BN/Prabhupada 0071 - ভগবানের বেপরোয়া অপচয়ী পুত্ররা



Room Conversation With French Commander -- August 3, 1976, New Mayapur (French farm)

আমরা ভগবানের বেপরোয়া অপচয়কারী পুত্র। এতে কোন সন্দেহ নেই যে আমরা ভগবানের পুত্র, কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা হচ্ছি বেপরোয়াভাবে অপচয়কারী। আমরা এতোটাই বেপরোয়া যে আমরা আমাদের মূল্যবান জীবনটাকেও নষ্ট করে দিচ্ছি। তাই এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে তাদের এই বেপরোয়া ভাবকে দমন করার জন্য। এবং তাদেরকে ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার জন্য একটা দায়িত্বপূর্ণ চেতনায় ফিরিয়ে আনার জন্য। এই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত। কিন্তু মানুষ এতোটাই উন্মাদ যে, যখনই তুমি তাদেরকে ভগবান সম্পর্কে কিছু বলবে, সাথে সাথে তারা হেসে উঠবে, "ওহ্‌, কি বোকা, ভগবান।" এটি হচ্ছে চরম উন্মত্ততা। ভারতবর্ষ এখনও ভগবান সম্পর্কে অনেক সচেতন, এখনও। তাই বর্তমান সময়ের নেতারা ভাবছে যে ভারতবাসীরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র ভগবান চিন্তা করার কারণে - তারা ইউরোপিয়ান, আমেরিকানদের মতো অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করতে পারে না।

এই হচ্ছে অবস্থা, আর এটি খুব জটিল, কিন্তু তবুও আমরা মানব জাতির জন্য কিছু করতে পারি এই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের মাধ্যমে। আর যারা ভাগ্যবান, তারা আসবে, ঐকান্তিক ভাবে এটি গ্রহণ করবে। এইসব বেপরোয়া অপচয়কারী পুত্ররা, আমাদের এরকম অনেক উদাহরণ আছে। উদাহরণস্বরূপ, ধর এখানে কিছু পেট্রোল মজুত আছে আর তারা জানতে পারল যে, এই পেট্রোল দিয়ে তারা ঘোড়া ছাড়াই গাড়ি চালাতে পারবে। তখন লক্ষ লক্ষ গাড়ি তৈরি করে সমস্ত তেল নষ্ট করে দিল। এই হচ্ছে বেপরোয়া। আর যখন এটি শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা কাঁদবে। এটি শেষ হয়ে যাবে। এই চলছে। উন্মত্ততা। ঠিক যেমন একটি উন্মাদ ছেলে, বাবার রেখে যাওয়া কিছু সম্পত্তি, এটি ব্যবহার কর, এটি ব্যবহার কর। এটি পাওয়ার সাথে সাথে ব্যবহার কর, যত তাড়াতাড়ি শেষ হয়, ব্যাস্‌। বেপরোয়া মনোভাব। এখন শরীরে একটু শক্তি আছে, যেই মাত্র সে একটু যৌন জীবন উপভোগ করার সুযোগ পায়, "ওহ্‌, এটিকে খরচ কর, খরচ কর," সমস্ত শক্তি শেষ। মস্তিষ্ক খালি হয়ে গেল। বারো বছরের শুরু থেকে ত্রিশ বছরের মধ্যে সবকিছু শেষ। তখন সে পুরুষত্বহীন হয়ে যায়। আমাদের ছোটবেলায় - ছোটবেলা মানে ধর আশি অথবা একশ বছর আগে - তখন কোন মোটরগাড়ি ছিল না। আর এখন তোমরা যে দেশেই যাও না কেন, সেখানে তোমরা হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ গাড়ি দেখতে পাবে। এটি হচ্ছে বেপরোয়াভাব। একশ বছর আগে তারা মোটরগাড়ি ছাড়া চলতে পারত, আর এখন তারা একটি গাড়ি ছাড়াও চলতে পারে না। এইভাবে তারা শারীরিক বা জড় জাগতিক জীবনের অপ্রয়োজনীয় চাহিদা বাড়িয়েই তুলছে। এটি হচ্ছে উন্মত্ততা। আর যে সমস্ত নেতারা তাদের এই উন্মত্ততায় উৎসাহ দেয়, তারা হচ্ছে ভালো নেতা। আর যারা বলবে, "এইসব বোকামি থামাও, কৃষ্ণভাবনাময় হও," কেউ পরোয়াই করবে না। অন্ধোঃ যথান্ধৈরুপনীয়মানা স্তেহপীশতন্ত্র্যামুরুদাম্নি বদ্ধাঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ৭.৫.৩১)। এটিকে বলে অন্ধ নেতার অন্ধ অনুসারীদের নেতৃত্ব দেয়া। তারা জানে না যে তারা উভয়েই প্রকৃতির কঠোর আইনের দ্বারা আবদ্ধ। (বিরতি)...

প্রকৃতির আইন কিভাবে কাজ করে, এই ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তারা জানেনা। এই হচ্ছে আধুনিক সভ্যতা। প্রকৃতির আইন অবশ্যই তার নিজস্ব উপায়ে কাজ করবে। তুমি এটিকে পাত্তা দাও আর না দাও, এটি তোমার ব্যাপার, কিন্তু প্রকৃতির আইন কাজ করবেই। প্রকৃতেঃ ক্রিয়মাণানি গুনৈঃ কর্মাণি সর্বশঃ (ভগবদ্গীতা ৩.২৭)। কিন্তু এইসমস্ত বদমাশরা জানে না যে, প্রকৃতির আইন কিভাবে কাজ করবে। তারা কৃত্রিম উপায়ে মূর্খের মতো প্রকৃতির আইনকে অতিক্রম করার চেষ্টা করছে। এটি হচ্ছে বিজ্ঞান, বদমাশদের বিজ্ঞান, যেটি অসম্ভব, কিন্তু তারা চেষ্টা করেই যাচ্ছে। এটিকে বলে বদমাইশি। মূঢ়তা। বিজ্ঞানীরা কি এরকম বলে না? "আমরা জয় করার চেষ্টা করছি।" বদমাশ, তোমরা তা কখনোই করতে পারবে না। কিন্তু এই বদমাশিই চলছে। আর তারা হাততালি দিচ্ছে, "ওহ্‌, খুব ভালো খুব ভালো, খুব সুন্দর।" "ওহ্‌, আপনারা চাঁদে যাচ্ছেন।" কিন্তু সমস্ত প্রচেষ্টার পর, আঙ্গুর ফল টকঃ "এটি কোন কাজের নয়।" ব্যাস্‌। তোমরা গল্পটি জান? খেঁকশেয়ালের? সে আঙ্গুর ফলের জন্য লাফিয়ে, লাফিয়ে চেষ্টা করছিল। যখন সে ব্যর্থ হল, সে বলল, "ওহ্‌, এটি কোন ভালো কিছু না, এটি টক, কোন দরকার নেই।" (হাসি) তারা ঠিক এভাবেই কাজ করছে। শেয়ালগুলো লাফাচ্ছে, এই যা। আর আমরা দেখতে পাচ্ছি এই বদমাশ গুলো কিভাবে অর্থহীন ভাবে লাফাচ্ছে। (হাসি) তাই আমরা লোকদের সাবধান করে দিচ্ছি, এই সমস্ত মূর্খ শেয়ালদের অনুসরণ না করার জন্য। বিচক্ষণ হও আর কৃষ্ণভাবনাময় হও। এটি তোমাদের জীবনকে সার্থক করে তুলবে।