BN/Prabhupada 0656 - ভক্তদের কারোর প্রতিই ঘৃণা থাকে না: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0656 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1969 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 6: Line 6:
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA, Los Angeles]]
[[Category:BN-Quotes - in USA, Los Angeles]]
[[Category:Hindi Pages - Yoga System]]
[[Category:Bengali Pages - Yoga System]]
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0655 - ধর্মের উদ্দেশ্য হল ভগবানকে জানা এবং তাঁকে ভালোবাসতে শেখা|0655|BN/Prabhupada 0657 - এই যুগের জন্য মন্দিরই কেবল নির্জন স্থান|0657}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0655 - धर्म का उद्देश्य है भगवान को समझना । और भगवान से प्रेम करना सीखना|0655|HI/Prabhupada 0657 - मंदिर इस युग के लिए एक मात्र एकांत जगह है|0657}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 21: Line 19:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|TsnnfezGkpY|ভক্তদের কারোর প্রতিই ঘৃণা থাকে না। - Prabhupāda 0656}}
{{youtube_right|QaI128nDKak|ভক্তদের কারোর প্রতিই ঘৃণা থাকে না<br/> - Prabhupāda 0656}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 35: Line 33:
ভক্তঃ সেই ধরণের ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠতা লাভ করেন যিনি সুহৃদ, মিত্র, শত্রু, মৎসর, বন্ধু, ধার্মিক পাপাচারী ও উদাসীন ও নিরপেক্ষ - ইত্যাদি সকলের প্রতি সমদর্শী।  
ভক্তঃ সেই ধরণের ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠতা লাভ করেন যিনি সুহৃদ, মিত্র, শত্রু, মৎসর, বন্ধু, ধার্মিক পাপাচারী ও উদাসীন ও নিরপেক্ষ - ইত্যাদি সকলের প্রতি সমদর্শী।  


শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এটিই হচ্ছে অগ্রগতির লক্ষণ। কারণ, এই জড় জগতে বন্ধু ও শত্রুর ধারণা, এবং সবকিছুই কেবলমাত্র দেহের সম্পর্ক বা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির বিচারে করা হয়। কিন্তু পরম সত্য বা ভগবদ উপলব্ধির ক্ষেত্রে এরকম কোনও জড় বিচার নেই। এখানে আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হল, এই জগতে সকল বদ্ধ জীবেরাই মায়ার অধীন। ধরুন, একজন ডাক্তার রোগী দেখতে গেল। সেই রোগীর খিঁচুনি রোগ হয়েছে। সে আজেবাজে প্রলাপ বকছে। তার মানে এই নয় যে তিনি সেই রোগীর চিকিৎসা করতে নারাজ হবেন। তিনি সেই রোগীর সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করবেন। যদিও সেই রোগী হয়তো তাকে গালাগাল দেবে, কটুবাক্য বলবে, তবুও তিনি তার চিকিৎসা করবেন।  
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এটিই হচ্ছে অগ্রগতির লক্ষণ। কারণ, এই জড় জগতে বন্ধু ও শত্রুর ধারণা, এবং সবকিছুই কেবলমাত্র দেহের সম্পর্ক বা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির বিচারে করা হয়। কিন্তু পরম সত্য বা ভগবদ উপলব্ধির ক্ষেত্রে এরকম কোনও জড় বিচার নেই। এখানে আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হল, এই জগতে সকল বদ্ধ জীবেরাই মায়ার অধীন। ধরুন, একজন ডাক্তার রোগী দেখতে গেল। সেই রোগীর খিঁচুনি রোগ হয়েছে। সে আজেবাজে প্রলাপ বকছে। তার মানে এই নয় যে তিনি সেই রোগীর চিকিৎসা করতে নারাজ হবেন। তিনি সেই রোগীর সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করবেন। যদিও সেই রোগী হয়তো তাকে গালাগাল দেবে, কটুবাক্য বলবে, তবুও তিনি তার চিকিৎসা করবেন। ঠিক যেমন প্রভু যীশু খ্রিস্ট বলেছেন, "পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয়।" পাপীকে নয়। এটি খুবই ভাল কথা। কারণ সেই পাপী ব্যক্তিটি  মোহগ্রস্ত। সে পাগল। তুমি যদি তাকে ঘৃণাই কর, তাহলে তাকে তুমি সারাবে কিভাবে? সেই জন্য যারা ভক্ত, যারা প্রকৃত অর্থেই ভগবানের ভক্ত, কারোর প্রতিই তাঁদের কোনও ঘৃণা নেই। ঠিক প্রভু যীশু খ্রিস্টের ন্যায়। যখন তাঁকে ক্রূশবিদ্ধ করা হচ্ছিল, তিনি ভগবানকে অনুরোধ করছিলেন, "হে ভগবান, দয়া করে ওদের ক্ষমা কর। ওরা জানে না যে ওরা কি করছে।" এই হচ্ছে ভক্তের মনোভাব। হ্যাঁ। কারণ তারা জাগতিক জীবনধারার চিন্তায় উন্মত্ত হয়ে গিয়েছে। তাদের ঘৃণা করা উচিৎ নয়। যে কেউ। এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটি এতোই মহান যে এখানে ঘৃণার কোন প্রশ্নই নেই। এখানে সবাইকেই স্বাগতম জানানো হয়। "দয়া করে এখানে আসুন। হরিনাম কীর্তন করুন, কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণ করুন এবং ভগবদ্গীতার কিছু চমৎকার দর্শন শুনুন। আর এইভাবে আপনার জড়জাগতিক বদ্ধ জীবনকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করুন।" এই হচ্ছে আমাদের কাজ। কৃষ্ণভাবনামৃত। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ। ([[Vanisource:CC Madhya 7.128|চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য-৭.১২৮]]) "যার সাথেই তোমার দেখা হয়, যেখানেই দেখা হয়, এই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করার চেষ্টা কর"। কৃষ্ণকথা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী। তারাও সুখী হবে এবং আপনিও সুখী হবেন। তারপর পড়।  
 
