BN/Prabhupada 0747 - দ্রৌপদী প্রার্থনা করেছিলেন - হে কৃষ্ণ, যদি তুমি চাও, আমাকে রক্ষা কর"

Revision as of 04:28, 7 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0747 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 1.8.24 -- Los Angeles, April 16, 1973

তো দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় কর্ণ অপমানিত হয়েছিলেন। স্বয়ম্বর সভায়...... স্বয়ম্বর মানে, বড় বড় রাজকন্যাদের, খুব গুনবতী রাজকন্যারা, তাঁরা নিজেদের পতি নির্বাচন করতেন। ঠিক যেমন তোমাদের দেশে, মেয়েদেরকে তাদের নিজেদের স্বামী নির্বাচন করতে দেয়া হয়, সে যাকে পছন্দ করে। এটা সাধারণ মেয়েদের জন্য ভালো নয়, কিন্তু যারা অসাধারণ, উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন, যে জানে কিভাবে নির্বাচন করতে হয়, এই ধরণের মেয়েদের তাদের নিজেদের পতি নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া হতো, কোন কঠিন শর্তের অধীনে। ঠিক যেমন দ্রৌপদীর পিতা এই শর্ত আরোপ করেছিলেন- ছাদে একটি মাছ থাকবে,আর একজনকে এই মাছের চোখ ভেদ করতে হবে, সরাসরি দেখে নয়, নিচে জলের মধ্যে ঐ মাছের ছায়া দেখে। তো সেখানে অনেক রাজপুত্ররা ছিলেন। যখনই এই ঘোষণা দেয়া হল, সকল রাজকুমারগণ লড়াই করতে আসলো। এটি ক্ষত্রিয় নীতি।

তো দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভার মধ্যে কর্ণও উপস্থিত ছিলেন। দ্রৌপদী জানতেন...... দ্রৌপদীর আসল উদ্দেশ্য ছিল অর্জুনকে তাঁর পতি রূপে গ্রহণ করা। কিন্তু তিনি জানতেন কর্ণ সেখানে আছেন। যদি কর্ণ প্রতিযোগিতা করে, তাহলে অর্জুন সফল হতে পারবে না। তাই সে বলল যে, "এই প্রতিযোগিতায় ক্ষত্রিয় ছাড়া কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।" তার মানে, কর্ণ সে সময় জানত না যে সে ক্ষত্রিয় ছিল। তিনি ছিলেন কুন্তী দেবীর বিবাহ হওয়ার আগের পুত্র। কিন্তু মানুষ তা জানত না। এটি গোপন ছিল। কর্ণ একজন সূত্রধর কর্তৃক প্রতিপালিত হন, তাই তিনি শূদ্র রূপে পরিচিত ছিলেন। তাই দ্রৌপদী এই সুযোগটি নিলেন আর বললেন যে "আমি চাই না যে কোন শূদ্র এখানে আসুক আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। আমি তা চাই না।" এভাবে কর্ণকে অনুমতি দেয়া হয়নি। তাই কর্ণ এটাকে বিরাট অপমান রূপে নিলেন।

