BN/Prabhupada 0639 - প্রত্যেকের ভেতরেই আত্মা রয়েছে এবং পরমাত্মা হলেন তার প্রকৃত মালিক

Revision as of 16:08, 26 January 2019 by Anurag (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0639 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.30 -- London, August 31, 1973

সুতরাং পশুজীবনের নিম্নতর স্তরেও শ্রীকৃষ্ণ রয়েছেন। তিনি বলেছেন, "দেহে সর্বস্য ভারত"। আরেক জায়গায় শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, দেহী বা ক্ষেত্রজ্ঞ অর্থাৎ এই দেহের মালিক রয়েছেন, এবং আরেকজন ক্ষেত্রজ্ঞ বা মালিকও রয়েছেন। তিনি হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। ক্ষেত্রজ্ঞং চাপি মাম্ বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত (গীতা ১৩.৩) ঠিক যেভাবে প্রত্যেকের দেহের ভেতর একটি আলাদা আত্মা রয়েছে ঠিক তেমনই একজন পরমাত্মাও রয়েছেন। তাঁরা উভয়েই রয়েছেন। তাঁরা দুজনেই সেখানে আছেন। তিনি সকলের দেহের মালিক। সবার দেহের।

কখনও কখনও মূর্খ বদমাশেরা শ্রীকৃষ্ণের সম্বন্ধে এই বলে অভিযোগ করে যে, "তিনি কেন অন্য লোকেদের স্ত্রীদের সঙ্গে নৃত্য করেছিলেন?" কিন্তু আসলে তিনিই মালিক। দেহে সর্বস্য ভারত। আমি মালিক নই। তিনি হলেন মালিক। অতএব মালিক যদি তাঁর দাসীদের অথবা ভক্তদের সাথে নৃত্য করে তাতে দোষের কি আছে? এতে ভুল কিসের? তিনি হচ্ছেন তাদের মালিক। তুমি তাদের মালিক নও। দেহে সর্বস্য ভারত। তিনি... প্রত্যেকের দেহেই আত্মা এবং পরমাত্মা রয়েছে। পরমাত্মা হচ্ছেন প্রকৃত মালিক।

শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ভোক্তারং যজ্ঞতপসাম্ সর্বলোকমহেশ্বরং (গীতা ৫.২৯) মহেশ্বরং, তিনিই পরম মালিক। সুহৃদং সর্বভূতানাং। তিনি হলেন প্রকৃত বন্ধু। যদি আমার কোন ভালোবাসার মানুষ থাকে, তাহলে আমি কখনও তার বন্ধু, আবার কখনও বন্ধু নই। শ্রীকৃষ্ণ হলেন প্রকৃত সুহৃদ। সুহৃদং সর্বভূতানাং। যেমনটা বলা হয়েছে যে তস্মাদ্ সর্বাণি ভূতানি। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন প্রকৃত সুহৃদ। সুতরাং গোপীরা যদি তাদের প্রকৃত বন্ধুর সঙ্গেই নৃত্য করে থাকেন, তাহলে তাতে ভুল কিসের? তাতে কি দোষ আছে? কিন্তু যারা বদমাশ, যারা শ্রীকৃষ্ণকে জানে না, তারা ভাবে এটি অনৈতিক। এটি অনৈতিক নয়। বরং সেটিই ঠিক। সেটিই ঠিক। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন প্রকৃত স্বামী। তাই তিনি ১৬,১০৮ টি বিয়ে করেছিলেন। ষোলো হাজার কেন? যদি তিনি ষোলো'শ কোটি, ষোলো হাজার কোটিও বিয়ে করতেন তাতে দোষ কিসের? কারণ তিনিই হচ্ছেন সর্বলোকমহেশ্বরং (গীতা ৫.২৯)

সুতরাং যারা শ্রীকৃষ্ণকে জানে না, বদমাশগুলো, ওরা শ্রীকৃষ্ণকে নীতিহীন, নারীশিকারী বলে মনে করে। আর ওরা এসবে আনন্দও পায়। তাই ওরা শ্রীকৃষ্ণের, তার সঙ্গে গোপীদের ছবি আঁকে। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ কিভাবে কংস বধ করেছিলেন , কিভাবে অসুরদের বধ করেছেন, তা নিয়ে কোনও ছবি আঁকে না। ওরা এসব পছন্দ করে না। এসব সহজিয়া লোক। তারা তাদের কামুকতার কারণে, তাদের কামুকতাপূর্ণ কাজের জন্য শ্রীকৃষ্ণের এসব কাজের সমর্থন নিতে চায়। "শ্রীকৃষ্ণ এমনটা করেছেন।" "শ্রীকৃষ্ণ দুশ্চরিত্রবান ছিলেন। তাই আমরাও দুশ্চরিত্রবান। আমরা শ্রীকৃষ্ণের বিরাট ভক্ত, কারণ আমরাও দুশ্চরিত্রবান।" এসবই চলছে এখন।

অতএব শ্রীকৃষ্ণকে বোঝার জন্য কিছুটা উন্নত বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন হয়। উন্নত বুদ্ধিমত্তা। বহুনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান্মাং প্রপদ্যতে (গীতা ৭.১৯) জ্ঞানবান মানে সর্বোত্তম জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তি। মাম্ প্রপদ্যতে। সেরকম ব্যক্তিই শ্রীকৃষ্ণের প্রকৃত পরিচয় বুঝতে পারেন । বাসুদেবং সর্বমিতি স মহাত্মা সুদুর্লভঃ। সেই রকম জ্ঞানী মহাত্মা... তোমরা মূর্খ 'মহাত্মা'-ও দেখতে পাবে। কৃষ্ণভাবনাবিহীন হয়ে কেবল পোষাক পরিবর্তন করেই তারা নিজেদেরকে ভগবান বলে ঘোষণা করছে। তাদের মুখে লাথি মারো। শ্রীকৃষ্ণ এই সমস্ত বদমাশদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু যদি তোমরা শ্রীকৃষ্ণকে বুঝতে পারো, তাহলে তোমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান - "এই রূপে ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে কোনও ভাগ্যবান জীব (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্যলীলা ১৯.১৫১) সবচাইতে ভাগ্যবান ব্যক্তিরাই কেবল শ্রীকৃষ্ণকে বুঝতে পারেন। শ্রীকৃষ্ণ কে তা বুঝতে পারেন?