ঠিক যেমন প্রভু যীশু খ্রিস্ট বলেছেন, "পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয়।" পাপীকে নয়। এটি খুবই ভাল কথা। কারণ সেই পাপী ব্যক্তিটি  মোহগ্রস্ত। সে পাগল। তুমি যদি তাকে ঘৃণাই কর, তাহলে তাকে তুমি সারাবে কিভাবে? সেই জন্য যারা ভক্ত, যারা প্রকৃত অর্থেই ভগবানের ভক্ত, কারোর প্রতিই তাঁদের কোনও ঘৃণা নেই। ঠিক প্রভু যীশু খ্রিস্টের ন্যায়। যখন তাঁকে ক্রূশবিদ্ধ করা হচ্ছিল, তিনি ভগবানকে অনুরোধ করছিলেন, "হে ভগবান, দয়া করে ওদের ক্ষমা কর। ওরা জানে না যে ওরা কি করছে।" এই হচ্ছে ভক্তের মনোভাব। হ্যাঁ। কারণ তারা জাগতিক জীবনধারার চিন্তায় উন্মত্ত হয়ে গিয়েছে। তাদের ঘৃণা করা উচিৎ নয়। যে কেউ।  
 
এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটি এতোই মহান যে এখানে ঘৃণার কোন প্রশ্নই নেই। এখানে সবাইকেই স্বাগতম জানানো হয়। "দয়া করে এখানে আসুন। হরিনাম কীর্তন করুন, কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণ করুন এবং ভগবদ্গীতার কিছু চমৎকার দর্শন শুনুন। আর এইভাবে আপনার জড়জাগতিক বদ্ধ জীবনকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করুন।" এই হচ্ছে আমাদের কাজ। কৃষ্ণভাবনামৃত। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ। ([[Vanisource:CC Madhya 7.128|চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য-৭.১২৮]]) "যার সাথেই তোমার দেখা হয়, যেখানেই দেখা হয়, এই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করার চেষ্টা কর"। কৃষ্ণকথা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী। তারাও সুখী হবে এবং আপনিও সুখী হবেন। তারপর পড়।  


