BN/Prabhupada 0635 - প্রত্যেকের ভেতরেই আত্মা রয়েছে, এমন কি পিঁপড়ের ভেতরেও

Revision as of 17:15, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.30 -- London, August 31, 1973

ভক্তঃ অনুবাদ - "হে ভারত, প্রাণীদের দেহে অবস্থিত আত্মা সর্বদাই অবধ্য। অতএব কোন জীবের জন্য তোমার শোক করা উচিৎ নয়।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ দেহী নিত্যং অবধ্যোহয়ং দেহে সর্বস্য ভারত। দেহে, অর্থাৎ এই শরীরের অভ্যন্তরে। 'দেহিনোস্মিন্ যথা দেহে কৌমারং যৌবনং জরা' (গীতা ২.১৩) শ্লোকটি থেকে এই প্রসঙ্গটি শুরু হয়েছে, দেহ, দেহী। দেহী মানে হচ্ছে যিনি এই দেহের মালিক। ঠিক যেমন গুণী। অস্থতে ইন্ প্রত্যয়। ব্যাকরণগত। গুণ ইন্, দেহ ইন্, ইন্ প্রত্যয়। দেহিন্ শব্দ। দেহিন শব্দের কর্তৃকারক হল দেহী। দেহী নিত্যং, চিরন্তন। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ বিভিন্ন ভাবে এটি বুঝিয়েছেন নিত্যং, শাশ্বত, অবধ্য, অপরিবর্তনীয়। এর জন্ম হয় না, মৃত্যু হয় না। এটি সর্বদা একই রকম থাকে। ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে (গীতা ২.২০)। এভাবে তিনি আবারো বলছেন, নিত্যং, চিরন্তন। অবধ্য। কেউই তাকে হত্যা করতে পারে না। তিনি এই দেহের অভ্যন্তরে বিরাজমান। কিন্তু দেহে সর্বস্য ভারত। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন নয় যে শুধুমাত্র এই মানবদেহেই কেবল এই আত্মা অবস্থান করে আর অন্য কোন দেহে আত্মা নেই। এটি মূর্খামি। সর্বস্য, প্রত্যেকটি দেহে। এমন কি পিঁপড়ের ভেতরেও, হাতির ভেতরেও, বিশাল বটবৃক্ষেও অথবা ক্ষুদ্র জীবানুতেও। সর্বস্য। আত্মা সর্বত্র রয়েছে। কিন্তু কিছু মূর্খরা বলে থাকে পশুদের কোন আত্মা নেই। সেটি ভুল। তুমি এ কথা কিভাবে বলতে পারো যে আত্মা নেই? সবার ভেতরে আত্মা রয়েছে। এখানে শ্রীকৃষ্ণের প্রামাণিক উক্তিটি বলা হয়েছে, 'সর্বস্য'। আর আরেক জায়গায় শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, 'সর্বযোনিষু কৌন্তেয় সম্ভবন্তি মূর্তয়ঃ যঃ (গীতা ১৪.৪) সব ধরণের প্রজাতিতেই, ৮৪ লক্ষ বিভিন্ন ধরণের জীব প্রজাতি রয়েছে, তাসামহদ্ যোনির্ব্রহ্ম। মহদ্ যোনিঃ। এই জড়া প্রকৃতি হল সেই সমস্ত শরীরের উৎস। অহং বীজপ্রদঃ পিতাঃ "আমিই হচ্ছি জীবের বীজপ্রদানকারী পিতা"। ঠিক যেমন পিতা-মাতা ছাড়া কখনও সন্তান জন্মাতে পারে না, ঠিক তেমনি শ্রীকৃষ্ণ হলেন পিতা। এবং এই জড়া বা চিন্ময় প্রকৃতি হচ্ছে মাতা।

দু ধরণের প্রকৃতি রয়েছে। সাত নম্বর শ্লোকে সেটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জড়া প্রকৃতি এবং চিন্ময় প্রকৃতি। অথবা অপরা প্রকৃতি এবং পরা প্রকৃতি। ঠিক যেমন আমাদের দেহেও উৎকৃষ্ট অঙ্গ রয়েছে এবং নিকৃষ্ট অঙ্গও রয়েছে। দেহটি একই। কিন্তু এই দেহের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ রয়েছে। এদের মধ্যে কোনো কোনটি অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট আবার কোন কোনটি অপেক্ষাকৃত নিকৃষ্ট। এমন কি দুটি হাতের মধ্যেও। বৈদিক সভ্যতা অনুযায়ী, ডান হাত হচ্ছে উৎকৃষ্ট হাত এবং বাম হাত হল নিকৃষ্ট হাত। যখন তুমি কাউকে কিছু দেবে, তখন অবশ্যই তোমার ডান হাতটি ব্যবহার করা উচিৎ। যদি বা হাতে দাও, তাহলে তা অপমানকর। দুটো হাতই দরকার। কেন এই হাতটি উৎকৃষ্ট...? সুতরাং আমাদেরকে বৈদিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। তেমনি যদিও, চিন্ময় এবং জড়া, উভয় প্রকৃতিই একই উৎস থেকে আসছে, পরম সত্য থেকে... জন্মাদি অস্য যতঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.১)। সবকিছুই তাঁর থেকেই নির্গত। তথাপি, উৎকৃষ্টা এবং নিকৃষ্টা প্রকৃতি রয়েছে। এই উৎকৃষ্টা এবং নিকৃষ্টা প্রকৃতির মধ্যে পার্থক্যটি কি? নিকৃষ্টা বা জড়া প্রকৃতিতে ভগবৎ চেতনা প্রায় শুন্য বললেই চলে। যারা সত্ত্ব গুণে রয়েছে, তাদের মধ্যে সামান্য ভগবৎ চেতনা রয়েছে। আর যারা রজোগুণে আচ্ছন্ন তাদের, তাদের মধ্যে এই চেতনা আরও কম মাত্রায়, আর যারা তমো গুণে আচ্ছন্ন, তাদের মধ্যে কোন ভগবৎ চেতনাই নেই। সম্পূর্ণরূপে তা অনুপস্থিত।