ব্যক্তিকে বুঝতে  পারবেন, "এই ব্যক্তি আমার শিষ্য হতে পারবে কিনা।" শ্রীহরিভক্তিবিলাসে শ্রীল সনাতন গোস্বামী এই এই নির্দেশ দিয়েছেন।  
 
এখানে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে তাঁর গুরুরূপে বরণ করে নিচ্ছেন। আর তিনি বিনয়ের সাথে বলছেন, "প্রকৃতং পুরুষং চৈব।" প্রকৃতি, প্রকৃতি মানে কোন কিছুর স্বভাব বা প্রকৃতি, আর পুরুষ মানে সেই প্রকৃতির ভোক্তা। ঠিক যেমন এই জড় জগতে, বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে, তারা অনুন্নত দেশগুলোকে উন্নত করতে খুব পছন্দ করে। তার মানে তারা ভোগ করছে, শোষণ করছে, পুরুষ বা ভোক্তা হতে চাচ্ছে। আপনারা  মার্কিনীরা ইউরোপ থেকে এসেছেন এবং এখন আপনারা মার্কিন দেশটি উন্নত করেছেন। অনেক সুন্দর সুন্দর শব্দ, শহর, আর অনেক উন্নতিও হয়েছে। একে বলা হয় সম্পদের ভোগ। সুতরাং প্রকৃতি এবং আমরা, বিশেষ করে আমরা মানুষেরা হলাম পুরুষ। কিন্তু আসলে আমরা ভোক্তা নই, আমরা মিথ্যা ভোক্তা। আমরা এই ইন্দ্রিয়ের বশীভূত হয়ে ভোক্তা নই।  
 
ধরুন আপনারা আমেরিকানরা, আপনারা এই আমেরিকা নামের ভূখণ্ডটিকে  সুন্দর করে উন্নয়ন করেছেন । কিন্তু আপনি তা উপভোগ করতে পারবেন না। আপনারা ভাবছেন আপনারা উপভোগ করছেন, কিন্তু আপনারা উপভোগ করতে পারেন না। কিছুদিন পরে আপনাকে লাথি মেরে বের করে দেয়া হবে, "বেরিয়ে যাও"। তাহলে কিভাবে আপনি উপভোক্তা হলেন? আপনি ভাবতে পারেন, "কমপক্ষে ৫০ বছর বা ১০০ বছরের জন্য তো আমিই ভোগ করছি"। তাই আপনি আপনি বলতে পারেন যে আপনি সুখভোগ করছেন, তথাকথিত সুখভোগ। কিন্তু আপনি চিরস্থায়ী উপভোক্তা হতে পারেন না। সেটি সম্ভব নয়।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:11, 29 June 2021



Lecture on BG 13.1-2 -- Miami, February 25, 1975

আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন শিক্ষা দিচ্ছে কিভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী ও শরণাগত হতে হয়। সেটি হচ্ছে জ্ঞানের সূচনা। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া (গীতা ৪.৩৪) আপনি যদি চিন্ময় বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে চান, যা কি না আপনার চিন্তাশক্তি, অনুভবশক্তি এবং ইচ্ছাশক্তির অতীত... মানসিক জল্পনা মানে চিন্তা, অনুভব ও ইচ্ছা করা, মনস্তত্ত্ব। কিন্তু যে বিষয়বস্তুটি আপনার চিন্তারও অতীত... সুতরাং ভগবান অথবা ভগবান সম্পর্কিত যে কোন কিছুই আমাদের চিন্তা, জল্পনা-কল্পনারও অতীত। তাই আমাদের এই জ্ঞান অত্যন্ত বিনয়ী হয়েই লাভ করতে হবে। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন। প্রণিপাত মানে শরণাগত হওয়া। প্রকৃষ্টরূপেন নিপাত। 'নিপাত' মানে অনুগত হওয়া। তদবিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন (গীতা ৪.৩৪)। প্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের কর যার কাছে তুমি পূর্ণরূপে শরণাগত হতে পারবে। তারপর চিন্ময় বিষয়বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পার।

