BN/Prabhupada 0873 - ভক্তি মানে সমস্ত উপাধি থেকে আমাদের মুক্ত হওয়া

Revision as of 15:33, 19 July 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Bengali Pages - 207 Live Videos Category:Prabhupada 0873 - in all Languages Categor...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


750519 - Lecture SB - Melbourne

ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য আমি এখন ভারতীয় দেহ পেয়েছি, তুমি অস্ট্রেলিয়ান বা আমেরিকান দেহ পেয়েছ। কিন্তু তোমাকে এই দেহ পরিবর্তন করতে হবে। তথা দেহান্তর প্রাপ্তির্ধীরস্তত্র ন মুহ্যতি (ভগবদগীতা ২/১৩) আমরা নিত্য। ন জায়তে ন ম্রিয়তে বা কদাচিন্‌ (ভগবদগীতা ২/২০) আত্মা জন্মগ্রহণ করেও না, আত্মা মৃত্যুও বরণ করে না। আমরা কেবল দেহ পরিবর্তন করি। তথা দেহান্তর প্রাপ্তিঃ। ঠিক যেমন আমরা দেহ পরিবর্তন করি।

মাতৃগর্ভে আমাদের একটি ছোট্ট দেহ ছিল। এটা বৃদ্ধি পেয়েছে, আর আমরা বেরিয়ে এসেছি। আবার তা বড় হচ্ছে। বড় হচ্ছে... এটা আসলে বড় হওয়া নয়, এটা পরিবর্তন। একটা সদ্যোজাত শিশু তাঁর দেহ পরিবর্তন করে ছোট বাচ্চায় পরিণত হচ্ছে, বাচ্চা দেহ পরিবর্তন করে বালক হচ্ছে আর সেই বালক তার দেহ পরিবর্তন করে যুবক হচ্ছে। এইভাবে তুমি তোমার দেহ পরিবর্তন করছ। সেই অভিজ্ঞতা তোমার আছে তোমার একটা শিশুদেহ ছিল, তা তোমার মনে আছে। অথবা তোমার এও মনে আছে যে তোমার একটা বালক দেহ ছিল। কিন্তু সেই দেহটি এখন আর নেই। কিন্তু তুমি বর্তমান আছ তাই সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে এই দেহটি যখন আর বাসের উপযুক্ত থাকবে না আমাদেরকে আরেকটি দেহ গ্রহণ করতে হবে। একেই বলা হচ্ছে তথা দেহান্তরপ্রাপ্তিঃ তাই আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। সেটিই প্রকৃতির আইন। আত্মা শাশ্বত। ন জায়তে ন ম্রিয়তে বা কদাচিৎ ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে (গীতা ২/২০) আত্মার বিনাশ নেই; কেবল একটি নির্দিষ্ট ধরণের দেহই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। মানুষ তা জানে না। এবং যেহেতু তারা কেবল পাপকার্যে লিপ্ত ওদের মাথাটা এতোই বুদ্ধিহীন হয়ে গেছে যে এই সরল সত্যটি ওরা বুঝতে পারছে না যে তুমি এই জন্মেই তোমার দেহ পরিবর্তন করছ, তাহলে তোমাকে পর জন্মে গিয়েও এই দেহ পরিবর্তন করতে হবে একদম সরল সত্য। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার উন্নতিতে আমরা এতোই মস্তিষ্কহীন আর মূর্খ হয়ে গেছি যে আমরা এটি বুঝতে পারছি না

কিন্তু ভারতে এখনও, যদিও তা অত্যন্ত পতিত, তবু যদি কোন দূর গ্রামে যাবে একটি সাধারণ মানুষ, তাঁর কোন শিক্ষা নেই, তিনি বিশ্বাস করেন। তিনিও বিশ্বাস করেন। আর এই পাশ্চাত্য দেশগুলিতে আমি অনেক বড় বড় অধ্যাপক দেখেছি, এই সম্পর্কে তাঁদের কোন ধারণাই নেই আমি মস্কোতে একজন বড় অধ্যাপকের সাথে কথা বলেছি তিনি বলেছেন, "স্বামীজী, এই দেহ শেষ হয়ে যাবার পর সবকিছু শেষ"। অবস্থা দেখ। তিনি একজন বিশাল অধ্যাপক এবং ভারততত্ত্ব নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের অধ্যাপক তাঁর কোন ধারণাই নেই। কিন্তু তা সত্য নয়। পক্ষান্তরে সত্যটি হচ্ছে, আমরা সকলেই চিন্ময় আত্মা, ভগবানের অংশ। কোনওনা কোনভাবে আমরা এই জড় জগতে এসেছি ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য চিন্ময় জগতে কোন ইন্দ্রিয় তৃপ্তি নেই। সেখানে ইন্দ্রিয় শুদ্ধি রয়েছে এই জগতে ইন্দ্রিয়গুলো অশুদ্ধ এগুলো কেবল জড়বস্তু ভোগ করতে চায় তাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত মানে আমাদেরকে এই ইন্দ্রিয়গুলো শুদ্ধ করতে হবে। সেটাই উপায়।

সর্বোপাধি বিনির্মুক্তম্‌
তৎপরত্বেন নির্মলম্‌
হৃষীকেন হৃষীকেশ
সেবনম্‌ ভক্তিরুচ্যতে
(চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ১৯/১৭০)

তাই ভক্তি মানে আমাদেরকে এইসব উপাধি থেকে মুক্ত হতে হবে সেই উপাধি কি? সবাই ভাবছে "আমি আমেরিকান", "আমি ভারতীয়", "আমি ইউরোপিয়ান", "আমি অস্ট্রেলিয়ান" "আমি বেড়াল," "আমি কুকুর", "আমি এটা", "আমি সেটা" ০ দেহগত ভাবনা আমাদেরকে এই দেহগত ধারণা পরিবর্তন করতে হবে - "আমি এই দেহ নই," অহম্‌ ব্রহ্মাস্মিঃ "আমি চিন্ময় আত্মা"। সেই কথা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে তাহলে কোন পার্থক্য থাকবে না, "ইনি আমেরিকান, ইনি অস্ট্রেলিয়ান" ইনি হিন্দু, ইনি মুসলমান, এটি গাছ, এটি..." না। পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ (গীতা ৫/১৮) পণ্ডিতা মানে বিদ্বান, যিনি জানেন কোনটা কি তাঁদের জন্য,

বিদ্যা বিনয়ে সম্পন্নে
ব্রাহ্মণে গবি হস্তিনি
শুনিচৈব শ্বপাকে
পণ্ডিতাঃ সমদর্শিনঃ
(গীতা ৫/১৮)

একজন ব্যক্তি, অত্যন্ত বিদ্বান, এবং অনেক ভদ্র... বিদ্যা বা শিক্ষিত মানে তিনি ভদ্র, ধীর হবেন। তিনি কোন বদমাশ গুন্ডা নন তার নাম বিদ্যা। সেটিই শিক্ষার পরীক্ষা তিনি অবশ্যই বিদ্বান হবেন... ধীর এবং মৌন। এককথায় তাঁকে বলা হয় ভদ্রলোক।