BN/Prabhupada 0632 - যদি আমি উপলব্ধি করতে পারি যে আমি এই দেহটি নই, তবে আমি প্রকৃতির তিন গুণের উর্ধ্বে উঠতে পারব: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0632 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 7: Line 7:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0631 - আমি চিরন্তন, কিন্তু এই দেহ চিরন্তন নয়, এটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য|0631|BN/Prabhupada 0633 - আমরা শ্রীকৃষ্ণের এক একটি আলোকোজ্জ্বল স্ফুলিঙ্গ মাত্র|0633}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0631 - मैं शाश्वत हूँ, शरीर शाश्वत नहीं है । यह तथ्य है|0631|HI/Prabhupada 0633 - हम कृष्ण की चमकति चिंगारी जैसे हैं|0633}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 19: Line 17:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|p3alc-mbKpE|যদি আমি উপলব্ধি করতে পারি যে আমি এই দেহটি নই, তবে আমি প্রকৃতির তিন গুণের উর্ধ্বে উঠতে পারব <br/> - Prabhupāda 0632}}
{{youtube_right|hvxtAF4fa0o|যদি আমি উপলব্ধি করতে পারি যে আমি এই দেহটি নই, তবে আমি প্রকৃতির তিন গুণের উর্ধ্বে উঠতে পারব<br/> - Prabhupāda 0632}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 31: Line 29:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
সেই জন্য শঙ্করাচার্য এই মতবাদ দিলেন যে "ব্রহ্ম সত্যং জগন্মিথ্যা"। ব্রহ্ম অর্থ হচ্ছে আত্মা হচ্ছে প্রকৃত সত্য, তিনি কোন জাগতিক প্রকাশ নন। তিনি অবশ্য জড় জাগতিক প্রকাশকে মিথ্যা বলছেন। কিন্তু আমরা সেটি মিথ্যা বলি না, আমরা বলি ক্ষণস্থায়ী। সুতরাং আমাদের মূল ভাবার বিষয়টি হল আমি ক্ষণস্থায়ী নই, আমার এই দেহটি ক্ষণস্থায়ী। এখন আমি দেহের জন্য কাজ করছি। সেটি হচ্ছে মায়া। অহং মমেতি ([[Vanisource:SB 5.5.8|শ্রীমদ্ভাগবত ৫.৫.৮]])
সেই জন্য শঙ্করাচার্য এই মতবাদ দিলেন যে "ব্রহ্ম সত্যং জগন্মিথ্যা"। ব্রহ্ম অর্থ হচ্ছে আত্মা হচ্ছে প্রকৃত সত্য, তিনি কোন জাগতিক প্রকাশ নন। তিনি অবশ্য জড় জাগতিক প্রকাশকে মিথ্যা বলছেন। কিন্তু আমরা সেটি মিথ্যা বলি না, আমরা বলি ক্ষণস্থায়ী। সুতরাং আমাদের মূল ভাবার বিষয়টি হল আমি ক্ষণস্থায়ী নই, আমার এই দেহটি ক্ষণস্থায়ী। এখন আমি দেহের জন্য কাজ করছি। সেটি হচ্ছে মায়া। অহং মমেতি ([[Vanisource:SB 5.5.8|শ্রীমদ্ভাগবত ৫.৫.৮]]) তাহলে সত্য বস্তুটি কি? সত্যিটি হচ্ছে আমি হলাম চিন্ময় কণ। এবং পূর্ণ চেতন হচ্ছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। সুতরাং ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আমার কর্তব্য হচ্ছে ভগবানের সেবা করা। সেটিই হচ্ছে পারমার্থিক জীবন, ভক্তিযোগ। সেটিকে বলা হচ্ছে স্বরূপ। ভগবদ্গীতার আরেকটি জায়গায় বলা হয়েছে, স গুণান্ সমতিতৈতান ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে ([[Vanisource:BG 14.26 (1972)|গীতা ১৪.