ঠিক যেমন অর্জুন কঠোরভাবে অনুসরণ করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথমে শ্রীকৃষ্ণের কাছে শরণাগত হয়েছিলেন। শিষ্যস্তেহম্ শাধি মাম্ প্রপন্নম্। (গীতা ২.৭) "হে প্রিয় কৃষ্ণ, আমরা বন্ধুঢ় মতো কথা বলছি, সমপর্যায়ের ভাবে। তাই তুমি কিছু বলবে আর আমিও কিছু বলব। এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের সময়টাই শুধু নষ্ট হবে, আর কোন সিদ্ধান্ত আসবে না। তাই আমি আপনার কাছে শিষ্যরূপে শরণাগত হলাম। আপনি যাই বলবেন, আমি তাই গ্রহণ করব।"এটি হচ্ছে প্রথম শর্ত। প্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের করুন যার ওপর আপনার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে এবং তিনি যা বলবেন আপনি তাই-ই গ্রহণ করব। এই হচ্ছে গুরুদেব। যদি তুমি মনে কর তুমি গুরুর চেয়ে ভাল জানো, তাহলে কোনও লাভ নেই। সর্বপ্রথমে এমন কাউকে খুঁজে বের কর, যে তোমার চেয়ে উন্নত। তারপর তাঁর কাছে শরণাগত হও। তাই নিয়ম হচ্ছে কেউ যেন অন্ধের মত গুরু নির্বাচন না করে। আর কারোরই অন্ধভাবে শিষ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। তাঁদের যথাযথভাবে আচরণ করা উচিত, কমপক্ষে ১ বছর। যাতে করে আকাঙ্ক্ষী শিষ্যটিও বুঝতে পারে, "আমি কি এই ব্যক্তিকে আমার গুরুরূপে গ্রহণ করতে পারি কি না," এবং সম্ভাব্য গুরুও সেই ব্যক্তিকে বুঝতে পারবেন, "এই ব্যক্তি আমার শিষ্য হতে পারবে কিনা।" শ্রীহরিভক্তিবিলাসে শ্রীল সনাতন গোস্বামী এই এই নির্দেশ দিয়েছেন। এখানে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে তাঁর গুরুরূপে বরণ করে নিচ্ছেন। আর তিনি বিনয়ের সাথে বলছেন, "প্রকৃতং পুরুষং চৈব।" প্রকৃতি, প্রকৃতি মানে কোন কিছুর স্বভাব বা প্রকৃতি, আর পুরুষ মানে সেই প্রকৃতির ভোক্তা। ঠিক যেমন এই জড় জগতে, বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে, তারা অনুন্নত দেশগুলোকে উন্নত করতে খুব পছন্দ করে। তার মানে তারা ভোগ করছে, শোষণ করছে, পুরুষ বা ভোক্তা হতে চাচ্ছে। আপনারা মার্কিনীরা ইউরোপ থেকে এসেছেন এবং এখন আপনারা মার্কিন দেশটি উন্নত করেছেন। অনেক সুন্দর সুন্দর শব্দ, শহর, আর অনেক উন্নতিও হয়েছে। একে বলা হয় সম্পদের ভোগ। সুতরাং প্রকৃতি এবং আমরা, বিশেষ করে আমরা মানুষেরা হলাম পুরুষ। কিন্তু আসলে আমরা ভোক্তা নই, আমরা মিথ্যা ভোক্তা। আমরা এই ইন্দ্রিয়ের বশীভূত হয়ে ভোক্তা নই। ধরুন আপনারা আমেরিকানরা, আপনারা এই আমেরিকা নামের ভূখণ্ডটিকে সুন্দর করে উন্নয়ন করেছেন । কিন্তু আপনি তা উপভোগ করতে পারবেন না। আপনারা ভাবছেন আপনারা উপভোগ করছেন, কিন্তু আপনারা উপভোগ করতে পারেন না। কিছুদিন পরে আপনাকে লাথি মেরে বের করে দেয়া হবে, "বেরিয়ে যাও"। তাহলে কিভাবে আপনি উপভোক্তা হলেন? আপনি ভাবতে পারেন, "কমপক্ষে ৫০ বছর বা ১০০ বছরের জন্য তো আমিই ভোগ করছি"। তাই আপনি আপনি বলতে পারেন যে আপনি সুখভোগ করছেন, তথাকথিত সুখভোগ। কিন্তু আপনি চিরস্থায়ী উপভোক্তা হতে পারেন না। সেটি সম্ভব নয়।