BN/Prabhupada 0808 - আমরা কৃষ্ণকে প্রতারণা করতে পারি না

Revision as of 07:02, 4 September 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


730926 - Lecture BG 13.03 - Bombay

সুতরাং যখনই আমাদের চেতনা কৃষ্ণভাবনাময় হয়ে উঠবে, শ্রীকৃষ্ণ তা বুঝতে পারবেন। শ্রীকৃষ্ণ তোমার হৃদয়ে রয়েছেন। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৮.৬১)।

তাই শ্রীকৃষ্ণ তোমার উদ্দেশ্য বুঝতে পারবেন। তুমি তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবে না। শ্রীকৃষ্ণ তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারবেন, তুমি কতটা সচেতন আর ঐকান্তিক, শ্রীকৃষ্ণকে জানার জন্য অথবা তাঁর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য কিংবা ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার জন্য। শ্রীকৃষ্ণ সেটি বুঝতে পারেন। যখনই তিনি অনুভব করবেন যে "এখানে একটি আত্মা আছে, সে খুবই ঐকান্তিক," তিনি বিশেষভাবে তোমার যত্ন নিবেন। সমোহহং সর্বভূতেষু। পরম পুরুষোত্তম ভগবান হওয়ায়, শ্রীকৃষ্ণ সকলের প্রতি সমদর্শী। সমোহহং সর্বভূতেষু। ন মে দ্বেষ্যোহস্তি ন প্রিয়ঃ (BG 9.29)। কেউ প্রিয় নয়, অথবা দ্বেষ বা ঈর্ষার পাত্র নয়। শ্রীকৃষ্ণ ঈর্ষাপরায়ণ নন, অথবা কারো প্রতি বিশেষভাবে আগ্রহীও নন। প্রকৃতপক্ষে ভগবানের অবস্থান নিরপেক্ষ। প্রত্যেককে... তিনি প্রত্যেককে ভালোবাসেন। সুহৃদং সর্বভূতানাং জ্ঞাত্বা মামং শান্তিমৃচ্ছতি (শ্রীমদ্ভগবপদ্গীতা ৫.২৯)। ভগবদ্গীতায়ও এটি বলা হয়েছে। তিনি প্রত্যেকের বন্ধু।

আমরা আমাদের মনোভাব বুঝতে পারে এমন অনেক মানুষকে আমাদের বন্ধু হিসেবে খুঁজি। কিন্তু আমরা যদি শ্রীকৃষ্ণকে বন্ধু বানাই, যদি আমরা বুঝতে পারি যে শ্রীকৃষ্ণ ইতোমধ্যেই প্রস্তুত... উপনিষদে বলা হয়েছে যে, দুটি বন্ধু পাখি দেহ রূপ একই বৃক্ষে বসে আছে। তাই আমরা যদি বুঝতে পারি যে শ্রীকৃষ্ণই আমার সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু..." শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সুহৃদং সর্বভূতাং। তিনি শুধু আমার, তোমার বন্ধু নন, তিনি সকলের বন্ধু। এই বন্ধুত্ব সকলের জন্য সমানভাবে বন্টিত। কিন্তু কেউ যদি বিশেষ ভক্ত হয়, যে তু ভজন্তি মাম্‌ প্রীয়া, যে প্রেম এবং ভক্তি সহকারে ভগবানের সেবায় নিয়োজিত, তিনি তার প্রতি বিশেষভাবে আগ্রহী হন। এটি হচ্ছে ভক্তের প্রতি শ্রীকৃষ্ণের করুণা। শ্রীকৃষ্ণ সকলের প্রতি সমভাব, কিন্তু ভক্তদের প্রতি বিশেষভাবে আগ্রহী। যে বিশ্বাস আর ভক্তি সহকারে তাঁর সেবায় নিয়োজিত।

তেষাং সততযুক্তানাং
ভজতাং প্রীতিপূর্বকম্‌
দদামি বুদ্ধিযোগং তং
যেন মামুযান্তি তে
(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১০.১০)।

শ্রীকৃষ্ণ তাকে প্রদান করেন... কারণ তিনি বিশেষভাবে ভক্তদের যত্ন গ্রহণ করেন...

তিনি প্রত্যেকের হৃদয়ে বসে আছেন, ক্ষেত্রজ্ঞং চাপি মামং বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত (BG 13.3)। কিন্তু তিনি বিশেষভাবে ভক্তের যত্ন গ্রহণ করেন, পরিচালনা করেন, তাঁকে বুদ্ধি দান করেন। কি ধরণের বুদ্ধি? যেন মামুযান্তি তে। তাকে শুধু একটু সূত্র প্রদান করেন যে কিভাবে সে ভগবদ্ধামে ফিরে যেতে পারে। কিভাবে একজন জাগতিকভাবে উন্নতি সাধন করতে পারে, সে ব্যাপারে শ্রীকৃষ্ণ বুদ্ধি দান করেন না। এই ভার মায়া দেবীর ওপর ন্যস্ত- দৈবী মায়া বা দূর্গা দেবী। যার কারণে মানুষ শ্রীকৃষ্ণের আরাধনার প্রতি এতোটা আগ্রহী হয়না। তারা সাধারণত দেবীদূর্গা বা শিব ঠাকুরের পূজা করতে বেশী আগ্রহী। কারণ শিব ঠাকুর এবং দূর্গাদেবীর পূজা করার মাধ্যমে তারা জাগতিক ঐশ্বর্য লাভ করতে পারে। তাই দেবদেবীর আরাধনা মানে ১০০% জড়বাদ। পারমার্থিক জীবনের কোন প্রশ্নই এখানে নেই। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন... শ্লোকটি কি? নষ্টবুদ্ধয়ঃ। কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ যজন্তি অন্য দেবতাঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৭.২০)। যারা অন্যান্য দেবদেবীর পূজা করে, তাদের বুদ্ধি অপহৃত হয়েছে, হৃতজ্ঞান। কামৈস্তৈস্তৈর, মায়াপহৃতজ্ঞানা। শব্দ গুলো এখানে রয়েছে। মায়া দুইভাবে কাজ করছেঃ প্রক্ষেপাত্মিকা শক্তি, আবরণাত্মিকা শক্তি। আবরণআত্মিকা শক্তি মানে তিনি আবৃত করে রাখেন। আবরণআত্মিকা শক্তি, তিনি ঢেকে রাখেন। আসল কারণ হচ্ছে মায়া দ্বারা আবৃত।