২৬]]) যেই মুহূর্তে আমি এই কথাটি উপলব্ধি করতে পারবো যে আমি এই জড় দেহটি নই, তাহলে তৎক্ষণাৎ আমি এই প্রকৃতির তিনটি গুণ, সত্ত্ব, রজ এবং তম গুণের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারবো। এই দেহাত্মবুদ্ধিজাত জীবনের ধারণায় আমি জড়া প্রকৃতির যে কোন একটি গুণের প্রভাবে রয়েছি এবং সেই ভাবেই কর্ম করছি।  
 
তাহলে সত্য বস্তুটি কি? সত্যিটি হচ্ছে আমি হলাম চিন্ময় কণ। এবং পূর্ণ চেতন হচ্ছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। সুতরাং ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আমার কর্তব্য হচ্ছে ভগবানের সেবা করা। সেটিই হচ্ছে পারমার্থিক জীবন, ভক্তিযোগ। সেটিকে বলা হচ্ছে স্বরূপ। ভগবদ্গীতার আরেকটি জায়গায় বলা হয়েছে, স গুণান্ সমতিতৈতান ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে ([[Vanisource:BG 14.26 (1972)|গীতা ১৪.২৬]]) যেই মুহূর্তে আমি এই কথাটি উপলব্ধি করতে পারবো যে আমি এই জড় দেহটি নই, তাহলে তৎক্ষণাৎ আমি এই প্রকৃতির তিনটি গুণ, সত্ত্ব, রজ এবং তম গুণের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারবো। এই দেহাত্মবুদ্ধিজাত জীবনের ধারণায় আমি জড়া প্রকৃতির যে কোন একটি গুণের প্রভাবে রয়েছি এবং সেই ভাবেই কর্ম করছি।  
 
শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হয়েছে যে, যয়া সম্মোহিতো জীব আত্মানং ত্রি-গুণাত্মকং মনুতে অনর্থং ([[Vanisource:SB 1.7.5|ভাগবত ১.৭.৫]]) তাই যেহেতু আমি এই জড় দেহটি গ্রহণ করেছি যা কি না জড়া প্রকৃতির তিনটি গুণের দ্বারা রচিত, এবং সেভাবেই নিজেকে পরিচয় দিচ্ছি, তাই আমি নিজেই এতো অনর্থের সৃষ্টি করেছি। অনর্থ মানে অবাঞ্ছিত বস্তু। তৎ কৃতং চাভিপদ্যতে। এই দেহগত সম্পর্কগুলো তৈরি করার পর সমস্ত অবাঞ্ছিত জিনিসে ভরে গিয়েছে, আমি এই চিন্তায় বিভোর হয়ে আছি যে "আমি অমুক অমুক জাতির অন্তর্ভুক্ত। তাই এই জাতি, এই সমাজের জন্য আমার অনেক কিছু করণীয় রয়েছে , আমার সংসারের জন্য অথবা আমার নিজের জন্য, অথবা আমার স্ত্রীর জন্য, আমার সন্তানদের জন্য আমার অনেক কিছু কর্তব্য রয়েছে।" বৈদিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সবকিছুই হচ্ছে 'মোহ'।


অহং মমেতি ([[Vanisource:SB 5.5.8|ভাগবত ৫.৫.৮]])। জনস্য মোহহয়ং। মোহ অর্থ মায়া। আমি কতগুলো মোহজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছি আর তাতে জড়িয়ে পড়ছি। এই হল আমার অবস্থা। কিন্তু আসলে আমার প্রকৃত লক্ষ্য হচ্ছে কিভাবে এই মোহ থেকে বেরিয়ে এসে আমার মূল চেতনায় ফিরে আসতে পারি, যা হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত, এবং তাহলেই আমি ফিরে যেতে পারি। কৃষ্ণভাবনামৃত মানে হচ্ছে