ভক্তঃ "যোগারুঢ় ব্যক্তি সর্বদা পরব্রহ্মে তাঁর মন নিবদ্ধ রাখবেন। তিনি নির্জন স্থানে একাকী বসবাস করবেন এবং সর্বদাই সতর্কভাবে তাঁর মনকে বশীভূত করবেন। তিনি বাসনামুক্ত ও পরিগ্রহরহিত হবেন।"  
ভক্তঃ "যোগারুঢ় ব্যক্তি সর্বদা পরব্রহ্মে তাঁর মন নিবদ্ধ রাখবেন। তিনি নির্জন স্থানে একাকী বসবাস করবেন এবং সর্বদাই সতর্কভাবে তাঁর মনকে বশীভূত করবেন। তিনি বাসনামুক্ত ও পরিগ্রহরহিত হবেন।"  


শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এটি হচ্ছে পারমার্থিক জীবনের শুরু। এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যোগপদ্ধতির শিক্ষা দেবেন। তাই তিনি এখানে তা শুরু করছেন। একজন যোগী সর্বদাই তাঁর মনকে পরমতত্ত্বে নিবদ্ধ করবেন। পরমতত্ত্ব মানে হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তিনিই হচ্ছেন পরমসত্ত্বা, যেমনটা আমি একটু আগেই বর্ণনা করেছি যে, নিত্যোনিত্যানাং চেতনশ্চেতনাং (কঠ উপনিষদ ২.২.১৩)  
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এটি হচ্ছে পারমার্থিক জীবনের শুরু। এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যোগপদ্ধতির শিক্ষা দেবেন। তাই তিনি এখানে তা শুরু করছেন। একজন যোগী সর্বদাই তাঁর মনকে পরমতত্ত্বে নিবদ্ধ করবেন। পরমতত্ত্ব মানে হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তিনিই হচ্ছেন পরমসত্ত্বা, যেমনটা আমি একটু আগেই বর্ণনা করেছি যে, নিত্যোনিত্যানাং চেতনশ্চেতনাং (কঠ উপনিষদ ২.২.১৩) তিনি হলেন পরম নিত্য। তিনি পরম চেতন। সুতরাং সম্পূর্ণ যোগপদ্ধতির উদ্দেশ্য হল সেই পরম চেতনেই মনকে নিবদ্ধ করা। আমরা পরম চেতন নই। সেটি আপনারা বুঝতে পারেন। পরম চেতন হলেন ভগবান। এটি হচ্ছে দ্বৈতবাদ। দ্বৈত। দ্বৈত মানে হচ্ছে ভগবান আমার থেকে ভিন্ন একজন ব্যক্তি। তিনি হলেন পরমেশ্বর। আমি তাঁর অধীন। তিনি বিভু, আমি হলাম অণু। তিনি অসীম আর আমি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। এই হচ্ছে আমাদের সম্পর্ক। তাই যেহেতু আমরা হচ্ছি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র, তাই আমাদের উচিৎ অসীমে মনঃসংযোগ করা। সেই ধরণের একাকী থাকবেন। একা। এটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। একা থাকা মানে সেই ধরণের মানুষদের সঙ্গে বসবাস না করা যারা কৃষ্ণভাবনাময় বা ভগবদ-ভাবনাময় নয়, সেটি হচ্ছে একাকী থাকা। তিনি নির্জন স্থানে একাকী বাস করবেন। নির্জন স্থানে অথবা যেমন বনে। বন অত্যন্ত নির্জন স্থান। কিন্তু এই যুগে বনে যাওয়া আর নির্জন স্থান বের করা খুব কঠিন একটি কাজ। তাই নির্জন স্থান হচ্ছে যেখানে কেবলমাত্র ভগবৎ ভাবনামৃত শিক্ষা দেয়া হয়। সেটিই হচ্ছে নির্জন স্থান। সেইটিই হচ্ছে নির্জন স্থান। তাপর? তাঁর উচিৎ অত্যন্ত সতর্কভাবে মনকে বশীভূত করা। কিভাবে মন বশীভূত করা যাবে? তোমার মনকে কেবল পরমতত্ত্ব বা শ্রীকৃষ্ণতে নিবদ্ধ কর। এ ছাড়া অন্য কিছুতে নয়।  
 
