BN/Prabhupada 0664 - শুন্যবাদ হচ্ছে আরেকটি মায়া। শুন্য বলে কিছু হতে পারে না

Revision as of 17:24, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 6.13-15 -- Los Angeles, February 16, 1969

তমাল কৃষ্ণঃ ভগবদগীতায়... "জাগতিক অস্তিত্বের বিনাশ মানে এই নয় যে সবকিছু শুন্যে লিন হয়ে যাবে, যা হচ্ছে কেবল কল্পনা মাত্র।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ জাগতিক অস্তিত্বের সমাপ্তি মানে শুন্য নয়। কারণ আমি শুনি নই, আমি চিন্ময় আত্মা। আমি যদি শুন্যই হতাম, তাহলে আমার এই শরীরটি এলো কথা থেকে? আমি শুন্য নই। আমি হলাম বীজ। ঠিক যেমন যখন তুমি মাটিতে বীজ বপন কর, সেটি তখন চারা বা পরবর্তীতে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়। ঠিক তেমনই, পিতার দ্বারা মাতৃগর্ভে বীজ প্রদান করা হয়, আর সেটি একটি বৃক্ষের মতো বড় হতে থাকে। শরীরটি আমরা দেখতেই পাচ্ছি। তাহলে শুন্যতা এলো কোথা থেকে? অহম্ বীজপ্রদ-পিতা (ভগবদগীতা ১৪.৪) চতুর্দশ অধ্যায়ে তোমরা দেখতে পাবে যে মূলত শ্রীকৃষ্ণ জড়া প্রকৃতির গর্ভে এই বীজটি দিয়েছিলেন আর সেখান থেকে অসংখ্য জীব উৎপন্ন হচ্ছে। তুমি এর বিরুদ্ধে তর্ক করতে পার না, কেননা প্রজনন প্রক্রিয়াটি আমাদের ব্যবহারিক জীবনের মতোই। আমরা দেখি যে পিতা মাতৃগর্ভে বীজ প্রদান করেন, আর মাতৃদেহে সেই শিশুটি পুষ্ট হতে থাকে। তাই শুন্যতার কোনও প্রশ্নই আসে না। বীজটি যদি শুন্যই হোত, তাহলে এতো সুন্দর দেহটি কিভাবে বৃদ্ধি পেল?

সুতরাং নির্বাণ মানে আর কোন জড় দেহ ধারণ করা নয়। একে শুন্য বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা কোর না। সেইটি হচ্ছে আরেক ধরণের মূর্খতা। তুমি শুন্য নও। শুন্য মানে এই জগতটিকে শুন্য বানিয়ে ফেলা। এই জড় দেহটি সমস্ত জাগতিক দুর্দশায় পূর্ণ। অপ্রাকৃত দেহটি লাভের চেষ্টা কর। তা সম্ভবও। যদ্ গত্বা ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমম্ মম (ভগবদগীতা ১৫.৬) এসব কথা সেখানে আলোচনা করা হয়েছে। আমাদেরকে এই বোঝার জন্য অত্যন্ত বুদ্ধিমান হতে হবে যে জীবনের সমস্যাগুলি কি কি, কিভাবে আমরা এই অমুল্য জীবনের সদ্ব্যবহার করব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই সারা বিশ্বে এই ধরণের শিক্ষার অভাব রয়েছে। সম্ভবত এইটিই হচ্ছে একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেটি কি না জীবনের প্রকৃত সমস্যাগুলো এবং এই জীবনের প্রকৃত মূল্যটি উপস্থাপন করছে। এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন তা করছে। এরপর পড়।

তমাল কৃষ্ণঃ "ভগবানের সৃষ্টিতে কোথাও শুন্য বলে কিছু নেই। বরং জাগতিক অস্তিত্বের..."

শ্রীল প্রভুপাদঃ শুন্য? তুমি যদি দেখবে তাহলে বুঝবে যে কোথাও, এমন কি সারা পৃথিবীতে কোথাও শুন্য কিছু নেই। ভূমিতে শুন্য বলে কিছু নেই, আকাশেও শুন্য বলে কিছু নেই, বাতাসেও শুন্য বলে কিছু নেই, জলে শুন্য কিছু নেই; আগুনেও শুন্য বলে কিছু নেই। তাহলে তুমি শুন্যতাটি পাচ্ছো কোথা থেকে? কোথা থেকে পেলে এই শুন্যতা? এই শুন্যবাদ দর্শন হচ্ছে আরেকটি মায়া। শুন্য বলে কিছুই হতে পারে না।