BN/Prabhupada 0708 - মাছের জীবন আর আমার জীবনের মধ্যে পার্থক্য

Revision as of 17:38, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 3.26.32 -- Bombay, January 9, 1975

যেহেতু আমি চিন্ময় আত্মা, তাই এই জড় জগতের পরিবেশ নিয়ে আমার করার মতো কিছুই নেই। অসঙ্গোহয়ম্‌ পুরুষঃ। চিন্ময় আত্মার কিছুই করার নেই। কিন্তু জাগতিক সঙ্গস্পর্শে, বিভিন্ন উপায়ে আমরা এই জড় দেহ নিয়েই চলছি এবং আমরা এখন ... এটি বন্ধন। ঠিক যেমন মাছ জালে আটকা পড়ে। ঠিক তেমনই আমরাও এই জাগতিক সমস্ত বস্তুর জালে জড়িয়ে গেছি। এটি অত্যন্ত কঠিন অবস্থা। যেমনভাবে মাছ ধরে যে জেলে তার জালরূপ মায়ায় আটকে পড়ে তেমনই আমরাও জড়া প্রকৃতির সৃষ্ট এই জালে আটকে গেছি। প্রকৃতে ক্রিয়মানানি গুণৈঃ কর্মাণি সর্বশঃ (গীতা ৩/২৭) যেহেতু আমরা কোন একটি বিশেষ গুণের জড়া প্রকৃতির সাথে সঙ্গ করছি, তাই আমরা সেই জালে জড়িয়ে পড়েছি। যেমন মাছ জড়িয়ে পড়ে, আমরাও জড়িয়ে পড়েছি। এই জড় জগত একটি মহাসমুদ্রের মতো, ভবার্ণব। অর্ণব মানে সাগর। ভব মানে সেই অবস্থা যেখানে বারবার জন্মমৃত্যু ঘটতে থাকে। তাকে বলা হয় ভবার্ণব। অনাদি করম ফলে পড়ি ভবার্ণব জলে। অনাদি করম ফলেঃ "আনাদি কাল ধরে আমি আমার নিজ কর্মফল তৈরি করেছিলাম এবং যে কোনভাবেই হোক আমি এখন এই ভবার্ণবে পড়েছি, জন্মমৃত্যুর চক্রে পতিত হয়েছি। ঠিক যেভাবে মাছ জালে আটকে গিয়ে বাঁচার জন্য লড়াই করে, কীভাবে সেই জাল থেকে বেরিয়ে আসা যায়, সে শান্তিতে থাকতে পারে না। তোমরা দেখবে যে যেই মুহূর্তে সে জালে আটকা পড়ে, সঙ্গে সঙ্গে "ফট্‌ ফট্‌ ফট্‌ ফট্‌"। সে বের হতে প্রবল চেষ্টা করে। এভাবে আমাদেরও এখন এই দশা কীভাবে বের হব। আমরা জানি না।

এখান থেকে বের হবার একটাই রাস্তা, শ্রীকৃষ্ণের কৃপা। তিনি সবকিছু করতে পারেন। তিনি মুহূর্তের মধ্যে আমাদের এই বন্ধন থেকে মুক্তি দিতে পারেন। নয়তো তিনি সর্বশক্তিমান কীভাবে? আমি বেরোতে পারছি না। মাছ বের হতে পারে না... কিন্তু যদি সেই জেলে চায়, সে তাকে তৎক্ষণাৎ মুক্ত করে জলে ছেড়ে দিতে পারে । তারপর সে আবার জীবন ফিরে পেতে পারে। ঠিক তেমনই যদি আমরাও শ্রীকৃষ্ণের কাছে আত্মসমর্পণ করি, তিনি আমাদের তৎক্ষণাৎ মুক্তি দিতে পারেন। তিনি বলেছেন, "অহম্‌ ত্বাম্‌ সর্বপাপেভ্য মোক্ষয়াস্যামি মা শুচঃ (গীতা ১৬/৬৬) যদি তুমি কেবল আমার শরণাগত হও। ঠিক যেমন জেলেটি দেখছে যে মাছটি ফট্‌ ফট্‌ করছে , কিন্তু মাছটি যদি আত্মসমর্পণ করে... সে আত্মসমর্পণ করতে চায়, কিন্তু সে ভাষা জানে না। তাই সে ঐ জালেই পড়ে থাকে। কিন্তু যদি সেই জেলে চায়, তাহলে তাকে বের করে জলে ছেড়ে দিতে পারে। তেমনই আমরাও যদি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত হই... সেই শরণাগতির জন্যই এই মানব জন্ম... অন্য জন্মে, যেমন মাছ করতে পারে না। কিন্তু আমি পারি। সেটিই হচ্ছে মাছের জীবন আর আমার জীবনের পার্থক্য। যে মাছ জালে আটকা পড়েছে, তার কোন শক্তি নেই। তার সব শেষ।