তিনি হলেন পরম নিত্য। তিনি পরম চেতন। সুতরাং সম্পূর্ণ যোগপদ্ধতির উদ্দেশ্য হল সেই পরম চেতনেই মনকে নিবদ্ধ করা। আমরা পরম চেতন নই। সেটি আপনারা বুঝতে পারেন। পরম চেতন হলেন ভগবান। এটি হচ্ছে দ্বৈতবাদ। দ্বৈত। দ্বৈত মানে হচ্ছে ভগবান আমার থেকে ভিন্ন একজন ব্যক্তি। তিনি হলেন পরমেশ্বর। আমি তাঁর অধীন। তিনি বিভু, আমি হলাম অণু। তিনি অসীম আর আমি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। এই হচ্ছে আমাদের সম্পর্ক। তাই যেহেতু আমরা হচ্ছি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র, তাই আমাদের উচিৎ অসীমে মনঃসংযোগ করা। সেই ধরণের একাকী থাকবেন। একা। এটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।  
 
একা থাকা মানে সেই ধরণের মানুষদের সঙ্গে বসবাস না করা যারা কৃষ্ণভাবনাময় বা ভগবদ-ভাবনাময় নয়, সেটি হচ্ছে একাকী থাকা। তিনি নির্জন স্থানে একাকী বাস করবেন। নির্জন স্থানে অথবা যেমন বনে। বন অত্যন্ত নির্জন স্থান। কিন্তু এই যুগে বনে যাওয়া আর নির্জন স্থান বের করা খুব কঠিন একটি কাজ। তাই নির্জন স্থান হচ্ছে যেখানে কেবলমাত্র ভগবৎ ভাবনামৃত শিক্ষা দেয়া হয়। সেটিই হচ্ছে নির্জন স্থান। সেইটিই হচ্ছে নির্জন স্থান। তাপর? তাঁর উচিৎ অত্যন্ত সতর্কভাবে মনকে বশীভূত করা। কিভাবে মন বশীভূত করা যাবে? তোমার মনকে কেবল পরমতত্ত্ব বা শ্রীকৃষ্ণতে নিবদ্ধ কর। এ ছাড়া অন্য কিছুতে নয়।  
 
স বৈ মনঃ কৃষ্ণপদারবিন্দয়ো ([[Vanisource:SB 9.4.18-20|ভাগবত ৯.৪.১৮]])। তাহলে তোমার ... অন্য আরেকদিন আমি ব্যাখ্যা করছিলাম যে যদি তুমি তোমার মনকে কেবল শ্রীকৃষ্ণের কাছে রাখো, শ্রীকৃষ্ণ হলেন ঠিক আলো বা সূর্যের মতো। তাই সেখানে অন্ধকার দ্বারা মনের গ্রাস হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। কোনই সম্ভাবনা নেই। ঠিক একইভাবে যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে সর্বদা তোমার হৃদয়ে রাখো, তাহলে এই মায়া সেখানে পৌঁছুতে পারবে না। সে সেখানে পৌঁছুতে পারবে না। সেটিই হচ্ছে পন্থা। তিনি বাসনারহিত এবং অপরিগ্রহ হবেন। সম্পূর্ণ জাগতিক রোগটিই হচ্ছে এটি যে, আমি আরও আরও অধিকার করতে চাই এবং আমার বাসনা। আর আমি যা হারিয়েছি তাঁর জন্য শোক করি। আর যা পাই নি তা পাবার বাসনা করি।


