BN/Prabhupada 0028 - বুদ্ধ হচ্ছেন ভগবান
Lecture on Sri Isopanisad, Mantra 1 -- Los Angeles, May 3, 1970
গর্গমুনিঃ (পড়ছেন) "এটি ভাবাও ভুল যে শুধুমাত্র নিরামিষাশী হওয়ার মাধ্যমেই কেউ প্রকৃতির আইন লঙ্ঘন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। শাকসব্জিরও প্রাণ রয়েছে একটা জীব অন্য জীবের আহার্য, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কঠোর নিরামিষাশী হয়ে কারোরই গর্ববোধ করা উচিৎ নয়। আসল কথা হচ্ছে ভগবানকে স্বীকার করা। পশুদের মধ্যে ভগবানকে জানার মতো উন্নত চেতনা নেই, কিন্তু মানুষ এর মধ্যে আছে। শ্রীল প্রভুপাদঃ এটিই হচ্ছে মূল বিষয়। যেমন বুদ্ধের অনুগামীরা, তারাও নিরামিষ ভোজন করে। বুদ্ধ দর্শন অনুসারে... আজকাল সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে, কিন্তু ভগবান বুদ্ধের প্রচার ছিল বদমায়েশদের পশু হত্যা বন্ধ করা। অহিংসা পরমো ধর্ম। ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব লীলা শ্রীমদ্ভাগবতম্ এবং অন্য অনেক বৈদিক গ্রন্থে আছে। সুর-দ্বিষাম্। উনি অসুরদের প্রতারণা করতে এসেছিলেন। অসুরেরা... উনি এমন একটা পদ্ধতি তৈরী করেছিলেন যে সব অসুরেরা প্রতারিত হয়েছিল। কিভাবে তিনি প্রতারণা করেছিলেন? অসুরেরা, তারা ভগবানের বিরুদ্ধে অবস্থান করে। তারা ভগবানে বিশ্বাস করে না। এইজন্যে ভগবান বুদ্ধ প্রচার করেছিলেন, "হ্যাঁ ভগবান নেই। কিন্তু আমি যা বলব সেটা অনুসরণ কর।" "ঠিক আছে"। কিন্তু তিনি ভগবান ছিলেন। এটা প্রতারণা। হ্যাঁ। তারা ভগবানকে বিশ্বাস করে না, কিন্তু তারা বুদ্ধকে বিশ্বাস করে আর বুদ্ধ নিজেই ছিলেন ভগবান। কেশব ধৃত বুদ্ধ শরীর জয় জগদীশ হরে। এই হচ্ছে অসুর আর ভক্তের মধ্যে পার্থক্য। একজন ভক্ত দেখতে পাচ্ছেন কেমন করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অসুরদের প্রতারণা করেছিলেন। ভক্তরা বুঝতে পারেন। কিন্তু অসুররা ভাবে, "ওহ, আমরা কতো ভালো একজন নেতা পেয়েছি। অসুর ভগবান বিশ্বাস করে না।" দেখতে পারছো? (হাসছেন) সন্মোহায় সুরদ্বিষাম (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৩.২৪) সঠিক শব্দটিই শ্রীমদ্ভাগবতে আছে। আপনি দেখেছেন, যারা পড়েছে, সন্মোহায়, বিস্ময়ের জন্য সুরদ্বিষাম। সুরদ্বিষাম, মানে যারা বৈষ্ণবদের প্রতি হিংসাপরায়ন। অসুর আর নাস্তিক শ্রেণীর লোকেরা সর্বদাই ভক্তদের প্রতি হিংসাপরায়ণ। এটিই প্রকৃতির নিয়ম। একজন পিতা নিজের ৫ বছর বয়সের পুত্রের শত্রূ হয়ে গিয়েছিলেন। তার ভুল কি ছিল? শুধু এই যে সে একজন ভক্ত ছিল। ব্যাস্। নির্দোষ ছেলে, সে শুধুমাত্র হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপের প্রতি আসক্ত ছিল। কিন্তু তার বাবা নিজের পুত্রের শত্রূ হয়ে গেলেন, "মেরে ফেল এই ছেলেকে"। সুতরাং যদি একজন পিতা পুত্রের শত্রু হয়ে যেতে পারে তাহলে অন্যেদের আর কি কথা? এই জন্যে তোমার জানা উচিত যে যখনই তুমি ভক্ত হয়ে যাবে, তখন পুরো বিশ্ব তোমার শত্রু হয়ে যাবে। ব্যাস্। কিন্তু তোমাকে তাদের সাথে ওঠা-বসা করতে হবে, কারণ তুমি ভগবানের দাস হিসাবে নিযুক্ত হয়েছ। তোমার লক্ষ্য হবে তাদের আলোকিত করা। সুতরাং তুমি এমন হতে পারবে না, ঠিক নিত্যানন্দ প্রভুর মতো। উনি আঘাত প্রাপ্ত হয়েছিলেন কিন্তু তবুও জগাই-মাধাইকে তিনি উদ্ধার করেছিলেন। সেটিই তোমার নীতি হওয়া উচিৎ। কখন কখনও আমাদেরকে অন্যদের প্রতারণা করতে হবে, কখনও বা আমাদের আঘাত পেতে হবে, অনেক কিছু। কিন্তু এক মাত্র পরিকল্পনা হবে কিভাবে লোকেরা কৃষ্ণভাবনাময় হতে পারে। এটিই আমাদের উদ্দেশ্য। যেনতেন প্রকারেণ এইসব বদমাশদের কৃষ্ণভাবনাময়ে রূপান্তরিত করতে হবে।