BN/Prabhupada 0630 - অনুতাপ করার কোন কারণ নেই, কারণ আত্মা অবিনাশী

Revision as of 12:54, 26 January 2019 by Anurag (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0630 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.28 -- London, August 30, 1973

ভক্তঃ অনুবাদ - "সমস্ত সৃষ্ট জীব উৎপন্ন হওয়ার আগে অপ্রকাশিত ছিল, তাদের স্থিতিকালে প্রকাশিত থাকে, এবং বিনাশের পর আবার অপ্রকাশিত হয়ে যায়। সুতরাং, সেই জন্য শোক করার কি কারণ?"

শ্রীল প্রভুপাদঃ সুতরাং আত্মা হচ্ছে চিরন্তন। তাই শোক করার কোনই কারণ নেই। কারণ আত্মা অবিনাশী। এমন কি এই দেহের বিনাশ হলেও শোক করার কোনও কারণ নেই। আর যারা বিশ্বাস করে না, তারা ভাবে যে "আত্মা বলে কিছু ছিল না, শুরুতে সবকিছু শুন্য ছিল..." তার মানে শুরুতে শুন্য ছিল, তারপর মাঝখানে তা প্রকাশিত হল, আর তারপর আবার তা শুন্য হয়ে গেল। অর্থাৎ শুন্য থেকে শুন্য; তবে শোক করার কারণ কি? শ্রীকৃষ্ণ এই যুক্তিটি দিচ্ছেন। উভয়ভাবেই তুমি শোক করতে পারো না। তাহলে?

প্রদ্যুম্নঃ (তাৎপর্য) তবুও এমনকি যদি তর্কের খাতিরে এই নাস্তিক মতবাদকে সত্য বলে গ্রহণ করা হয়, তা হলেও অনুশোচনা করার কোনই কারণ নেই। আত্মার স্বতন্ত্র অস্তিত্বের কথা ছেড়ে দিলেও সৃষ্টির পূর্বে জড় উপাদানগুলি অব্যক্ত থাকে। এই সূক্ষ্ম অব্যক্তি থেকে আকারের প্রকাশ হয়, যেমন আকাশ থেকে বায়ুর উদ্ভব হয়, বায়ু থেকে অগ্নি, অগ্নি থেকে জল, এবং জল থেকে মাটির উদ্ভব হয়। এই মাটি থেকে নানা রূপের উদ্ভব হয়..."

শ্রীল প্রভুপাদঃ এই হচ্ছে সৃষ্টির প্রক্রিয়া। আকাশ থেকে, বায়ু, তারপর অগ্নি, তারপর জল, এবং তারপর মাটি। এটি হচ্ছে সৃষ্টি প্রক্রিয়া। হ্যাঁ।

প্রদ্যুম্নঃ উদাহরণস্বরূপ মাটি থেকে একটি গগনচুম্বী প্রাসাদ তৈরি হয়। এখন এটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, সমস্ত প্রকাশটি আবারও অপ্রকাশিত হয়ে যায় এবং চরমে অণু-পরমাণু রূপে রয়ে যায়। শক্তি সংরক্ষণের নীতি বর্তমানই থাকে, কেবল সময়ের প্রভাবে তার রূপের প্রকাশ ও অন্তর্ধান হয়। সেটিই হচ্ছে পার্থক্য। সুতরাং এই আবির্ভাব এবং অন্তর্ধানের জন্য শোক করার কি কারণ থাকতে পারে? যে কোনও ভাবেই হোক না কেন, এমন কি অব্যক্ত অবস্থাতেও বস্তুর বিনাশ হয় না। আদিতে এবং অন্তে জড় উপাদানগুলির অপ্রকাশিত থাকে, এবং কেবল মাঝের সময়টুকুতে সেগুলি প্রকাশ হয় এবং এর ফলে কোন জড়-জাগতিক পার্থক্য সূচিত হয় না। আর আমরা যদি ভগবদ্গীতায় উক্ত বৈদিক সিদ্ধান্তকে মেনে নিই, অর্থাৎ অন্তবন্ত ইমে দেহাঃ যে এই জড় দেহটি কালের প্রভাবে বিনষ্ট হবে - নিত্যোস্যোক্তাঃ

শরীরিণঃ - কিন্তু আত্মা চিরশাশ্বত, তা হলে আমাদের অবশ্যই তা মনে রাখা উচিৎ যে এই দেহটি একটি পোশাকের মতো। তাই এই পোশাকটির পরিবর্তনের জন্য কেন আমরা শোক করব? নিত্য আত্মার পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করে দেখলে, এই জড় দেহের যথার্থই কোন অস্তিত্ব নেই। এটি অনেকটা স্বপ্নের মতো। স্বপ্নে যেমন আমরা কখনও দেখি, আকাশে উড়ছি অথবা রাজা হয়ে সিংহাসনে বসে আছি, কিন্তু যখন ঘুম ভেঙ্গে যায়, তখন বুঝতে পারি, আমরা আকাশেও উড়ি নি অথবা রাজা হয়ে সিংহাসনেও বসি নি। বৈদিক জ্ঞান আমাদের জড় দেহের অনিত্যতার প্রেক্ষিতে আত্ম-তত্ত্বজ্ঞান উপলব্ধি করতে অনুপ্রাণিত করে। সুতরাং, কেউ আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাস করুক অথবা অবিশ্বাস করুক না কেন, যে কোনও অবস্থাতেই, জড় দেহের বিনাশের জন্য শোক করার কোন কারণ নেই।"