চিন্ময় দেহ। ঠিক যেই মুহূর্তে আমি আমার চিন্ময় দেহের চেতনার ভিত্তিতে কাজ করব, তৎক্ষণাৎ আমি মুক্ত। আমরা সেটিই চাই। তাহলেই কেবল আমি জ্ঞানময় নিত্য জীবনে আনন্দে বসবাস করতে পারব। সেটিই হচ্ছে আমাদের সমস্যা। লোকেরা এই দেহগত ধারণার ভিত্তিতেই শিক্ষালাভ করছে। এবং তাই তারা বিভিন্ন রকমের সমস্যার সৃষ্টি করছে আর সেই সমস্যার সমাধান করার জন্য, তারা বিভিন্ন ধরণের পাপকার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ছে।
শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হয়েছে যে, যয়া সম্মোহিতো জীব আত্মানং ত্রি-গুণাত্মকং মনুতে অনর্থং ([[Vanisource:SB 1.7.5|ভাগবত ১.৭.৫]]) তাই যেহেতু আমি এই জড় দেহটি গ্রহণ করেছি যা কি না জড়া প্রকৃতির তিনটি গুণের দ্বারা রচিত, এবং সেভাবেই নিজেকে পরিচয় দিচ্ছি, তাই আমি নিজেই এতো অনর্থের সৃষ্টি করেছি। অনর্থ মানে অবাঞ্ছিত বস্তু। তৎ কৃতং চাভিপদ্যতে। এই দেহগত সম্পর্কগুলো তৈরি করার পর সমস্ত অবাঞ্ছিত জিনিসে ভরে গিয়েছে, আমি এই চিন্তায় বিভোর হয়ে আছি যে "আমি অমুক অমুক জাতির অন্তর্ভুক্ত। তাই এই জাতি, এই সমাজের জন্য আমার অনেক কিছু করণীয় রয়েছে , আমার সংসারের জন্য অথবা আমার নিজের জন্য, অথবা আমার স্ত্রীর জন্য, আমার সন্তানদের জন্য আমার অনেক কিছু কর্তব্য রয়েছে।" বৈদিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সবকিছুই হচ্ছে 'মোহ'। অহং মমেতি ([[Vanisource:SB 5.5.8|ভাগবত ৫.৫.৮]])। জনস্য মোহহয়ং। মোহ অর্থ মায়া। আমি কতগুলো মোহজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছি আর তাতে জড়িয়ে পড়ছি। এই হল আমার অবস্থা। কিন্তু আসলে আমার প্রকৃত লক্ষ্য হচ্ছে কিভাবে এই মোহ থেকে বেরিয়ে এসে আমার মূল চেতনায় ফিরে আসতে পারি, যা হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত, এবং তাহলেই আমি ফিরে যেতে পারি। কৃষ্ণভাবনামৃত মানে হচ্ছে চিন্ময় দেহ। ঠিক যেই মুহূর্তে আমি আমার চিন্ময় দেহের চেতনার ভিত্তিতে কাজ করব, তৎক্ষণাৎ আমি মুক্ত। আমরা সেটিই চাই। তাহলেই কেবল আমি জ্ঞানময় নিত্য জীবনে আনন্দে বসবাস করতে পারব। সেটিই হচ্ছে আমাদের সমস্যা।  


ঠিক যেমন আজ সকালেই আমরা মায়ের গর্ভস্থ সন্তান অর্থাৎ ভ্রূণ হত্যা বা গর্ভপাত নিয়ে আলোচনা করছিলাম। কারণ আমরা জানি না যে সেই শিশুটির দেহের ভেতর যে আত্মা রয়েছে... তাকে কখনই হত্যা করা যায় না। সেটি হত্যা করা যাবে না। কিন্তু সে কথাও বলা হয়েছে যে যিনি আত্মার নিত্যত্ব সম্পর্কে জানেন, তিনি কাউকে হত্যা করেন না, না তো আত্মাকে হত্যা করা যায়। কিন্তু আমরা সমস্যা সৃষ্টি করছি। যেহেতু আত্মাটি এই দেহে আশ্রয় গ্রহণ করেছে, আর তথাকথিত চিকিৎসাবিজ্ঞান সেই দেহটিকে ধ্বংস করে দিতে উপদেশ করছে, তার মানে হচ্ছে যে সে এই কর্মের দ্বারা জড়িয়ে পড়ছে। যে লোকটি এই ধরণের উপদেশ দিচ্ছে... একজন ভদ্রলোক এখানে এসে থাকেন যার স্ত্রী হচ্ছে একজন চিকিৎসক এবং তার কাজ হচ্ছে গর্ভবতী মহিলাদের পরীক্ষা করা, এবং তাদের উপদেশ দেয়া যে গর্ভস্থ শিশুটিকে কি মেরে ফেলা উচিৎ না কি নয়। এই হচ্ছে তার কাজ।  
