BN/Prabhupada 1015 - জড়ের পিছনে যদি চেতন শক্তি না থাকত, তাহলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতে পারত না

Revision as of 07:03, 28 September 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


720200 - Lecture SB 01.01.01 - Los Angeles

ওম্‌ নমো ভগবতে বাসুদেবায়।
জন্মাদ্যস্য যতঃ অন্বয়াৎ ইতরতঃ চ অর্থেষু অভিজ্ঞঃ স্বরাট্‌
তেনে ব্রহ্ম হৃদা য আদিকবয়ে মুহ্যন্তি যৎসূরয়ঃ
তেজোবারিমৃদাং যথা বিনিময়ো যত্র ত্রিসর্গোহমৃষা ধাম্না স্বেন সদা
নিরস্তকুহকং সত্যং পরমং ধীমহি
(শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.১)।

এটি হচ্ছে ভাগবত রচনা শুরু করার আগে শ্রীল ব্যাসদেবের নিবেদিত প্রার্থনা। তিনি ভগবতে বাসুদেবকে তার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করছেন। 'ভগবতে' মানে পরম পুরুষোত্তম ভগবান, যিনি বাসুদেব নামে পরিচিত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বসুদেবের পুত্ররূপে আবির্ভুত হয়েছিলেন। তাই তাঁকে বলা হয় বাসুদেব। এর অন্য আরেকটি অর্থ হচ্ছে তিনি সর্বত্র বিরাজমান। তিনি সর্বত্রই উপস্থিত। সুতরাং, পরম পুরুষোত্তম ভগবান বাসুদেব হচ্ছেন সবকিছুর মূল কারণ। "জন্মাদস্য যতঃ"। 'জন্ম' মানে সৃষ্টি। এই জড় জগতের সৃষ্টি, এই মহাজাগতিক বিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে বাসুদেবের কাছ থেকে। 'জন্ম-আদি' মানে, সৃষ্টি স্থিতি এবং প্রলয়। জড়জগতের যে কোন কিছুরই তিনটি রূপ রয়েছে। নির্দিষ্ট কোন এক সময় এটির সৃষ্টি হয়েছে। নির্দিষ্ট কয়েক বছর এর অস্তিত্ব বজায় থাকবে, এরপর তা ধ্বংস হয়ে যাবে। এটিকে বলে জন্মাদ্যস্য-জন্মস্থিতি যঃ সুতরাং সবকিছুই পরম পুরুষোত্তম ভগবানের নিকট থেকে সম্পাদিত হচ্ছে। মহাজাগতিক প্রকাশও তার থেকেই নির্গত হচ্ছে। এটি তাঁর শক্তি, বহিরঙ্গা শক্তিকে আশ্রয় করে আছে। অথবা এটি তাঁর বহিরঙ্গা শক্তির দ্বারা প্রতিপালিত হচ্ছে। আর জাগতিক সব কিছুই চূড়ান্ত পর্যায়ে একসময় ধ্বংস হয়ে যাবে, আর ধ্বংস হওয়ার পরে সেই শক্তি তাঁর সাথে মিশে যাবে। শক্তি তাঁর থেকে সম্প্রসারিত হচ্ছে, এবং তাঁর শক্তির দ্বারা প্রতিপালিত হচ্ছে, এবং আবার যখন এটি অদৃশ্য হয়ে যাবে, তখন তাঁর মধ্যে সেটি মিশে যাবে। এটিই হচ্ছে সৃষ্টি, স্থিতি এবং প্রলয়ের প্রক্রিয়া। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে সর্বোচ্চ শক্তি বা পরম উৎস, এই পরম উৎসের প্রকৃতি কিরূপ? এটি কি জড় নাকি চেতন শক্তি? ভাগবত বলছে, "না, এটি জড় হতে পারে না।" জড় থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোন কিছু সৃষ্টি হতে পারে না। আমাদের এরকম কোন অভিজ্ঞতা নেই। জড় বস্তুর পিছনে যদি কোন চেতন শক্তি না থাকে, তাহলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতে পারত না। এ ব্যাপারে আমাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই। যেমন কোন জড় বস্তু, ধর মোটরগাড়ি। এর সব ধরণের যন্ত্রপাতি, সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি সব কিছু সুসজ্জিত রয়েছে, কিন্তু তবুও মোটর গাড়িটি নিজে নিজে চলতে পারবে না। সেখানে অবশ্যই একজন চালক থাকতে হবে। আর এই চালকটিই হচ্ছে চেতন শক্তি। কাজেই সবকিছুর যে মূল উৎস, সেটি অবশ্যই একটি চেতন শক্তি হবে। এটিই হচ্ছে ভাগবতের সিদ্ধান্ত।

আর কি ধরণের চেতন শক্তি? এটি বোঝায় যে তিনি সব জানেন। ঠিক যেমন একজন দক্ষ মোটর মিস্ত্রি, তিনি সব কিছু জানেন। কাজেই মোটর গাড়ি যখন বন্ধ হয়ে যায়, তিনি সমস্যা সনাক্ত করতে পারেন, তিনি তৎক্ষণাৎ দেখিয়ে দিতে পারেন, মোটর গাড়িটি কেন থেমে গেল। তখন সে একটা স্ক্রু একটু টাইট করে দিল, অথবা কিছু একটা করে দিল, তখন আবার মোটর গাড়িটি আবার চলতে শুরু করলো। তাই ভাগবতে বলা হয়েছে, উদ্ভূত সব কিছুর যে মূল উৎস, তিনি সবকিছু জানে। 'অন্বয়াৎ ইতরতঃ চ অর্থেষু।' প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে। তিনি খুবই দক্ষ। ঠিক যেমন আমি হচ্ছি এই দেহটির স্রষ্টা। আমি জীবন্ত আত্মা। আমি যেমনটি বাসনা করেছিলাম, তেমনভাবে আমার দেহ তৈরি করেছি। শক্তি দিয়ে, আমার শক্তি দিয়ে।