BN/Prabhupada 0083 - হরে কৃষ্ণ জপ করুন তাহলে সবকিছু আসবে
Lecture on SB 7.9.11-13 -- Hawaii, March 24, 1969
প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন - আমরা ইতিমধ্যেই এটি আলোচনা করেছি যে, এর জন্য কোন যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না ভগবানকে প্রীত করতে, তাঁকে সন্তুষ্ট করতে, তোমার কোন পূর্ব যোগ্যতার দরকার নেই ওহ্ তোমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পাশ করতে হবে অথবা তোমাকে রক্ফেলার বা ফোর্ড -এর মতো ধনী হতে হবে অথবা এটা হতে হবে, ওটা হতে হবে - কোন শর্ত নেই। অহৈতুকী অপ্রতিহতা। যদি তুমি কৃষ্ণকে ভালবাস, তা কখনও প্রতিহত করা যায় না। বাধা পাবে না এই মার্গ উন্মুক্ত। তোমাকে কেবল ঐকান্তিক হতে হবে। ব্যাস্। তখন শ্রীকৃষ্ণ তোমার রাস্তা পরিষ্কার করবেন। এবং যদি কোন ঐকান্তিকতা না থাকে, তাহলে কৃষ্ণের মায়াশক্তি থাকবে। সে সর্বদাই কিছু না কিছু প্রতিবন্ধকতা এনে দেবে, "এটা না, এটা না, এটা না"। প্রহ্লাদ মহারাজ সিদ্ধান্ত করেছিলেন যে, "যদিও আমি একটি শিশু, আমার কোন শিক্ষা নেই, আমি বেদ শিক্ষা করিনি এবং নাস্তিক পিতার সন্তান হয়েছি, নীচ জন্ম, সব দোষে পূর্ণ... ভগবানকে ধার্মিক বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা আরাধনা করেন, বৈদিক প্রার্থনা নিবেদন করেন, ব্রাহ্মণেরা উচ্চ সংস্কৃতিসম্পন্ন আমার সেই ধরণের কোন যোগ্যতা নেই। কিন্তু তবু উন্নত দেবতারা আমাকে অনুরোধ করেছেন অর্থাৎ ভগবান আমার দ্বারাও শান্ত হতে পারেন। নয়তো তাঁরা আমার নাম কেন বলতেন? তাই আমার যে যোগ্যতাই থাকুক না কেন, যাই আমার আছে না কেন, আমি তা কৃষ্ণকে অর্পণ করতে পারি।" আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে এই রকম যে, তোমার যাই যোগ্যতা আছে না কেন, তাই যথেষ্ট তুমিসেই যোগ্যতা দিয়েই শুরু কর তোমার যোগ্যতা দিয়েই তুমি কৃষ্ণসেবা কর কারণ আসল যোগ্যতা হচ্ছে - তোমার সেবার মনোভাব । সেটিই আসল যোগ্যতা তাই সেই মনোভাব বাড়াতে চেষ্টা কর, বাহ্যিক যোগ্যতা নয়, সৌন্দর্য, ধনসম্পদ, জ্ঞান, এটা ওটা , না এসবের কোন মূল্য নেই। এসব তখনই মূল্যবান যখন তা কৃষ্ণসেবায় লাগে যদি তুমি খুব ধনী কেউ হও, তোমার সম্পদ কৃষ্ণসেবায় লাগাতে পার ... তা ঠিক আছে। কিন্তু তোমার আলাদা করে অনেক ধনী হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এই ভাবেই তুমি কৃষ্ণের সেবা করতে পারবে
তাই প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন, নীচো অজয়া গুণবিসর্গম্ অনুপ্রবিষ্টঃ পূয়েত যেন পুমান্ অনুবর্ণিতেন (ভাগবতম 7.9.12)। এখন, কেউ প্রশ্ন করতে পারে, প্রহ্লাদ তো অশুদ্ধ পিতার থেকে জন্মেছে এটা কেবল যুক্তিমাত্র। প্রহ্লাদ অশুদ্ধ নন। কেবল তর্কের খাতিরে তিনি নীচ পিতা, বা পরিবার থেকে জন্ম নিয়েছিলেন, অথবা আরও আরও অনেক অনেক কিছু বলতে পারে কিন্তু প্রহ্লাদ মহারাজ বলেন, "আমি যদি কেবল ভগবানের গুণ মহিমা করতে শুরু করি , তাহলেই আমি পবিত্র হব"। আমি কীর্তনের দ্বারা শুদ্ধ হব ... এই হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র শুদ্ধিকরণের পন্থা এমন নয় যে আমাকে অন্য কোন পন্থার মাধ্যমে শুদ্ধ হতে হবে, তারপর আমি হরে কৃষ্ণ কীর্তন করব। না। আমাদের এই কীর্তন করতে হবে। তাহলেই আমরা শুদ্ধ হতে পারব। তোমরা শুদ্ধ হতে পারবে। জপ কীর্তন শুরু কর। যে অবস্থাতেই আছ না কেন, সেটা কোন ব্যাপার নয় প্রকৃতপক্ষে আমি এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন শুরু করেছিলাম - এমন নয় যে এঁরা সবাই শুদ্ধ অবস্থাতে আমার কাছে এসেছিল এটা সকলেই জানে যে, যারা আমার কাছে এসেছিল তাদের শৈশব অবস্থার শিক্ষা এমনই ছিল... ভারতীয় মান অনুযায়ী, ওরা এমনকি পরিষ্কার থাকতেও জানত না। শুদ্ধিকরণের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? ভারতীয় ব্যবস্থায়, শিশুকাল থেকেই তাকে সকালে উঠে দাঁত মাজতে, স্নান করতে শেখান হয়। হ্যাঁ। আমার মনে আছে, আমার দ্বিতীয় সন্তান যখন চার বছরের ও খেতে বসার আগে আমি ওকে জিজ্ঞাসা করতাম, "তোমার দাঁত দেখাও" তখন সে দাঁত দেখাত... "হ্যাঁ" ঠিক আছে, তুমি দাঁত মেজেছ, তাহলে ঠিক আছে। তাহলে তুমি সকালের প্রসাদ পেতে পার"। এইসব শিক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে, এই দেশে, এই শিক্ষা... অবশ্য, কোথাও কোথাও আছে। কিন্তু এতোটা কড়াকড়ি নেই। যাইহোক এসব কিছু না। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন কর। হরে কৃষ্ণ কীর্তন করতে শুরু কর। তাহলে সবকিছুই আসবে। সবই আসবে।