এখন যখন দ্রৌপদী খেলায় হেরে গেলেন, তিনিই প্রথম এগিয়ে এলেন। সে ছিল দুর্যোধনের বড় বন্ধু। "এখন আমরা দ্রৌপদীর নগ্ন সৌন্দর্য দেখতে চাই।" সেই সভায় অনেক বয়োজ্যেষ্ঠরা ছিলেন। ধৃতরাষ্ট্র ছিলেন। ভীষ্মদেব, দ্রোণাচার্য ছিলেন। তবু তারা প্রতিবাদ করেননি, "ওহ্‌, কি হচ্ছে, তোমরা একজন রমণীকে সভা মধ্যে বিবস্ত্র করতে চাচ্ছ?" তারা প্রতিবাদ করেননি। তাই অসৎ সভায়াহ্‌, "অসভ্য লোকের সভা।" অসভ্য মানুষ রমণীকে বিবস্ত্র দেখতে চায়। কিন্তু দেখেছ, আজকাল এটা একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে? একজন মহিলা হবে না, সম্ভবত তার পতি ছাড়া কারো সামনে বিবস্ত্র হবে না। এটি বৈদিক সংস্কৃতি। কিন্তু যেহেতু এইসব বদমাশরা এই বিশাল সভায় দ্রৌপদীকে বিবস্ত্র দেখতে চেয়েছিল, তাই তারা সব বদমাশ, অসৎ। সৎ মানে ভদ্র আর অসৎ মানে অভদ্র। তাই অসৎ সভায়াহ্‌, "অভদ্রদের সভায়, তুমি রক্ষা কর"- শ্রীকৃষ্ণ রক্ষা করেছিলেন। দ্রৌপদী বিবস্ত্র হতে যাচ্ছিলেন, তাঁর শাড়ি খুলে নেয়া হচ্ছিল, কিন্তু শাড়ি শেষ হচ্ছিল না। শ্রীকৃষ্ণ শাড়ি সরবরাহ করছিলেন।

তাই তারা তাঁকে নগ্ন করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পরেছিল।(হাসি) তিনি কখনোই বিবস্ত্র হননি, গাদা গাদা শাড়ীর স্তূপ জমে গিয়েছিল। তারা বুঝতে পেরেছিল "এটি অসম্ভব।" এবং দ্রৌপদীও সর্বপ্রথম তাঁর শাড়ি রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি কিইবা করতে পারতেন? তিনি ছিলেন মহিলা, আর তারা ছিল দুইজন পুরুষ। কর্ণ আর দুঃশাসন তারা তাঁকে বিবস্ত্র করার চেষ্টা করছিল। তাই তিনি কাঁদছিলেন আর শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করছিলেন, "রক্ষা করুন আমার প্রভু।" কিন্তু তিনি নিজে নিজে চেষ্টাও করছিলেন নিজেকে রক্ষা করার জন্য। যখন তিনি ভাবলেন যে "এইভাবে আমার নিজেকে রক্ষা করা অসম্ভব, হে আমার প্রভু," তখন তিনি হাত ছেড়ে দিলেন। তিনি শুধুমাত্র তাঁর দুই বাহু তুলে প্রার্থনা করতে লাগলেন, "কৃষ্ণ, তুমি যদি চাও তাহলে আমাকে রক্ষা করতে পার।"

তো এটি হচ্ছে স্থিতি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করব, সেটা তেমন একটা ভালো নয়। তুমি যদি শুধু শ্রীকৃষ্ণের ওপর নির্ভর কর, "হে কৃষ্ণ, তুমি যদি আমাকে রক্ষা কর, তাহলে ঠিক আছে। অন্যথায় আমাকে মেরে ফেলুক, তুমি যা চাও।" তোমরা দেখেছ? মারবি রাখবি- যো ইচ্ছা তোহারা। ভক্তিবিনোদ ঠাকুর বলেছেন, "আমি তোমার নিকট আত্মসমর্পণ করলাম।" মানস দেহ, গেহ যো কিছু মোর, "হে আমার প্রভু, আমি যা কিছু পেয়েছি, আমার যা কিছু আছে... আমি কি পেয়েছি? আমি এই দেহটি পেয়েছি। আমি আমার মন পেয়েছি। আমি একটি ছোট্ট বাড়ি আর আমার পত্নী আর সন্তানদের পেয়েছি। এই গুলো আমার অধিকারে।" তাই মানস দেহ, গেহ, যো কিছু মোর। "তাই আমার যা কিছু আছে- এই দেহ ,মন, এই পত্নী, এইসব বাচ্চা, এই বাড়ি, সব কিছু আমি তোমার নিকট সমর্পণ করলাম।" মানস দেহ, গেহ যো কিছু মোর, অর্পিলু তুয়া পদে নন্দকিশোর। শ্রীকৃষ্ণ নন্দকিশোর নামে পরিচিত। তাই এটিি হচ্ছে আত্মসমর্পণ, কোন কিছু রেখে নয়, সম্পূর্ণ সমর্পণ, অকিঞ্চন।