BN/Prabhupada 0037 - যিনি কৃষ্ণকে জানেন, তিনি গুরু




Lecture on BG 7.1 -- Hong Kong, January 25, 1975

সুতরাং আমরা কিভাবে ভগবানের শক্তিকে বুঝতে পারবো, কিভাবে আমরা তাঁর সৃজনশীল শক্তিকে বুঝতে পারবো, এবং ভগবানের শক্তি কি, আর কিভাবে তিনি, সবকিছু করছেন - এটি একটি মহান বিজ্ঞান। একে বলা হয় কৃষ্ণবিজ্ঞান। কৃষ্ণতত্ত্বজ্ঞান। যেই কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা সেই গুরু হয় (চৈ.চ.মধ্য ৮.১২৮). শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন যে গুরু কে। গুরু মানে হল "যেই কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা সেই গুরু হয়" "যে কেউ যিনি কৃষ্ণকে জানেন তিনি গুরু।" গুরু তৈরি করা যায় না। যে কেউ যতটা সম্ভব যে কৃষ্ণ সম্পর্কে জানেন... আমরা জানতে পারি না। আমরা শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে শতভাগ জানতে পারি না। তা সম্ভব না। শ্রীকৃষ্ণের এতো অনন্ত শক্তি রয়েছে। পরাস্য শক্তিঃ বিবিধৈব শ্রুয়তে (চৈ.চ.মধ্য ১৩.৬৫ তাৎপর্য) একেকটি শক্তি একেক ভাবে কাজ করছে, অন্য আরেক শক্তি আরেকটি উপায়ে কাজ করছে। কিন্তু সেগুলি সবই শ্রীকৃষ্ণের শক্তি। পরাস্য শক্তিঃবিবিধৈব শ্রুয়তে। ময়াধক্ষ্যেণ প্রকৃতি সূয়তে স চরাচরম্। (ভগবদ্গীতা ৯.১০) প্রকৃতি...আমরা এই ফুলটি প্রকৃতি থেকে আসছে দেখছি। এবং শুধুমাত্র ফুলই না, এতসব জিনিস আসছে বীজের মাধ্যমে। গোলাপের বীজ থেকে, গোলাপ গাছ আসছে। বেল বীজ থেকে, বেল গাছ আসছে। সুতরাং এটি কিভাবে ঘটছে? একই মাঠ, একই জল, এবং বীজও দেখতে একই | কিন্তু এটির বাহ্যিক প্রকাশ হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে। কিভাবে তা সম্ভব? একে বলা হয় পরাস্য শক্তিরবিবিধৈব শ্রুয়তে। স্বাভাবিকী জ্ঞান। সাধারণ মানুষ বা তথাকথিত বিজ্ঞানীরা বলে, "এটি প্রকৃতির উৎপাদন।" কিন্তু তারা জানে না প্রকৃতি কি? কে প্রকৃতির কার্যক্রমগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন, এই জড়া প্রকৃতি, এটি কিভাবে কাজ করছে। ভগবদ্গীতাতে বলা হয়েছে, ময়াধ্যক্ষেণ (ভগবদগীতা ৯.১০) শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, আমার অধীনে প্রকৃতি কাজ করছে । এটি হচ্ছে বাস্তব সত্য। প্রকৃতি, জড় পদার্থ ...জড় পদার্থ কখনও আপনাআপনি একসাথে একত্রিত হতে পারে না। এই গগনচুম্বী দালানগুলি, এইগুলি জড় পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু এই গগনচুম্বী বাড়ি তৈরির জড় পদার্থ গুলি আপনাআপনি মিলিত হয় নি। এটা সম্ভব নয়। একটি ছোট, অত্যন্ত ক্ষুদ্রাকৃতি আত্মা, কৌশলী বা স্থপতি, যে এই পদার্থগুলি নিয়ে তা সাজায় এবং একটি গগনচুম্বী ভবন নির্মাণ করে। এটিই আমাদের অভিজ্ঞতা। তাই আমরা এই কথা কিভাবে আমরা বলতে পারি যে জড়পদার্থগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করছে? জড় পদার্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে না।এর জন্য প্রয়োজন উচ্চতর বুদ্ধি, উচ্চতর দক্ষতা সহকারে হস্তচালন আর তাই দরকার উচ্চতর আদেশ। ঠিক যেমন এই জড় জগতে সর্বোচ্চ হচ্ছে সূর্য, সূর্যের গতিবিধি। তাপ শক্তি, সূর্যের প্রকাশ শক্তি। সুতরাং কিভাবে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে? এটি শাস্ত্রে বর্ণিত হয়েছে: যস্যাজ্ঞয়া ভ্রমতি সংভৃতকালচক্র গোবিন্দম্ আদি পুরুষম্ তমহং ভজামি । এই সূর্যও এই গ্রহের মতোই একটি গ্রহ। যেমন এই গ্রহে অনেক রাষ্ট্রপতি থাকতে পারে, কিন্তু পূর্বে এখানে শুধুমাত্র একজন রাষ্ট্রপতি ছিল। তাই একইভাবে, প্রতিটি গ্রহের মধ্যে একটি রাষ্ট্রপতি আছেন। সূর্য গ্রহের মধ্যেও... এই জ্ঞান আমরা ভগবদগীতা থেকে পাই। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ইমম্ বিবস্বতে যোগং প্রোক্তাবানহং অব্যয়ং (ভগবদ্গীতা ৪.১) "আমি সর্ব প্রথমে ভগবদ্গীতার বিজ্ঞান বলেছিলাম বিবস্বানকে। বিবস্বান অর্থ সূর্যগ্রহের রাষ্ট্রপতি, এবং তার পুত্র মনু। এটিই হচ্ছে কাল। এই কাল বয়ে চলেছে। এটিকে বৈবস্বত মনুর যুগ বলে। বৈবস্বত অর্থ বিবস্বান হতে , বিবস্বানের পুত্র। তাকে বৈবস্বত মনু বলা হয়।