তাই ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ([[Vanisource:SB 9.4.18-20|গীতা ১৮.৫৪]]) যিনি প্রকৃতই ভগবদ্ভাবনাময়, কৃষ্ণভাবনাময়। জড় জাগতিক কিছু পাবার জন্য তাঁর কোন বাসনা নেই। তাঁর একমাত্র বাসনা হচ্ছে তিনি কিভাবে কৃষ্ণসেবা করবেন। তার মানে হচ্ছে তাঁর বাসনা পরিশুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। বাসনা এমনই, তুমি বাসনা করা পরিত্যাগ করতে পারো না। তা সম্ভব নয়। তুমি জীবসত্তা, তোমার বাসনা থাকবেই। কিন্তু আমাদের বাসনা এই মুহূর্তে কলুষিত। "আমি জাগতিক বস্তু লাভের দ্বারা আমার ইন্দ্রিয়গুলোকে তৃপ্তি দিতে চাই।" কিন্তু যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের জন্য বাসনা কর, তাহলে জাগতিক বস্তু লাভের বাসনা আপনা থেকেই দূর হয়ে যাবে। এরপর পড়।  
স বৈ মনঃ কৃষ্ণপদারবিন্দয়ো ([[Vanisource:SB 9.4.18-20|ভাগবত ৯.৪.১৮]])। তাহলে তোমার ... অন্য আরেকদিন আমি ব্যাখ্যা করছিলাম যে যদি তুমি তোমার মনকে কেবল শ্রীকৃষ্ণের কাছে রাখো, শ্রীকৃষ্ণ হলেন ঠিক আলো বা সূর্যের মতো। তাই সেখানে অন্ধকার দ্বারা মনের গ্রাস হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। কোনই সম্ভাবনা নেই। ঠিক একইভাবে যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে সর্বদা তোমার হৃদয়ে রাখো, তাহলে এই মায়া সেখানে পৌঁছুতে পারবে না। সে সেখানে পৌঁছুতে পারবে না। সেটিই হচ্ছে পন্থা। তিনি বাসনারহিত এবং অপরিগ্রহ হবেন। সম্পূর্ণ জাগতিক রোগটিই হচ্ছে এটি যে, আমি আরও আরও অধিকার করতে চাই এবং আমার বাসনা। আর আমি যা হারিয়েছি তাঁর জন্য শোক করি। আর যা পাই নি তা পাবার বাসনা করি। তাই ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]) যিনি প্রকৃতই ভগবদ্ভাবনাময়, কৃষ্ণভাবনাময়। জড় জাগতিক কিছু পাবার জন্য তাঁর কোন বাসনা নেই। তাঁর একমাত্র বাসনা হচ্ছে তিনি কিভাবে কৃষ্ণসেবা করবেন। তার মানে হচ্ছে তাঁর বাসনা পরিশুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। বাসনা এমনই, তুমি বাসনা করা পরিত্যাগ করতে পারো না। তা সম্ভব নয়। তুমি জীবসত্তা, তোমার বাসনা থাকবেই। কিন্তু আমাদের বাসনা এই মুহূর্তে কলুষিত। "আমি জাগতিক বস্তু লাভের দ্বারা আমার ইন্দ্রিয়গুলোকে তৃপ্তি দিতে চাই।" কিন্তু যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের জন্য বাসনা কর, তাহলে জাগতিক বস্তু লাভের বাসনা আপনা থেকেই দূর হয়ে যাবে। এরপর পড়।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:21, 29 June 2021



Lecture on BG 6.6-12 -- Los Angeles, February 15, 1969

ভক্তঃ সেই ধরণের ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠতা লাভ করেন যিনি সুহৃদ, মিত্র, শত্রু, মৎসর, বন্ধু, ধার্মিক পাপাচারী ও উদাসীন ও নিরপেক্ষ - ইত্যাদি সকলের প্রতি সমদর্শী।

