BN/Prabhupada 0769 - বৈষ্ণব অত্যন্ত সুখী কারণ তিনি শ্রীকৃষ্ণের সরাসরি সংযোগে থাকেন

Revision as of 12:21, 7 June 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0769 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1975 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 6.1.6-7 -- Honolulu, June 8, 1975

পরীক্ষিৎ মহারাজ ছিলেন একজন বৈষ্ণব। বৈষ্ণব মানে ভক্ত। তাই তিনি মানুষের এভাবে কষ্ট পাওয়াটাকে সহ্য করতে পারেননি। এটি হচ্ছে বৈষ্ণবের স্বভাব। বৈষ্ণব নিজে খুব সুখী, কারণ সে শ্রীকৃষ্ণের সাথে সরাসরি সম্পর্ক যুক্ত। তাঁর ব্যক্তিগত কোন অভিযোগ নেই, কারণ একজন বৈষ্ণব শুধু শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেই সন্তুষ্ট। এটিই সব। তিনি কোন কিছু প্রত্যাশা করেন না।

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু অন্ততপক্ষে আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, ন ধনং, ন জনং ন সুন্দরীং কবিতাং বা জগদীশ কাময়ে (চৈচ অন্ত্য ২০.২৯)। ধনম্‌ মানে সম্পদ, আর জনম্‌ মানে অনেক অনুসারী। অথবা পরিবারের সদস্যরা, বড় পরিবার, বিশাল কারখানা। অনেক ব্যবসায়ী আছেন, যারা বড় বড় কল কারখানার পিছনে ছুটছে। হাজার হাজার মানুষ তার নির্দেশনায় কাজ করছে। আর এটিও সম্পদ। বিশাল পরিমাণ অর্থ থাকা, এটিও সম্পদ। ধনম জনম। আর আরেক ধরনের সম্পদ হচ্ছে, খুব সুন্দরী স্ত্রী থাকা, সুন্দর, অনুগত, খুব সন্তুষ্ট। তো এগুলো হচ্ছে জাগতিক প্রয়োজন। মানুষ সাধারণত এই তিনটি জিনিসের জন্য আকাঙ্ক্ষা করেঃ সম্পদ, অনেক অনুসারী, আর বাড়িতে একটি সুন্দরী স্ত্রী। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, ন ধনমঃ "আমি অর্থ চাই না।" ঠিক বিপরীত। প্র্যতেকেই অর্থ চায়। তিনি বলছেন, "না, আমি অর্থ চাই না।" ন ধনং ন জনংঃ "আমি বহু মানুষ চাই না, আমার অনুসারী হিসেবে।" দেখ ঠিক বিপরীত। প্রত্যেকেই চায়। রাজনীতিবিদ, যোগী, স্বামী, প্রত্যেকেই চায়। "আমার হাজার হাজার অনুসারী থাকবে।" কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলছেন, "না, আমি চাই না।" ন ধনং, ন জনং ন সুন্দরীং কবিতাং বা জগদীশ কাময়ে। "না আমি চাই কোন চমৎকার, সুন্দরী আর অনুগত স্ত্রী।" তাহলে তুমি কি চাও? মম জন্মনি, জন্মনীশ্বরে ভবতাদ্ভক্তিরহৈতুকীঃ "জন্ম জন্মান্তরে আমাকে তোমার অনুগত ভৃত্য করে রাখ হে ভগবান।"

এই হচ্ছে বৈষ্ণব। তিনি কোন কিছু চান না। তিনি কেন চাইবেন? যদি তিনি শ্রীকৃষ্ণের দাস হন, তাহলে তিনি কি চাইবেন? ধর তুমি খুব খুব বড় একজন ব্যক্তির সেবক হয়েছ, তাহলে তোমার চাওয়ার প্রশ্ন কোথায়? এটি হচ্ছে বুদ্ধি। কোন বড় ব্যক্তির কোন সেবক, তার প্রভুর থেকেও বড়, কারণ তাকে দেয়া হয়... প্রভুকে বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিবেশন করা হয়। প্রভু খুব অল্পই খান, আর বাকীটা সেবকই খায়। (হাস্য) তাহলে তার অভাব কোথায়? অভাবের কোন প্রশ্নই নেই। শুধু ভগবানের দাস হওয়ার চেষ্টা কর, তাহলে তোমার সমস্ত প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে পূরণ হবে। এটি হচ্ছে বুদ্ধি। ঠিক যেমন একজন ধনী মানুষের সন্তান, সে কি বাবার কাছ থেকে কিছু চায়? না, সে শুধু বাবা, মাকেই চায়। বাবা মা জানেন, তার কি প্রয়োজন, সে কিভাবে খুশী হবে। এটি হচ্ছে পিতা মাতার দায়িত্ব। একইভাবে, এটি খুব ভালো বুদ্ধিঃ শুধু শ্রীকৃষ্ণের ঐকান্তিক দাস হওয়ার চেষ্টা কর। তোমার জীবনের সমস্ত প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করা হবে। চাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই।

তাই বুদ্ধিমান ভক্তরা চান না, বুদ্ধিহীন ভক্তদের মতো, যারা গির্জায় গিয়ে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে, "আমাদের দৈনন্দিন খাবার দাও।" সে ভগবানের দাস, আর সে কি তার খাওয়া পাবে না? তোমাকে ভগবানের কাছে চাইতে হবে? না। ভগবান অন্যান্য আট লক্ষ জীবকে খাদ্য প্রদান করছেন। পাখি, পশু, বাঘ, হাতীদের, তারা খাবার চাওয়ার জন্য গির্জায় যায় না। কিন্তু তারা সেটা পাচ্ছে। তাই ভগবান যদি প্রতিটি জীবের আহার দিতে পারেন, তাহলে তোমাকে কেন দিবেন না? তিনি দিচ্ছেন। সুতরাং কিছু জাগতিক সুবিধা লাভের জন্য তোমাদের ভগবানের কাছে ভিক্ষা চাওয়া উচিত নয়। এটি প্রকৃত ভক্তি নয়। আমাদের ভগবানের কাছে যাওয়া উচিত এই প্রার্থনা করার জন্য যে, কিভাবে একজন ভগবানের সেবায় নিয়োজিত হতে পারে। যে প্রার্থনা করা উচিতঃ "হরে কৃষ্ণ," মানে... হরে মানে "হে ভগবানের শক্তি, আর কৃষ্ণ মানে, হে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, দয়া করে আমাকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত কর।" এই হচ্ছে হরে কৃষ্ণ।

হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে,
হরে রাম, হরে রাম, রাম রাম, হরে হরে।

এটি শুধু প্রার্থনা, "হে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, হে শ্রীমতি রাধারাণী, শ্রীকৃষ্ণের শক্তি, দয়া করে আমাকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত কর।" এটিই সব। সব কাজ শেষ। এই হচ্ছে বৈষ্ণব। তাই বৈষ্ণবের কিছু প্রয়োজন হয় না। সে জানে যে "আমার কিছু চাওয়ার নেই। আমার একমাত্র কাজ হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা।" তাই তিনি সর্বাবস্থায় সুখী থাকেন।