লোকেরা এই দেহগত ধারণার ভিত্তিতেই শিক্ষালাভ করছে। এবং তাই তারা বিভিন্ন রকমের সমস্যার সৃষ্টি করছে আর সেই সমস্যার সমাধান করার জন্য, তারা বিভিন্ন ধরণের পাপকার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। ঠিক যেমন আজ সকালেই আমরা মায়ের গর্ভস্থ সন্তান অর্থাৎ ভ্রূণ হত্যা বা গর্ভপাত নিয়ে আলোচনা করছিলাম। কারণ আমরা জানি না যে সেই শিশুটির দেহের ভেতর যে আত্মা রয়েছে... তাকে কখনই হত্যা করা যায় না। সেটি হত্যা করা যাবে না। কিন্তু সে কথাও বলা হয়েছে যে যিনি আত্মার নিত্যত্ব সম্পর্কে জানেন, তিনি কাউকে হত্যা করেন না, না তো আত্মাকে হত্যা করা যায়। কিন্তু আমরা সমস্যা সৃষ্টি করছি। যেহেতু আত্মাটি এই দেহে আশ্রয় গ্রহণ করেছে, আর তথাকথিত চিকিৎসাবিজ্ঞান সেই দেহটিকে ধ্বংস করে দিতে উপদেশ করছে, তার মানে হচ্ছে যে সে এই কর্মের দ্বারা জড়িয়ে পড়ছে। যে লোকটি এই ধরণের উপদেশ দিচ্ছে... একজন ভদ্রলোক এখানে এসে থাকেন যার স্ত্রী হচ্ছে একজন চিকিৎসক এবং তার কাজ হচ্ছে গর্ভবতী মহিলাদের পরীক্ষা করা, এবং তাদের উপদেশ দেয়া যে গর্ভস্থ শিশুটিকে কি মেরে ফেলা উচিৎ না কি নয়। এই হচ্ছে তার কাজ।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:14, 29 June 2021



Lecture on BG 2.28 -- London, August 30, 1973

সেই জন্য শঙ্করাচার্য এই মতবাদ দিলেন যে "ব্রহ্ম সত্যং জগন্মিথ্যা"। ব্রহ্ম অর্থ হচ্ছে আত্মা হচ্ছে প্রকৃত সত্য, তিনি কোন জাগতিক প্রকাশ নন। তিনি অবশ্য জড় জাগতিক প্রকাশকে মিথ্যা বলছেন। কিন্তু আমরা সেটি মিথ্যা বলি না, আমরা বলি ক্ষণস্থায়ী। সুতরাং আমাদের মূল ভাবার বিষয়টি হল আমি ক্ষণস্থায়ী নই, আমার এই দেহটি ক্ষণস্থায়ী। এখন আমি দেহের জন্য কাজ করছি। সেটি হচ্ছে মায়া। অহং মমেতি (শ্রীমদ্ভাগবত ৫.৫.৮) তাহলে সত্য বস্তুটি কি? সত্যিটি হচ্ছে আমি হলাম চিন্ময় কণ। এবং পূর্ণ চেতন হচ্ছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। সুতরাং ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আমার কর্তব্য হচ্ছে ভগবানের সেবা করা। সেটিই হচ্ছে পারমার্থিক জীবন, ভক্তিযোগ। সেটিকে বলা হচ্ছে স্বরূপ। ভগবদ্গীতার আরেকটি জায়গায় বলা হয়েছে, স গুণান্ সমতিতৈতান ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে (গীতা ১৪.২৬) যেই মুহূর্তে আমি এই কথাটি উপলব্ধি করতে পারবো যে আমি এই জড় দেহটি নই, তাহলে তৎক্ষণাৎ আমি এই প্রকৃতির তিনটি গুণ, সত্ত্ব, রজ এবং তম গুণের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারবো। এই দেহাত্মবুদ্ধিজাত জীবনের ধারণায় আমি জড়া প্রকৃতির যে কোন একটি গুণের প্রভাবে রয়েছি এবং সেই ভাবেই কর্ম করছি।

শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হয়েছে যে, যয়া সম্মোহিতো জীব আত্মানং ত্রি-গুণাত্মকং মনুতে অনর্থং (ভাগবত ১.৭.৫) তাই যেহেতু আমি এই জড় দেহটি গ্রহণ করেছি যা কি না জড়া প্রকৃতির তিনটি গুণের দ্বারা রচিত, এবং সেভাবেই নিজেকে পরিচয় দিচ্ছি, তাই আমি নিজেই এতো অনর্থের সৃষ্টি করেছি। অনর্থ মানে অবাঞ্ছিত বস্তু। তৎ কৃতং চাভিপদ্যতে। এই দেহগত সম্পর্কগুলো তৈরি করার পর সমস্ত অবাঞ্ছিত জিনিসে ভরে গিয়েছে, আমি এই চিন্তায় বিভোর হয়ে আছি যে "আমি অমুক অমুক জাতির অন্তর্ভুক্ত। তাই এই জাতি, এই সমাজের জন্য আমার অনেক কিছু করণীয় রয়েছে , আমার সংসারের জন্য অথবা আমার নিজের জন্য, অথবা আমার স্ত্রীর জন্য, আমার সন্তানদের জন্য আমার অনেক কিছু কর্তব্য রয়েছে।" বৈদিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সবকিছুই হচ্ছে 'মোহ'। অহং মমেতি (ভাগবত ৫.৫.৮)। জনস্য মোহহয়ং। মোহ অর্থ মায়া। আমি কতগুলো মোহজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছি আর তাতে জড়িয়ে পড়ছি। এই হল আমার অবস্থা। কিন্তু আসলে আমার প্রকৃত লক্ষ্য হচ্ছে কিভাবে এই মোহ থেকে বেরিয়ে এসে আমার মূল চেতনায় ফিরে আসতে পারি, যা হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত, এবং তাহলেই আমি ফিরে যেতে পারি। কৃষ্ণভাবনামৃত মানে হচ্ছে চিন্ময় দেহ। ঠিক যেই মুহূর্তে আমি আমার চিন্ময় দেহের চেতনার ভিত্তিতে কাজ করব, তৎক্ষণাৎ আমি মুক্ত। আমরা সেটিই চাই। তাহলেই কেবল আমি জ্ঞানময় নিত্য জীবনে আনন্দে বসবাস করতে পারব। সেটিই হচ্ছে আমাদের সমস্যা।

লোকেরা এই দেহগত ধারণার ভিত্তিতেই শিক্ষালাভ করছে। এবং তাই তারা বিভিন্ন রকমের সমস্যার সৃষ্টি করছে আর সেই সমস্যার সমাধান করার জন্য, তারা বিভিন্ন ধরণের পাপকার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। ঠিক যেমন আজ সকালেই আমরা মায়ের গর্ভস্থ সন্তান অর্থাৎ ভ্রূণ হত্যা বা গর্ভপাত নিয়ে আলোচনা করছিলাম। কারণ আমরা জানি না যে সেই শিশুটির দেহের ভেতর যে আত্মা রয়েছে... তাকে কখনই হত্যা করা যায় না। সেটি হত্যা করা যাবে না। কিন্তু সে কথাও বলা হয়েছে যে যিনি আত্মার নিত্যত্ব সম্পর্কে জানেন, তিনি কাউকে হত্যা করেন না, না তো আত্মাকে হত্যা করা যায়। কিন্তু আমরা সমস্যা সৃষ্টি করছি। যেহেতু আত্মাটি এই দেহে আশ্রয় গ্রহণ করেছে, আর তথাকথিত চিকিৎসাবিজ্ঞান সেই দেহটিকে ধ্বংস করে দিতে উপদেশ করছে, তার মানে হচ্ছে যে সে এই কর্মের দ্বারা জড়িয়ে পড়ছে। যে লোকটি এই ধরণের উপদেশ দিচ্ছে... একজন ভদ্রলোক এখানে এসে থাকেন যার স্ত্রী হচ্ছে একজন চিকিৎসক এবং তার কাজ হচ্ছে গর্ভবতী মহিলাদের পরীক্ষা করা, এবং তাদের উপদেশ দেয়া যে গর্ভস্থ শিশুটিকে কি মেরে ফেলা উচিৎ না কি নয়। এই হচ্ছে তার কাজ।