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এটিই হচ্ছে অগ্রগতির লক্ষণ। কারণ, এই জড় জগতে বন্ধু ও শত্রুর ধারণা, এবং সবকিছুই কেবলমাত্র দেহের সম্পর্ক বা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির বিচারে করা হয়। কিন্তু পরম সত্য বা ভগবদ উপলব্ধির ক্ষেত্রে এরকম কোনও জড় বিচার নেই। এখানে আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হল, এই জগতে সকল বদ্ধ জীবেরাই মায়ার অধীন। ধরুন, একজন ডাক্তার রোগী দেখতে গেল। সেই রোগীর খিঁচুনি রোগ হয়েছে। সে আজেবাজে প্রলাপ বকছে। তার মানে এই নয় যে তিনি সেই রোগীর চিকিৎসা করতে নারাজ হবেন। তিনি সেই রোগীর সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করবেন। যদিও সেই রোগী হয়তো তাকে গালাগাল দেবে, কটুবাক্য বলবে, তবুও তিনি তার চিকিৎসা করবেন। ঠিক যেমন প্রভু যীশু খ্রিস্ট বলেছেন, "পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয়।" পাপীকে নয়। এটি খুবই ভাল কথা। কারণ সেই পাপী ব্যক্তিটি মোহগ্রস্ত। সে পাগল। তুমি যদি তাকে ঘৃণাই কর, তাহলে তাকে তুমি সারাবে কিভাবে? সেই জন্য যারা ভক্ত, যারা প্রকৃত অর্থেই ভগবানের ভক্ত, কারোর প্রতিই তাঁদের কোনও ঘৃণা নেই। ঠিক প্রভু যীশু খ্রিস্টের ন্যায়। যখন তাঁকে ক্রূশবিদ্ধ করা হচ্ছিল, তিনি ভগবানকে অনুরোধ করছিলেন, "হে ভগবান, দয়া করে ওদের ক্ষমা কর। ওরা জানে না যে ওরা কি করছে।" এই হচ্ছে ভক্তের মনোভাব। হ্যাঁ। কারণ তারা জাগতিক জীবনধারার চিন্তায় উন্মত্ত হয়ে গিয়েছে। তাদের ঘৃণা করা উচিৎ নয়। যে কেউ। এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটি এতোই মহান যে এখানে ঘৃণার কোন প্রশ্নই নেই। এখানে সবাইকেই স্বাগতম জানানো হয়। "দয়া করে এখানে আসুন। হরিনাম কীর্তন করুন, কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণ করুন এবং ভগবদ্গীতার কিছু চমৎকার দর্শন শুনুন। আর এইভাবে আপনার জড়জাগতিক বদ্ধ জীবনকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করুন।" এই হচ্ছে আমাদের কাজ। কৃষ্ণভাবনামৃত। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ। (চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য-৭.১২৮) "যার সাথেই তোমার দেখা হয়, যেখানেই দেখা হয়, এই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করার চেষ্টা কর"। কৃষ্ণকথা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী। তারাও সুখী হবে এবং আপনিও সুখী হবেন। তারপর পড়।

