BN/Prabhupada 0913 - শ্রীকৃষ্ণের কোন অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেই। তাই তিনি নিত্য

Revision as of 07:05, 10 July 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


730420 - Lecture SB 01.08.28 - Los Angeles

তাই এই মুক্তি সকলের জন্যই উন্মুক্ত। সমম্‌ চরন্তম্‌। কৃষ্ণ বলেন নি যে, "কেবল তুমি আমার কাছে এসো, তুমি মুক্ত হও।" না। তিনি সকলের জন্যই উন্মুক্ত । তিনি বলেছেন, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকম্‌ শরণম্‌ ব্রজ (গীতা ১৮/৬৬) তিনি সকলের কাছেই তা বলছেন। এমন নয় যে তিনি কেবল অর্জুনকে বলছেন। তিনি সবাইকে বলছেন। ভগবদগীতা কেবল অর্জুনকে বলা হয় নি। অর্জুন হলেন উপলক্ষের ন্যায়। কিন্তু তা সকলের জন্যই বলা হয়েছে, সব মানুষের জন্য। তাই এর সুবিধা নিতে হবে। সমম্‌ চরন্তম্‌। তিনি কখনও পক্ষপাতিত্ব করেন না, "তুমি এসো..." ঠিক যেমন সূর্যকিরণের মতো। সূর্যের আলো পক্ষপাতদুষ্ট নয়। "এ হচ্ছে গরীব লোক, এ নিম্ন শ্রেণীর মানুষ, এ একটা শুকর। আমি এখানে আমার আলো বিতরণ করব না।" না, সূর্য সবার প্রতি সমান। প্রত্যেককে এর সুযোগ নিতে হবে। সূর্যকিরণ সবার জন্য উন্মুক্ত, কিন্তু তুমি যদি তোমার দরজা বন্ধ করে রাখ যদি তুমি নিজেকে আলোবাতাস বন্ধ করা ঘরে লুকিয়ে রাখ, তাহলে সেটা ব্যাপার

তেমনই শ্রীকৃষ্ণ সর্বত্র রয়েছেন। তিনি সকলের জন্য। তুমি যেই মাত্র শরণাগত হও, কৃষ্ণ তোমাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রহণ করতে প্রস্তুত। সমম্‌ চরন্তম্‌। কোন বাধা নেই। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, মাম্‌ হি পার্থ ব্যাপাশ্রিত্য যেহপি স্যুঃ পাপযোনয়ঃ (গীতা ৯/৩২) তারা পার্থক্য করছেন যে কেউ নিচু শ্রেণী, কেউ উঁচু শ্রেণী। তাই কৃষ্ণ বলেছেন, "এমনকি তথাকথিত নিচু শ্রেণীর লোক হলেও সেটি কোন ব্যাপার না যদি তাঁরা আমার শরণাগত হয়, তবে তাঁরা আমার ধামে আসার যোগ্য।" সমম্‌ চরন্তম্‌।

এবং তিনি হচ্ছেন শাশ্বত কাল। সবকিছুই কালের প্রবাহে চলছে আমাদের গণনা অনুযায়ী অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ আছে এসব আপেক্ষিক। সেই দিন আমরা আলোচনা করছিলাম। এই অতীত, বর্তমান, এবং ভবিষ্যৎ হচ্ছে আপেক্ষিক বিষয়। একটি ক্ষুদ্র পতঙ্গের জন্য অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আমার ক্ষেত্রে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের থেকে আলাদা। আপেক্ষিক শব্দ। তেমনই আমার অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্রহ্মার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ থেকে আলাদা কিন্তু কৃষ্ণের কোন অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেই। তাই তিনি নিত্য। আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আছে কারণ আমরা দেহ পরিবর্তন করি। বর্তমানে আমরা এই দেহটি পেয়েছি... এর একটা নির্দিষ্ট তারিখ আছে অমুক অমুক দিনে আমি আমার পিতা মাতার থেকে জন্মেছি এই দেহ কিছুদিনের জন্য থাকবে, বৃদ্ধি হবে বংশবিস্তার করবে, তারপর তা বৃদ্ধ হয়ে যাবে। তারপর ক্ষয়, এরপর সবশেষ, মৃত্যু। এই দেহটি আর থাকবে না, তোমাকে আরেকটি দেহ পেতে হবে। এই দেহ শেষ। এই দেহের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ -এর ইতিহাস সব শেষ। তোমাকে আরেকটি দেহ পেতে হবে। আবারও সেই দেহের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। কিন্তু কৃষ্ণের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেই কারণ তিনি দেহ পরিবর্তন করেন না। এটাই হচ্ছে আমাদের দেহ এবং শ্রীকৃষ্ণের দেহের মধ্যে পার্থক্য।

ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন যে, "আমি পূর্বে এই জ্ঞান - ভগবদগীতা, সূর্যকে দান করেছি, অর্জুন তা বিশ্বাস করতে পারেন নি। অর্জুন সবকিছু জানতেন, কিন্তু তিনি আমাদের জানার জন্য এই প্রশ্নগুলি করেছেন, "কৃষ্ণ, আমরা দুজন সমসাময়িক, আমরা প্রায় একই সময়ে জন্ম নিয়েছি। আমি কীভাবে এই কথা বিশ্বাস করব যে তুমি এই জ্ঞান সূর্যকে দিয়েছিলে?" এর উত্তরে তিনি বললেন, "হে প্রিয় অর্জুন, তুমিও তখন ছিলে, কিন্তু তুমি তা ভুলে গেছ, আমি ভুলি নি। এটাই পার্থক্য।" অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ হচ্ছে সেইসব লোকদের জন্য যারা ভুলে যায়। কিন্তু যারা ভুলে যায় না, তাদের জন্য অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেই।

তাই, কুন্তীদেবী কৃষ্ণকে নিত্য বলে সম্বোধন করছেন মন্যে ত্বম্‌ কালম্‌ এবং যেহেতু তিনি নিত্য, ঈশানম্‌ , তিনিই পূর্ণ নিয়ন্ত্রক। কুন্তী বলেছেন, "মন্যে, "আমি মনে করি... কৃষ্ণের আচরণ থেকে এই কথা বুঝতে হবে, যে কৃষ্ণ হচ্ছেন নিত্য, কৃষ্ণ হচ্ছেন পরম নিয়ন্তা। অনাদি নিধানম্‌। অনাদি-নিধানম্‌... কোন শুরু নেই, কোন শেষ নেই। তাই বিভুম্‌।