BN/Prabhupada 0836 - মনুষ্যজীবনের সার্থকতার জন্য যে কোন কিছু উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকো

Revision as of 09:39, 11 August 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0836 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1966 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on CC Madhya-lila 20.100-108 -- New York, November 22, 1966

একজন সাধু বা ভক্ত যদিও তিনি সবকিছু জানেন, তা সত্ত্বেও তিনি নিজেকে এমনভাবে রাখেন যে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি কখনও বলেন না যে, "আমি সব জানি"। পক্ষান্তরে, সবকিছু জানা সম্ভব না তা সম্ভব না। কিন্তু ... ঠিক যেমন স্যার আইজ্যাক নিউটন, তিনি বলেছিলেন যে, "লোকে বলে আমি অনেক কিছু জানি, কিন্তু আমি জানি না যে আমি কি শিখেছি, আমি কেবল সমুদ্রের পাড়ে কিছু নুড়ি কুড়োবার চেষ্টা করছি মাত্র।" এই ছিল তাঁর অবস্থান। যদি কেউ প্রকৃতই বিদ্বান হন, তিনি কখনও বলবেন না যে, "আমি বিদ্বান"। তিনি বলবেন, "আমি এক নম্বর মূর্খ, আমি জানি না"।

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর এই বিনয় মনোভাবের খুব প্রশংসা করেছিলেন কারণ আসলে তিনি সত্যিই খুব বিদ্বান ছিলেন এবং সমাজে অনেক সম্মানিত ছিলেন তাই ব্যবহারের ভদ্রতা বশে, তিনিও স্বীকার করেছিলেন, "না, তুমি অধঃপতিত নও। নিরাশ হয়ো না যে কোন বিদ্বান ব্যক্তির কর্তব্য হচ্ছে নিজেকে এইভাবে উপস্থাপন করা। কিন্তু তুমি মূর্খ নও।" কৃষ্ণশক্তি ধর তুমিঃ (চৈতন্য চরিতামৃত ২০.১০৫) "কারণ তুমি ইতিমধ্যেই ভক্ত" অবসর নিয়ে মহাপ্রভুর কাছে আসার আগে এই গোস্বামীগণ সংস্কৃতে অত্যন্ত পণ্ডিত ছিলেন। তাঁরা ভাগবত পড়তেন যখন তিনি নবাবের কাছে মিথ্যা জানালেন যে, "আমার শরীর ভাল নেই, আমি কাজে আসতে পারব না" তা শুনে নবাব একদিন সশরীরে ব্যক্তিগতভাবে এলেন "এই লোকটা দরবারে আসছে না, আর অসুস্থতার কথা বলছে, ব্যাপারটা কি?" যখন তিনি গিয়ে দেখলেন যে, তিনি পণ্ডিতদের শ্রীমদ্ভাগবত আলোচনায় ব্যস্ত, তিনি বুঝলেন, "ওহ্‌ এই নাকি তোমার অসুস্থতা। এখন তুমি ভাগবত পড়ছ।" তাই আসলে তিনি অনেক বিদ্বান ছিলেন, কিন্তু তাঁর দৈন্য ব্যবহারের কারণে, তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সামনে নিজেকে অত্যন্ত বিনয়ী ভাবে উপস্থাপন করেন

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন,

সদ্ধর্মস্যাবধোয়ায়
যেষাম্‌ নির্বন্ধিনী মতিঃ
অচিরাৎ এব সর্বতঃ
সিদ্ধত্যি এষাম্‌ অভীপ্সিতঃ
(চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ২৪/১৭০)

তিনি বললেন, "যেহেতু সিদ্ধিলাভের বাসনা রয়েছে, তাই তুমি এতো বিনয়ী"। তিনি নারদীয় পুরাণ থেকে একটি শ্লোক উচ্চারণ করে বললেন যে, যে ব্যক্তি ঐকান্তিক ... "সদ্ধর্মের উদয় করাবার জন্য যার মতি অবিচলিত, নিজেকে যথার্থভাবে জানতে যিনি ঐকান্তিক, শীঘ্রই তাঁর অভীপ্সিত সর্বসিদ্ধি নিশ্চিত। একমাত্র বিষয় হচ্ছে যে, সেই ব্যক্তিকে অত্যন্ত ঐকান্তিক হতে হবে। এই শ্লোকের তাৎপর্য - সদ্ধর্মস্যাবধোয়ায় যেষাম্‌ নির্বন্ধিনী মতিঃ নির্বন্ধিনী মতিঃ মানে এই যে, তিনি ইতিমধ্যেই দৃঢ় হয়েছেন যে, "আমার এই জীবনেই আমাকে সিদ্ধিলাভ করতে হবে"। তাঁর জন্য সিদ্ধিলাভ নিশ্চিত। নিশ্চিত। সে যদি মনে করে, "ওহ্‌ ঠিক আছে, কৃষ্ণভাবনামৃতটা একটু পরখ করে দেখি, এবং একই সঙ্গে অন্যান্য কিছুও পরীক্ষা করে দেখি। এইভাবে করে দেখি..." । না। এই জীবনেই পূর্ণ সিদ্ধি লাভের জন্য ভক্তকে অত্যন্ত ঐকান্তিক হতে হবে। সনাতন গোস্বামীর মতো ঐকান্তিক হতে হবে সেই উদ্দেশ্যে তিনি সবকিছুই উৎসর্গ করেছেন, ভিখারি হয়ে গিয়েছিলেন। তাই আমাদের এই মানব জীবনে সাফল্য লাভের জন্য যে কোন কিছু উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকতে হবে তাহলে সর্বসিদ্ধি নিশ্চিত। আমাদেরকে শুধু অত্যন্ত ঐকান্তিক হতে হবে। ব্যাস্‌।