ভক্তঃ "যোগারুঢ় ব্যক্তি সর্বদা পরব্রহ্মে তাঁর মন নিবদ্ধ রাখবেন। তিনি নির্জন স্থানে একাকী বসবাস করবেন এবং সর্বদাই সতর্কভাবে তাঁর মনকে বশীভূত করবেন। তিনি বাসনামুক্ত ও পরিগ্রহরহিত হবেন।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এটি হচ্ছে পারমার্থিক জীবনের শুরু। এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যোগপদ্ধতির শিক্ষা দেবেন। তাই তিনি এখানে তা শুরু করছেন। একজন যোগী সর্বদাই তাঁর মনকে পরমতত্ত্বে নিবদ্ধ করবেন। পরমতত্ত্ব মানে হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তিনিই হচ্ছেন পরমসত্ত্বা, যেমনটা আমি একটু আগেই বর্ণনা করেছি যে, নিত্যোনিত্যানাং চেতনশ্চেতনাং (কঠ উপনিষদ ২.২.১৩) তিনি হলেন পরম নিত্য। তিনি পরম চেতন। সুতরাং সম্পূর্ণ যোগপদ্ধতির উদ্দেশ্য হল সেই পরম চেতনেই মনকে নিবদ্ধ করা। আমরা পরম চেতন নই। সেটি আপনারা বুঝতে পারেন। পরম চেতন হলেন ভগবান। এটি হচ্ছে দ্বৈতবাদ। দ্বৈত। দ্বৈত মানে হচ্ছে ভগবান আমার থেকে ভিন্ন একজন ব্যক্তি। তিনি হলেন পরমেশ্বর। আমি তাঁর অধীন। তিনি বিভু, আমি হলাম অণু। তিনি অসীম আর আমি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। এই হচ্ছে আমাদের সম্পর্ক। তাই যেহেতু আমরা হচ্ছি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র, তাই আমাদের উচিৎ অসীমে মনঃসংযোগ করা। সেই ধরণের একাকী থাকবেন। একা। এটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। একা থাকা মানে সেই ধরণের মানুষদের সঙ্গে বসবাস না করা যারা কৃষ্ণভাবনাময় বা ভগবদ-ভাবনাময় নয়, সেটি হচ্ছে একাকী থাকা। তিনি নির্জন স্থানে একাকী বাস করবেন। নির্জন স্থানে অথবা যেমন বনে। বন অত্যন্ত নির্জন স্থান। কিন্তু এই যুগে বনে যাওয়া আর নির্জন স্থান বের করা খুব কঠিন একটি কাজ। তাই নির্জন স্থান হচ্ছে যেখানে কেবলমাত্র ভগবৎ ভাবনামৃত শিক্ষা দেয়া হয়। সেটিই হচ্ছে নির্জন স্থান। সেইটিই হচ্ছে নির্জন স্থান। তাপর? তাঁর উচিৎ অত্যন্ত সতর্কভাবে মনকে বশীভূত করা। কিভাবে মন বশীভূত করা যাবে? তোমার মনকে কেবল পরমতত্ত্ব বা শ্রীকৃষ্ণতে নিবদ্ধ কর। এ ছাড়া অন্য কিছুতে নয়।

স বৈ মনঃ কৃষ্ণপদারবিন্দয়ো (ভাগবত ৯.৪.১৮)। তাহলে তোমার ... অন্য আরেকদিন আমি ব্যাখ্যা করছিলাম যে যদি তুমি তোমার মনকে কেবল শ্রীকৃষ্ণের কাছে রাখো, শ্রীকৃষ্ণ হলেন ঠিক আলো বা সূর্যের মতো। তাই সেখানে অন্ধকার দ্বারা মনের গ্রাস হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। কোনই সম্ভাবনা নেই। ঠিক একইভাবে যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে সর্বদা তোমার হৃদয়ে রাখো, তাহলে এই মায়া সেখানে পৌঁছুতে পারবে না। সে সেখানে পৌঁছুতে পারবে না। সেটিই হচ্ছে পন্থা। তিনি বাসনারহিত এবং অপরিগ্রহ হবেন। সম্পূর্ণ জাগতিক রোগটিই হচ্ছে এটি যে, আমি আরও আরও অধিকার করতে চাই এবং আমার বাসনা। আর আমি যা হারিয়েছি তাঁর জন্য শোক করি। আর যা পাই নি তা পাবার বাসনা করি। তাই ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা (গীতা ১৮.৫৪) যিনি প্রকৃতই ভগবদ্ভাবনাময়, কৃষ্ণভাবনাময়। জড় জাগতিক কিছু পাবার জন্য তাঁর কোন বাসনা নেই। তাঁর একমাত্র বাসনা হচ্ছে তিনি কিভাবে কৃষ্ণসেবা করবেন। তার মানে হচ্ছে তাঁর বাসনা পরিশুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। বাসনা এমনই, তুমি বাসনা করা পরিত্যাগ করতে পারো না। তা সম্ভব নয়। তুমি জীবসত্তা, তোমার বাসনা থাকবেই। কিন্তু আমাদের বাসনা এই মুহূর্তে কলুষিত। "আমি জাগতিক বস্তু লাভের দ্বারা আমার ইন্দ্রিয়গুলোকে তৃপ্তি দিতে চাই।" কিন্তু যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের জন্য বাসনা কর, তাহলে জাগতিক বস্তু লাভের বাসনা আপনা থেকেই দূর হয়ে যাবে। এরপর পড়।