BN/Prabhupada 1016 - ভাগবত বলছে যে সব কিছুর মূল উৎস হচ্ছে চেতন বস্তু। সচেতন

Revision as of 13:42, 26 September 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Bengali Pages - 207 Live Videos Category:Prabhupada 1016 - in all Languages Categor...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


720200 - Lecture SB 01.01.01 - Los Angeles

ভাগবত বলছে যে সব কিছুর মূল উৎস হচ্ছে চেতন বস্তু। সচেতন। আমার বাসনা অনুসারে আমি এই দেহ তৈরি করেছি। কিন্তু যদিও আমি বলছি এটি আমার দেহ, কিন্তু আমি জানি না দেহটি কিভাবে কাজ করছে। এটি আমার কাছে অজানা। আমি আমার চুল কেটে ফেলি, কিন্তু আমি জানি না এটি কিভাবে আবার বড় হয়ে যায়। আমি আমার নখ কাটছি। কিন্তু আমি জানি না কিভাবে, ভিতরে কি কাজ চলছে, যার কারণে চুল নখ কেটে ফেলার পরও এগুলো আবার বড় হয়ে যাচ্ছে। না আমি জানতে পারি... আমি খাচ্ছি, আমি তা জানি কারণ আমি সারগর্ভ কিছু খাচ্ছি, এটি আমার পেটের মধ্যে গিয়ে বিভিন্ন ধরণের রসে পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং রসগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিতরণ করা হচ্ছে। আমি এটি কোন চিকিৎসক কিংবা চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে জানতে পারছি, কিন্তু যতদূর বিবেচনা করা যায়, আমি আসলে জানি না কিভাবে আমার খাদ্যগুলো রক্তে পরিণত হচ্ছে। আর এই রক্ত কিভাবে দেহের বিভিন্ন অংশে প্রেরিত হচ্ছে এবং আমি পুনরায় শক্তি পাচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে আমি তা জানি না।

কিন্তু পরম পুরুষোত্তম ভগবান, তিনি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় ভাবেই তা জানেন। কিভাবে এই বিশ্বজগতের সৃষ্টি কার্য চলছে , তিনি সব কিছু জানেন। কিভাবে সূর্য উদিত হচ্ছে। কিভাবে চন্দ্র উদিত হচ্ছে। কিভাবে সমুদ্র গুলো অবিচলিত আছে। এগুলো সীমানা লঙ্ঘন করে স্থলভাগে প্রবেশ করছে না। এতো বড় সমুদ্র- এটি যে কোন শহর বা যে কোন জায়গাকে এক সেকেন্ডের মধ্যে ভাসিয়ে দিতে পারে। কিন্তু এটি তা করছে না। সুতরাং এখানে এর পিছনে কারো নির্দেশ রয়েছে। তাই ভাগবত বলছে যে সব কিছুর মূল উৎস হচ্ছে চেতন। সচেতন। আর সচেতনভাবে সব কিছুকে নিয়ন্ত্রন করছে। "অন্বয়াৎ ইতরতঃ চ অর্থেষু অভিজ্ঞঃ" (শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.১)। 'অভিজ্ঞঃ' মানে সম্পূর্ণরূপে অবগত।

পরবর্তী প্রশ্ন আসতে পারে, তিনি কোথা থেকে জ্ঞান পেলেন? তিনি হচ্ছেন আদি। কারণ আমাদের এই ধারণা রয়েছে যে, যে কোন জীব, অন্যের কাছ থেকে জ্ঞান পায়। ঠিক যেমন আমরা আমাদের গুরুদেবের কাছ থেকে জ্ঞান পেয়েছি। আমার শিস্যরা আমার কাছ থেকে জ্ঞান পেয়েছে, তাই তাদের জ্ঞানও কারো দ্বারা প্রদান করা হয়েছে। এর একটি উৎস রয়েছে। কিন্তু, পরমেশ্বর ভগবান যদি আদি বা মূল কারণ হন, তিনি কিভাবে এই সৃষ্টি আর পালনের জ্ঞান লাভ করলেন? উত্তর হচ্ছে 'স্বরাট।' তাঁর কারো কাছ থেকে জ্ঞান নিতে হয় না। জ্ঞানের দিক থেকে তিনি নিজেই, তিনি স্বনির্ভনর। এটিই হচ্ছে ভগবানের প্রকৃতি। তাঁকে উচ্চতর কারো কাছ থেকে জ্ঞান নিতে হয় না, কারণ ভগবানের ঊর্ধ্বে কেউ হতে পারে না। না ভগবানের সমান হতে পারে। "অসমোর্ধ্ব।" কেউ তাঁর সমান নয়। কেউ তাঁর থেকে ঊর্ধ্বে নয়।

আমরা জানি যে ব্রহ্মাণ্ডের প্রথম সৃষ্ট জীব হচ্ছেন ব্রহ্মা। তিনিও অন্যের সাহায্য ছাড়াই জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিলেন, কারণ... তিনি হচ্ছেন প্রথম জীব। তো তখন আর কোন জীব ছিল না, তাহলে তিনি কিভাবে জ্ঞান পেলেন? তাহলে কি এটি বোঝায় যে ব্রহ্মা হচ্ছেন মূল উৎস? মানুষ প্রশ্ন করতে পারে, কিন্তু ভাগবত বলছে না। তিনি হচ্ছেন ব্রহ্মাণ্ডের প্রথম জীব, এটি ঠিক আছে, কিন্তু তিনিও সৃষ্ট জীব। কারণ বিশ্বজগৎ পরমেশ্বর ভগবানের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। আর এটি সৃষ্টির পর ব্রহ্মা সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং তিনি হচ্ছেন সৃষ্ট জীব। সৃষ্টির প্রকাশের পর। আর ভগবান, পরম পুরুষোত্তম ভগবান যেহেতু... তিনি হচ্ছেন স্রষ্টা, সুতরাং তিনি কোন সৃষ্ট জীব নন। তিনি সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তিনি সৃষ্ট নন। কিন্তু ব্রহ্মা সৃষ্ট। কাজেই তিনি জ্ঞান পেয়েছেন পরম স্রষ্টার কাছ থেকে, যিনি হচ্ছেন স্বাধীন।