BN/Prabhupada 0078 - কেবল বিশ্বাসের সঙ্গে, আপনি শ্রবণ করার চেষ্টা করুন



Lecture on SB 1.2.16 -- Los Angeles, August 19, 1972

সুতরাং শুশ্রূষু শ্রদ্ধধানস্য বাসুদেব কথা রুচিঃ পূর্বের শ্লোকে এই কথা ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, যদ্‌ অনুধ্যাসিনা যুক্তঃ (ভাগবত ১.২.১৫) সর্বদা ভগবানের চিন্তায় নিযুক্ত থাকতে হবে। সেইটিই হচ্ছে তরবারি। আপনাকে এই কৃষ্ণভাবনামৃতের তরবারি গ্রহণ করতে হবে। তবেই আপনি মুক্তিলাভ হতে পারবেন। এই দৃঢ় গ্রন্থিটি এই তরবারির দ্বারাই কেবল ছেদন করা যাবে। তাহলে... এখন আমরা কিভাবে সেই তরবারিটি পেতে পারি? সেই পন্থা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে, কেবল দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে শ্রবণ করার চেষ্টা করুন। তাহলেই আপনি সেই তরবারিটি প্রাপ্ত হবেন। প্রকৃতপক্ষে আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটি বিস্তার লাভ করছে। এই শ্রবণের মাধ্যমে আমরা একের পর এক তরবারি লাভ করছি। আমি এই আন্দোলনটি শুরু করেছিলাম নিউ ইয়র্কে। আপনারা সকলেই সেইটি জানেন। বাস্তবে আমার কোনই তরবারিই ছিল না। ঠিক যেমন কোন কোন ধর্মনীতিতে, তারা এক হাতে ধর্মগ্রন্থ নেয় আর অন্য হাতে তরবারিঃ "আপনাকে এই গ্রন্থ মেনে নিতেই হবে, নতুবা, আমি আপনাদের গর্দান নিয়ে নেব।" এটিও এক অন্য ধরণের প্রচার। কিন্তু আমারও এক ধরণের তরবারি ছিল, কিন্তু সেইটি এই ধরণের তরবারি ছিল না। সেই তরবারিটি ছিল - সমস্ত লোকদের শোনার সুযোগ করে দেয়া। আর কিছুই না।

বাসুদেব কথা রুচিঃ। যখনই সে রুচি লাভ করবে... রুচি মানে স্বাদ। "আহ্‌, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কি অপূর্ব কথা বলছেন। শ্রবণ করা যাক।" এটি ভাবার সঙ্গে সঙ্গেই আপনি সেই তরবারিটি পেয়ে যাবেন। তৎক্ষণাৎ। তরবারিটি আপনার হাতেই আছে। সেইটি হচ্ছে, বাসুদেব কথা রুচিঃ। কিন্তু কার সেই রুচি হয়? এই স্বাদ? কারণ, যেমনটা আমি অনেকবার স্বাদের কথা ব্যাখ্যা করেছি। ঠিক যেমন মিশ্রি। সকলেই জানেন যে মিশ্রি খুবই মিষ্ট বস্তু। কিন্তু সেই মিশ্রি যদি আপনি কোন পাণ্ডূরোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে দেন, সে বলবে এর স্বাদ তেতো। সকলেই জানেন যে মিশ্রি হচ্ছে মিষ্টবস্তু। কিন্তু পাণ্ডূরোগাক্রান্ত সেই বিশেষ ব্যক্তি, এই একই মিশ্রির স্বাদ পাবে তেতো। এটি সকলেই জানেন। বাস্তব কথা।

সুতরাং রুচি, বাসুদেব কথা রুচি। কৃষ্ণ কথা, জড় বিষয় রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এর স্বাদ উপলব্ধি করতে পারবে না। এই রুচি বা স্বাদ পেতে গেলে কিছু প্রাথমিক কাজ রয়েছে, সেগুলো কি? প্রথম হচ্ছে এর মহিমা করাঃ "আহ্‌, এইটি অত্যন্ত ভাল।" আদৌ শ্রদ্ধা, শ্রদ্ধধান। সুতরাং শ্রদ্ধা থাকাটি সূচনা। তারপর সাধুসঙ্গ (চৈতন্য চরিতামৃত ২২.৮৩)। তারপর সঙ্গ করা। "ঠিক আছে, এই লোকগুলো কৃষ্ণনাম করছে আর কৃষ্ণকথা বলছে। ওখানে যাওয়া যাক আর তাঁদের সঙ্গে বসে আরও কথা শোনা যাক।" একে বলা হয় সাধু সঙ্গ। যারা ভক্ত তাঁদের সান্নিধ্যে থাকা। এইটি হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপ। তৃতীয় ধাপটি হচ্ছে ভজনক্রিয়া। যখন কেউ ভালোভাবে সাধুসঙ্গ করছে , তখন সে অনুভব করবে, "আচ্ছা, আমি এঁদের শিষ্য হচ্ছি না কেন?" এভাবে ব্যবহারিক প্রয়োগ শুরু হল। "প্রভুপাদ, আপনি যদি আমাকে কৃপা করে শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করতেন।" সেইটি হচ্ছে ভজনক্রিয়ার প্রারম্ভ। ভজনক্রিয়া মানে ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়া। সেইটি হচ্ছে তৃতীয় ধাপ।